বৃহস্পতিবার , ডিসেম্বর ২৬ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / ১০ সেতুতে টাচ অ্যান্ড গো

১০ সেতুতে টাচ অ্যান্ড গো

নিউজ ডেস্ক:
দেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে টোল আদায়ে ১০ শতাংশ ছাড় দেয়ায় দ্রুতগতির লেন ব্যবহার করে ইলেক্ট্রনিক টোল কালেকশন বা টাচ অ্যান্ড গো ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এতে করে দেশে গত ছয় মাসের ব্যবধানে এসব স্বয়ংক্রিয় টোল প্লাজাগুলো থেকে টোল আদায় বেড়েছে ২৬ লাখ ৯২ হাজার টাকা।
চালকরা বলছেন, টাচ অ্যান্ড গো পদ্ধতিতে সেতুর টোল আদায়ের কারণে টোল প্লাজায় কোন প্রকার যানজট থাকছে না। এই পদ্ধতিটি চালু হওয়ায় আমরা দিন-রাত সড়কে যানজটমুক্ত নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবেন বলে জানান।
তবে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ জানায়, বর্তমানে দেশের ১০টি সেতুতে ‘টাচ অ্যান্ড গো’ চালু আছে। এ পদ্ধতিতে সেতুগুলোর টোল আদায় কার্যক্রম সহজেই পর্যবেক্ষণ করতে পারছেন সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। স্মার্টকার্ডভিত্তিক টাচ অ্যান্ড গো পদ্ধতিতে দ্রুত টোলের টাকা পরিশোধ করতে পারছেন সেসব সেতুগুলো হলো- মেঘনা সেতু, গোমতি সেতু, ভৈরব সেতু, শহীদ ময়েজউদ্দিন সেতু, আত্রাই টোল প্লাজা, চরসিন্দুর সেতু, খান জাহান আলী সেতু, লালন শাহ সেতু, পায়রা সেতু, শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজায় ইটিসি লেন চালু রয়েছে।
গত জুলাই মাসের হিসাব অনুযায়ী, ইটিসি লেন ব্যবহার করে শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজায় ৩ হাজার ২১টি যানবাহন থেকে ২১ লাখ ৬১ হাজার ১৮৪ টাকা, মেঘনা ও গোমতি সেতুতে ৭ হাজার ৫৭৬ যানবাহন থেকে ১৬ লাখ ৬৩ হাজার ৭০৩ টাকা, ভৈরব সেতুতে ৫ হাজার ৭৫৮ যানবাহন থেকে ১১ লাখ ২৮ হাজার ৩৩১ টাকা, শহীদ ময়েজউদ্দিন সেতুতে ৫ হাজার ১৪৩ যানবাহন থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৮৬১ টাকার টোল আদায় করা হয়। অন্যদিকে, আত্রাই টোল প্লাজায় ২১ যানবাহন থেকে ৬৫২ টাকা, খান জাহান আলী সেতুতে ৭৩৭ যানবাহন থেকে ৫৪ হাজার ৪১৫ টাকা, লালন শাহ সেতুতে ৫৩ যানবাহন থেকে ৩ হাজার ২১৭ টাকা, পায়রা সেতুতে একটি যানবাহন থেকে ৯৫ টাকার টোল আদায় করা হয়েছে। তবে চরসিন্দুর সেতু থেকে কোনো টোল সংগ্রহ হয়নি।
টোল আদায়ের ডিজিটাল টাচ অ্যান্ড গো’কে সবচেয়ে যুগোপযোগী হিসেবে অভিহিত করেছেন মহাসড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, এ পদ্ধতি অনুসরণ করে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে একটি গাড়ির টোল সংগ্রহ করা যায়। আমাদের দেশে বড় সেতুগুলোর টোলপ্লাজার যানজট ছাড়াও জ্বালানি সাশ্রয়, টোল সংগ্রহের ক্ষেত্রে সময় সাশ্রয়, মহাসড়কের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও যানবাহনের ধোঁয়া নির্গমন কমিয়ে পরিবেশ দূষণের মাত্রা হ্রাস করতে এই পদ্ধতিটি চালু করা হয়েছে। তবে বিশ্বজুড়ে ইটিসি গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠার অন্যতম কারণ হলো- এ পদ্ধতিতে টোল দিতে গাড়িচালকদের নগদ অর্থ সঙ্গে রাখার প্রয়োজন পড়ে না।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে টাচ অ্যান্ড গো পদ্ধতি ব্যবহারকারী সোহাগ পরিবহনের চালক আলমগীর হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা ও গোমতী সেতুর টোল আদায়ে টাচ অ্যান্ড গো পদ্ধতি চালু হওয়ায় আমরা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারছি। এতে চলাচলে যেমন সময় বেঁচে যাচ্ছে, তেমনি জ্বালানি তেলেও সাশ্রয়ী হচ্ছে।
জানা যায়, গত ২৫ এপ্রিল এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হয়। পরে গত ৩০ মে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপ সচিব ফাহমিদা হক খানের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে ১ জুন থেকে এ ছাড় কার্যকরের ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর থেকেই ইটিসি লেন ব্যবহারে ১০ শতাংশ ছাড় মিলছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ডিজিটাল বাংলাদেশের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব-পশ্চিম টোল প্লাজায় ২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর পরীক্ষামূলকভাবে একটি করে দ্রুতিগতির ইটিসি লেন চালু করা হয়। এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০ হাজার গাড়ি পার হয়। এত বিপুলসংখ্যক গাড়ি থেকে টোল আদায় করতে গিয়ে কোনো কোনো লেনে প্রায়ই তিন-চারটি গাড়ির লাইন তৈরি হয়ে যায়। এছাড়া, ঈদে কিংবা বিভিন্ন উৎসবে গাড়ির সংখ্যা যখন ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তখন লেনে গাড়ির লাইন অনেক দীর্ঘ হয়। তবে ইটিসি এ সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের (টোল ও এক্সেল) উপ-সচিব ফাহমিদা হক খান বলেন, গত ১ জুন থেকে ছাড় কার্যকর করার পর থেকে দ্রুতগতির লেন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। জনসাধারণকে এ লেন ও ইটিসি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে আমরা বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালাচ্ছি। সামনে ইটিসি ব্যবহারকারীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করছি।
এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী বলেন, ইটিসি ও দ্রুতগতির লেন নিয়ে আমরা ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছি। সবার মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠিয়েছি, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিচ্ছি, টিভিতে স্ক্রলও দিচ্ছি। দ্রুতগতির লেন ব্যবহার করলে টোলের ওপর সরকার ১০ শতাংশ ছাড় দেবে। তাছাড়া, যেহেতু এ লেনে টোল পরিশোধের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না সেহেতু প্রচারণা চালু রাখলে ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বাড়বে বলে আশা করছি।
এ পদ্ধতি চালু করতে এই মহাসড়কে নিয়মিত চলাচল গাড়িগুলোকে একটি ইলেকট্রিক ডিভাইস সংগ্রহ করতে হবে। এসব ডিভাইস আবার যে কোনো একটি ব্যাংক হিসাবের সঙ্গেও সংযুক্ত থাকবে। ফলে গাড়ি যখন টোল প্লাজা অতিক্রম করবে তখন টোল প্লাজায় স্থাপন করা ইলেকট্রিক যন্ত্রের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় টোল আদায় হবে। এ পদ্ধতিতে গাড়িগুলোকে টোল প্লাজায় থামতে হবে না। যেসব গাড়ি এ পদ্ধতিতে আসতে ডিভাইস সংগ্রহ করবে সেগুলোর জন্য বিশেষ সেবা চালু থাকবে। থাকবে বিশেষ লেন। এ ছাড়া ডিভাইসযুক্ত গাড়িগুলোকে টোলের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ ছাড়ও দেয়া হয়েছে।

আরও দেখুন

সিংড়ায় আগ্রহ বাড়ছে বস্তায় আদা চাষের

নিজস্ব প্রতিবেদক সিংড়ায় ,,,,,,,,,,,কম খরচে বেশি আয়ের আশায় পতিত জমিতে আদা চাষ শুরু করেছেন নাটোরের …