নিউজ ডেস্ক:
সারা দেশে একসঙ্গে মোট ১০০ সেতুর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আগামী ৭ নভেম্বর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এসব সেতুর উদ্বোধন করবেন।
উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা এসব সেতুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সেতু চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৫টি। সবচেয়ে কম কুমিল্লায় একটি সেতু।
এ ছাড়া সিলেটে ১৭, বরিশালে ১৪, ময়মনসিংহে ছয়, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী ও রংপুরে পাঁচটি করে এবং ঢাকা বিভাগে দুটি সেতু রয়েছে। সব মিলিয়ে সেতুগুলোর মোট দৈর্ঘ্য পাঁচ হাজার ৪৯৪.১৩ মিটার। সরকারের অর্থায়নে নির্মিত এসব সেতুতে ব্যয় করা হয়েছে ৮৭৯ কোটি ৬১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।
এর আগে সড়ক ও জনপদ (সওজ) অধিদপ্তর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এসংক্রান্ত একটি সার-সংক্ষেপ পাঠানো হয়। এতে উদ্বোধনের জন্য ২৯ অক্টোবরের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী সেতুগুলো উদ্বোধনের জন্য ৭ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন।
একসঙ্গে ১০০ সেতুর উদ্বোধন প্রসঙ্গে সওজ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসেন পাঠান বলেন, ‘এটাকে আমরা বলছি, শত সেতুর উদ্বোধন অপার উন্নয়নের সম্ভাবনা। এই শত সেতুর মধ্যে জরাজীর্ণ, বিধ্বস্ত, দুর্ঘটনাপ্রবণ সরু সেতুগুলোকে অপসারণ করেছি। সিলেট ও পার্বত্যাঞ্চলে বেশ কিছু ‘মিসিং লিংক’ ছিল। এই সেতুগুলোর মাধ্যমে সেটা দূর হয়েছে। সিলেটে যে সেতুগুলো নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো বন্যায় কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে বন্যা-পরবর্তী সময়ে সেতুগুলো দ্রুত মেরামত করে চলাচলের উপযুক্ত করা হয়েছে। ’
দৈর্ঘ্যের বিচারে সবচেয়ে বড় সেতু সিলেটের সুনামগঞ্জের রানীগঞ্জ কুশিয়ারা সেতু। এই সেতুর দৈর্ঘ্য ৭০২.৩২ মিটার। সবচেয়ে ছোট চার সেতু খাগড়াছড়িতে। সেতুগুলো হলো তবলছড়ি সেতু, তাইন্দং সেতু, কৃষি গবেষণা সেতু ও হাতিমারাছড়া সেতু। প্রতিটি সেতুর দৈর্ঘ্য ১৬.৫৯ মিটার করে।
উদ্বোধনের দিন সম্পর্কে জানতে চাইলে সওজের প্রধান প্রকৌশলী মনির হোসেন পাঠান বলেন, ‘আশা করছি, ৭ নভেম্বর। একেবারে বড় কোনো সমস্যা সৃষ্টি না হলে সেদিনই উদ্বোধন করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আমরা তারিখ পেয়েছি। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সব সেতু উদ্বোধন করবেন। ’
সওজ সূত্রে জানা যায়, সংস্থাটির অধীনে বর্তমানে দেশে ২২ হাজার ৪৭৬ কিলোমিটার সড়ক নেটওয়ার্কের মধ্যে ১৩ হাজার ৮০০টি কালভার্ট ও সাড়ে চার হাজার সেতু রয়েছে। এই সড়ক নেটওয়ার্কের মধ্যে তিন হাজার ৯৯১ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, চার হাজার ৮৯৭ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়ক ও ১৩ হাজার ৫৮৮ কিলোমিটার জেলা সড়ক রয়েছে।
জানতে চাইলে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক শামছুল হক বলেন, ‘যেকোনো সেতু হলেই কিন্তু যোগাযোগব্যবস্থা তৈরি হয়। এতে পরিবহনের সময় কমে যায়। এটা সরাসরি কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে। তবে নদীর নাব্যতা ঠিক রেখে এবং উচ্চতায় নদীর জায়গা ছেড়ে এই সেতুগুলো নির্মাণ করা হয়েছে কি না সেটা বড় জিজ্ঞাসা। আবার সেতুর দুই খুঁটির মাঝের দূরত্ব পর্যাপ্ত আছে কি না তাও দেখতে হবে। সড়কের উন্নয়ন দরকার, কিন্তু একই সঙ্গে যেন আমরা নৌপথটাকেও সম্মান করি। ’