নিজস্ব প্রতিবেদক, হিলি,
ভারতীয় পাথর ব্যাবসায়ী সিন্ডিকেট চক্রের কারনে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পাথর আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতিদিন ভারতীয় ১০০ থেকে ১৩০ ট্রাকে নানা প্রকার পাথর আমদানি হলেও গত ১০ জানুয়ারি থেকে পন্যটির আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। বোল্ডার পাথর আমদানি চালু হলেও বিভিন্ন প্রকারের চিপস পাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে। এতে করে প্রকার ভেদে চিপস পাথরের দাম বেড়েছে প্রতি টনে ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত। এতিদিন ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হিলি কাষ্টমস। দেশের চলমান মেঘা প্রকল্প গুলো এখন হুমকির মুখে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বেঁধে দেয়া রাজস্বের লক্ষ্য মাত্রা পুরুনে বড় যোগানও আসে এই পাথর আমদানি থেকে। গত সাড়ে ৭ মাসে পাথর থেকেই রাজস্ব এসেছে প্রায় ৪৮ কোটি টাকা।
পাকুর নামের পাথর আসে ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্য থেকে। আমদানিকৃত এই পাথর বেচাকেনা নিয়ে হিলি স্থবন্দরে গড়ে উঠেছে বিশাল বাজার। প্রায় প্রতিদিনই কোটি কোটি টাকার পাথর বিক্রি হয়ে থাকে এই বন্দর থেকে। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল ও রুপপুর পারমানোবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সহ দেশের বৃহত্তর অবকাঠামো উন্নয়নে পাথরের চাহিদা বেড়েছে প্রচুর। আর এই বাড়তি চাহিদা পুরুন করতে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা হচ্ছে ভারতীয় পাকুড় পাথর।
হিলি স্থলবন্দরের পাথর ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ভারতের ট্রাক পার্কিংয়ে এতোদিন ট্রাক প্রতি ১শ টাকা হারে পার্কিং চার্জ আদায় করা হতো। বর্তমানে এই চার্জ এক লাফে ৪শ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও সরকারী সংস্থা পাথর বোঝাই ট্রাকে ১৫ থেকে ১৬ টনের অধিক পরিমান পাথর বহন করতে না দেয়ায় বাংলাদেশে পাথর রফতানি সাময়িক ভাবে বন্ধ রেখেছেন ভারতের পাথর রফতানি কারকরা।
এদিকে হঠাৎ করেই পাথরের দাম বেড়েছে, প্রতি টন বিক্রি হচ্ছে ৫/৮ ইঞ্চি সাইজ পাথর ৩৭০০ থেকে দাম বেড়ে ৪৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, ৩/৪ ইঞ্চি সাইজ পাথর ৩৭৫০ থেকে দাম বেড়ে ৪৪৫০ টাকায়, ১/২ ইঞ্চি সাইজ পাথর ৩২৫০ থেকে দাম বেড়ে ৩৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, ১/৪ ইঞ্চি সাইজ পাথর ৩৩০০ থেকে দাম বেড়ে ৩৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রকার ভেদে দাম বেড়েছে ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত।
হিলি কাষ্টমস সুত্রে জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনায় রুপপুর পারমানোবিক বিদ্যুৎ কেদ্রের সরবরাহকৃত পাথর, বিনা শুল্কে ছাড় দিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় হিলি কাষ্টমস। তবে, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গেলো ১ জুলাই থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সাড়ে ৭ মাসে পাথর আমদানি হয়েছে ৬ লাখ ৫০ হাজার ৩২৬ মেট্রিক টন। যার বিপরিতে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ৪৮ কোটি ১৯ লাখ ২২ হাজার টাকা।
হিলি স্থলবন্দরের পাথর আমদানিকারক, আবুল হাসনাত রনি জানান, প্রতি টনে দাম বেড়েছে। দ্রুত পাথর আমদানি না হলে দেশের মেঘা প্রকল্প সহ ছোট ছোট প্রকল্প গুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি রফতানি কারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন জানান, ভারত হিলির ট্রাক মালিকেরা সিন্ডিকেট করেছে। এ ছাড়া পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় হিলি বন্দরের পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে। এবিষয়ে ভারতের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা চলছে। তারা আশা করছেন, আগামী দুই এক দিনের মধ্যেই এই সমস্যার সমাধাণ হয়ে যাবে এবং বাংলাদেশে পাথর রফতানি পুনরায় চালু হবে।