নিজস্ব প্রতিবেদক:
৩০ জুন রবিবার ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন আয়োজিত সেমিনারে তারা আরও জানায় হোটেল-রেস্তোরাঁয় শিশু-মহিলা ও বৃদ্ধদের জন্য সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হলে খসড়া আইনটি পাশের কোন বিকল্প নাই।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম জানান, ‘সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠন সম্ভবপর হবে। পাশাপাশি রেস্তোরাঁয় ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ বন্ধ করতে হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিকদের পরামর্শ দেন তিনি।
স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের উপ-পরিচালক মোখলেছুর রহমান বলেন, পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া অধূমপায়ীদের নাগরিক অধিকার। পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বহাল রেখে পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে অধূমপায়ীদের রক্ষা করা কখনোই সম্ভব নয়। এমতবস্থায় জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় রেস্তোরাঁয় ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা উচিত।
বাংলাদেশ রেস্তোরা মালিক সমিতির সহ-সভাপতি ও আহার বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এম. রেজাউল করিম সরকার রবিন জানান, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে রেস্তোরাঁকে পাবলিক প্লেসে হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার পাশাপাশি ‘ধুমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ এর বিধান রাখা হয়েছে। সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাশের মাধ্যমে এই বিধান বাতিল করতে হবে।
ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে)এর লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ধূমপানের কারণে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ক্যান্সারের ব্যাপকতা, বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। রেস্তোরাঁগুলোতে ডেকোরেশনে করে কৌশলে তাদের প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে তরুণরা সিগারেটের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। তিনি আরও জানান, পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতির থেকে বাঁচতে রেস্তোরাঁতে স্মোকিং জোন বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি, হোটেল-রেস্তোরাঁয় সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হলে সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া দ্রুত পাশ করতে হবে।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপত্বিত্তে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমন্বয়কারী জনাব মোঃ শরিফুল ইসলাম। প্রবন্ধে তিনি বলেন, বাংলাদেশে পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার হয় ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ। যার মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ শুধুমাত্র রেস্তোরাঁয় পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়।
রেস্তোরাঁয় একটি জায়গা ধূমপানের জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হলেও সেখান থেকে ধোঁয়া বেরিয়ে আশপাশে ছড়িয়ে পড়ায় পরোক্ষ ধূমপানের কবলে পরছেন অধূমপায়ীরা। সংশোধিত খসড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি দ্রুত পাশ করে রেস্তোরাঁসহ সকল পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা।