নিউজ ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে থাকায় রাজধানীর হাসপাতালগুলোর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) শয্যার সংখ্যা দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. এবিএম খুরশীদ আলম গত সোমবার বলেন, আগামী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা দ্বিগুণ করতে আমরা কাজ করছি। ওই দিন স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিভিন্ন হাসপাতালের কর্মকর্তাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালেই আইসিইউ ও সাধারণ শয্যা বাড়ানো হবে। ডা. খুরশীদ আলম জানান, করোনা পরিস্থিতি মূল্যায়ন ও করণীয় ঠিক করতে এই বৈঠকটি হয়।
করোনায় আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থদের জন্যে আইসিইউ সাপোর্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গত কয়েক সপ্তাহে সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার পর রোগী ও তাদের আত্মীয়-স্বজনেরা রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ ও সাধারণ শয্যা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করছেন। গতকালসহ টানা ৩ দিন দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাত হাজারর বেশি। গতকাল শনাক্ত হয়েছে সাত হাজার ২১৩ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীদের জন্যে সাধারণ শয্যা আছে দুই হাজার ৫৫৫টি, আর আইসিইউ শয্যা আছে ১২৮টি। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ৭৭২টি সাধারণ ও ১৮০টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। আইসিইউ শয্যা বাড়ানোর কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
প্রফেসর ডা. খুরশীদ আলম বলেন, সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা বাড়িয়ে দুই শরও বেশি করা হবে। আর সাধারণ শয্যার সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজারে উন্নীত করা হবে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মহাখালী কাঁচাবাজারটি করোনা রোগীদের জন্যে একটি অস্থায়ী হাসপাতালে রূপান্তর করার কাজ চলমান বলে উল্লেখ করেন তিনি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, এটি হবে দেশের সবচেয়ে বড় কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতাল। এখানে ২৫১টি আইসিইউ ও এইচডিইউ শয্যা থাকবে। এ হাসপাতালের মূল বৈশিষ্ট্য হবে, সেখানকার এক হাজার ২০০ শয্যার সবগুলোতেই আইসিইউ সুবিধা থাকবে।
তিনি বলেন, শুধু আইসিইউ নয়, একই সময়ের মধ্যে সাধারণ শয্যার সংখ্যাও দ্বিগুণ হয়ে যাবে। কারণ, কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড সব হাসপাতালই ইতোমধ্যে স¤প্রসারণের কাজ শুরু করেছে। যেমন- শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এরই মধ্যে ২০০ শয্যা যুক্ত হয়েছে। পরবর্তী কয়েক দিনে সেখানে আরও ২০০ শয্যা যুক্ত হবে। তিনি জানান, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটও অতিরিক্ত ২০০ শয্যা চালুর করার জন্যে কাজ শুরু করেছে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এবং জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউটও তাদের শয্যা সংখ্যা আরও ১০০ করে বাড়াতে কাজ শুরু করেছে।
এমনকি বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, যেমন- আজগর আলী, এভারকেয়ার ও ইউনাইটেড হাসপাতালও শয্যা সংখ্যা বাড়াতে শুরু করেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আরও জানান, বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারি হাসপাতালগুলোকে ‘নো অবজেকশন’ সনদ দেয়া হবে, যাতে তারা কোভিড-১৯’র চিকিৎসায় ব্যবহৃত মেরোপেনেম ইনজেকশন নিজ নিজ উৎস থেকে কিনতে পারে।