আজ ২২ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় ঘোষণা হলেও এর ছয় দিন পর ২২ ডিসেম্বর বরিশালের আগৈলঝাড়া ও গৌরনদীতে উড়েছিল বিজয় পতাকা। এদিন শত্রুমুক্ত হয় আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী উপজেলা।
দীর্ঘ ২৮ দিন ধরে মুক্তিবাহিনী ও মুজিববাহিনীর যৌথ আক্রমণের পর বাধ্য হয়ে এইদিন আগৈলঝাড়া ও গৌরনদীতে শতাধিক পাক সেনারা মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল।
ফলে বাংলাদেশের সর্বশেষ হানাদারমুক্ত এলাকা হলো- আগৈলঝাড়া। সেদিন এ অঞ্চলে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা সহস্রাধিক লোক হত্যা করেছিল নির্বিচারে। তিন শতাধিক মা-বোনের ইজ্জত হারাতে হয়েছিল পাকহানাদার ও তাদের দোসরদের হাতে। এ এলাকায় সর্বপ্রথম সাবেক মন্ত্রী আ. রব সেরনিয়াবাত, অ্যাড. আ. করিম সরদার এমএনএ-র উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করা হয়। ওই দলের প্রধান ছিলেন মতিয়ার রহমান তালুকদার। তার সহযোগী ছিলেন নুর মোহাম্মদ গোমস্তা।
অপরদিকে কোটালিপাড়ার হেমায়েত উদ্দিনের নেতৃত্বে গঠন করা হয় হেমায়েত বাহিনী। তিনি ও তার বাহিনী আগৈলঝাড়া-রামশীল-পয়সারহাট-সিকিরবাজার এলাকায় এই এলাকার সহযোগীদের নিয়ে পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধ করেন। সর্বশেষ মুজিব বাহিনীর একটি দল ভারত থেকে ট্রেনিং শেষে আগৈলঝাড়ায় এসে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। ওই দলের নেতৃত্বে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছোটবোন আমেনা বেগম ও ভগ্নীপতি কৃষক নেতা শহীদ আ. রব সেরনিয়াবাতের জ্যেষ্ঠপুত্র সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি। ওই দলে আ. রকিব সেরনিয়াবাত, ফজলুর রহমান হাওলাদার ও মেজর শাহ আলম তালুকদার তার সহযোগী ছিলেন।
বরিশালের বিভিন্নস্থানে পাকসেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ১৬ ডিসেম্বরের পূর্বে আত্মসমর্পণ করলেও এই এলাকায় পাকসেনারা দীর্ঘ ২৮দিন যুদ্ধের পরে ২২ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। যে কারণে আজকের এই দিনটি আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হয়।