নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোর-বাগাতিপাড়া প্রধান সড়কের নির্মান ও সংস্কারসহ ৪২ কোটি টাকার প্যাকেজ প্রকল্পের কাজ টেন্ডারের ৪ বছরেও শেষ হয়নি। জেলার বাগাতিপাড়া ও সিংড়া উপজেলার ৫টি সড়ক ওই প্যাকেজের আওতায় রয়েছে। এর মধ্যে বাগাতিপাড়া উপজেলার তিনটি সড়ক এই প্যাকেজের আওতাভুক্ত হলেও কোন কাজই পুরোপুরি শেষ হয়নি। এর মধ্যে অধিক জনগুরুত্বপূর্ণ নাটোর-বাগাতিপাড়া প্রধান সড়কটি নির্মাণ ও সংস্কার কাজটি টেন্ডার হওয়ার প্রায় ৩ বছর পর শুরু করা হলেও ৫ দশমিক ৬ কিলোমিটার সড়কের পৌনে দুই কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়েছে। বাঁকি সড়কে খোয়া-বালি বিছিয়ে ডব্লিউবিএম করে তাতে প্রাইম কোট দিয়ে কার্পেটিং না করে ফেলে রাখা হয়েছে। টেন্ডার হওয়ার পরও দীর্ঘ সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় স্থানীয় ও পথচারীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। সড়কটির কাজ শেষ হতে আর কত সময় লাগবে জনমনে এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রায় চার বছর পূর্বে জেলার বাগাতিপাড়া ও সিংড়া উপজেলার ৫টি সড়ক একটি প্যাকেজের আওতায় প্রায় ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ ও সংস্কার কাজের টেন্ডার হয়। ওই প্যাকেজে বাগাতিপাড়া উপজেলার সাইলকোনা-মাধবাড়িয়া সড়কের দুই কিলোমিটার, জামনগর ভিতরভাগ-করমদোসি সড়কের দুই দশমিক ছয় কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ এবং নাটোর-বাগাতিপাড়া সড়কের কসবে মালঞ্চি হতে তমালতলা বাজার হয়ে কালারা ব্রীজ পর্যন্ত ৫ দশমিক ৬ কিলোমিটার সড়ক প্রশ্বস্ত ও সংস্কার কাজের কথা ছিল।
নাটোরের ইসলাম কন্সট্রাকশন জেভি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মীর হাবিবুল আলম কাজটির ঠিকাদারী পান। প্যাকেজের আওতায় বাগাতিপাড়া উপজেলার তিনটি কাজের একটিও পুরোপুরিভাবে শেষ হয়নি। এর মধ্যে নাটোর-বাগাতিপাড়া প্রধান সড়কের কসবে মালঞ্চি হতে তমালতলা বাজার হয়ে কালারা ব্রীজ পর্যন্ত ৫ দশমিক ৬ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ ও সংস্কার কাজের মধ্যে পৌনে দুই কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়েছে। জন ভোগান্তির কারনে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয়রা সড়কে ছিপ ও জাল ফেলে প্রতিকী প্রতিবাদও করেছেন। পরে গত বছরের জুলাই মাসে সড়কটির কাজ শুরু করা হয়।
দুুই পাশে বৃদ্ধিসহ পুরো সড়কটিতে ইটের খোয়া ও বালি বিছিয়ে ডব্লিউবিএমের কাজ করা হয়। এর প্রায় ৫ মাস ধরে ফেলে রাখার পরে এ বছরের এপ্রিল মাসে সড়কটির কাজ আবারও শুরু হয়। কসবে মালঞ্চি হতে তমালতলা বাজারের উত্তরা মাথা পর্যন্ত পুরো সড়ক এবং তা থেকে আরও প্রায় ৪০০ মিটার সড়কের অর্ধেক অংশ কার্পেটিং করা হয়। ৫ দশমিক ৬ কিলোমিটার সড়কটির কালারা ব্রিজ পর্যন্ত বাঁকি অংশ তরল বিটুমিন ঢেলে প্রাইম কোট করে ফেলে রাখা হয়েছে। দীর্ঘ সময় পার হলেও কাজ বন্ধ থাকায় বাঁকি কাজটি শেষ করা হয়নি। এছাড়াও প্যাকেজের অন্য দুটি সড়কের কাজও অসমাপ্ত রেখে ফেলে রাখা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, জেলা সদরের সাথে উপজেলার যোগাযোগের প্রধান সড়কসহ জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কের কাজ শেষ হতে কেন এত সময় ক্ষেপন করা হচ্ছে তা তাদের বোধগম্য নয়। তারা দ্রুত কাজটি শেষ করার দাবি জানান।
এবিষয়ে কথা বলার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের জাহান আলীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তবে তার ম্যানেজার সুলতান এ বিষয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিটুমিন না পাওয়ায় কাজটি শেষ করা যায়নি। তবে বর্তমানে সবকিছু তাদের কাছে রয়েছে। আবহাওয়া ভাল হলে তারা কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ করতে পারবেন।
উপজেলা প্রকৌশলী আজিজুর রহমান বলেন, সড়কটির কাজ শেষ করার জন্য সব রকমের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। কয়েকদফা ছাড়াও সম্প্রতি আবারও ঠিকাদারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলার নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।