প্রতিটি সেক্টরে দেশ সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে। আর সেই সাথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন। কোন উন্নয়নটি হচ্ছে না দেশে। এমন উন্নয়ন হয়েছে যা দেশের মানুষ কল্পনাতেই আনতে পারেনি। বিশাল এই উন্নয়নের ফলে অনেক দেশকেই এখন বাংলাদেশ পেছনে ফেলে দিয়ে এসেছে। আর যার পুরোটাই সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে।
২০৩২ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের বড় ২৫টি অর্থনীতির দেশের একটি হবে। তখন বাংলাদেশ হবে ২৪ তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। বর্তমানে অবস্থান ৪১ তম। ২০৩৩ সালে আমাদের পেছনে থাকবে মালয়েশিয়া, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশ। আগামী ১৫ বছর দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি গড়ে ৭ শতাংশ থাকবে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিগ টেবিল ২০১৯ শীর্ষক এই প্রতিবেদনে ১৯৩টি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার উল্লেখ আছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ ১২টি দেশকে টপকে গেছে। আগামী ১৫ বছরে টপকে যাবে আরও ১৭টি দেশ। এই যাত্রার প্রথম পাঁচ বছরে ৫টি দেশকে টপকে যাবে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ হবে ৩৬ তম অর্থনীতির দেশ। পরের পাঁচ বছর আরও ৯টি দেশকে পেরিয়ে ২০২৮ সালে হবে ২৭ তম বড় অর্থনীতির দেশ। পরের পাঁচ বছরে টপকাবে আরও ৩টি দেশ।
সংস্থাটি আরও বলেছে, এক দশক ধরে বাংলাদেশ গড়ে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এখন ক্রয়ক্ষমতার সমতা অনুসারে বা পিপিপি ডলারে মাথাপিছু জিডিপি ৪ হাজার ৬০০ ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা দেশটিকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণে সহায়তা করেছে। সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় প্রবৃদ্ধির পেছনে কারণ হলো অভ্যন্তরীণ ভোগ চাহিদা, সরকারি ব্যয়, প্রবাসী আয় ও রপ্তানি। নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশ এসব কারণেই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বেশ কয়েকজন অর্থনীতিবিদগণ জানান, বড় অর্থনীতির দেশ হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা বাংলাদেশের আছে। আগামী ১৫ বছর ৭ শতাংশ বা এর বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনও সম্ভব। কিন্তু এগুলো শুধু সংখ্যাগত তথ্য–উপাত্ত। কীভাবে সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবে পরিণত করতে হবে, সেটা বিবেচনায় আনতে হবে। এ জন্য বড় ধরনের কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে। তাঁর মতে, বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে যোগাযোগ ব্যবস্থা, জ্বালানিসহ অবকাঠামো দ্রুত করতে হবে। দারিদ্র্য বিমোচনে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে হবে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আগামী ১৫ বছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) আড়াই গুণের বেশি বাড়বে। এ বছর (২০১৯) বাংলাদেশের জিডিপি হবে (স্থিরমূল্যে) ১১ লাখ ৩০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ২০৩৩ সালে গিয়ে জিডিপির আকার দাঁড়াবে ২৯ লাখ ১৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিগ টেবিল ২০১৯ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের এক নম্বর অর্থনীতির দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র। পরের স্থানে রয়েছে চীন। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে যথাক্রমে জাপান, জার্মানি ও ভারত। ২০৩৩ সালে এই চিত্র পাল্টে যাবে। তখন বিশ্বের এক নম্বর অর্থনীতির দেশ হবে চীন। দ্বিতীয় স্থানে সরে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। আর তৃতীয় স্থানে উঠে আসবে ভারত। জাপান তিন নম্বর থেকে চার নম্বরে চলে যাবে। জার্মানিও চার থেকে পাঁচ নম্বরে নেমে যাবে।