নিজস্ব প্রতিবেদক, হিলি:
হিলিতে ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি কমেছে। বাজারে দেশি পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় ও চাহিদা কমায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি কমে এসেছে। আমদানি কমার সঙ্গে সঙ্গে কমেছে দাম। একইভাবে দেশি পেঁয়াজের দামও কমেছে। ভারতীয় পেঁয়াজের তুলনায় দেশি পেঁয়াজের দাম কম ও মান ভালো হওয়ায় ক্রেতারা ইচ্ছামতো কিনছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় মসলা জাতীয় পণ্যটির দাম কমায় খুশি নিম্ন আয়ের মানুষজন। তেমনি খুশি বন্দরের পেঁয়াজের পাইকাররা।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি আগের তুলনায় অনেকাংশে কমেছে। বন্দরে নতুন ইন্দোর জাতের ছোট আকারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২১ থেকে ২২ টাকা কেজি দরে। যা কয়েকদিন আগে ২৩ থেকে ২৪ টাকা বিক্রি হয়েছিল। আর নাসিকের বড় আকারের পেঁয়াজ কয়েকদিন ধরে একই দামে বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৩৭ টাকা।
এদিকে হিলি বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২২ টাকা কেজি দরে। যা দুদিন আগেও ২৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। আর বাজারের অধিকাংশ দোকানে ভারতীয় পেঁয়াজ উধাও হয়ে গেছে।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা আমজাদ হোসেন বলেন, আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। পেঁয়াজের দাম যত কম হয় ততো আমাদের জন্য ভালো হয়। কয়েকদিন আগে পেঁয়াজের দাম বাড়তির দিকে ছিল। এতে করে আমাদের ব্যয়ভার মেটানো খুব কষ্টসাধ্য হয়ে গিয়েছিল। এখন বাজারে পেঁয়াজের দাম অনেকটা কমে এসেছে। বিশেষ করে দেশি পেঁয়াজের দাম কমে গেছে। ভারতীয় পেঁয়াজ ও দেশি পেঁয়াজের দাম প্রায় একই রকম। মান ভালো হওয়ায় ও স্বাদ ভালোর কারণে আমরা দেশি পেঁয়াজ কিনছি। পেঁয়াজের দাম যদি এমন থাকে তাহলে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য সুবিধা হয়।
বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা গৃহবধূ হোসনে আরা বলেন, আমাদের প্রতিদিনের রান্নার কাজে পেঁয়াজের প্রয়োজন হয়। যার কারণে পেঁয়াজের দাম যতটা কম হয় ততটা আমাদের জন্য সুবিধা হয়। তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় পেঁয়াজের দাম অনেকটা কমে এসেছে। এতে করে আমাদের জন্য সুবিধা হয়েছে।
হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আহসান বলেন, হিলি বাজারে আগে যেখানে সব দোকানেই ভারতীয় পেঁয়াজে ভরপুর থাকতো। এখন সেখানে দেশি পেঁয়াজের চাপে ভারতীয় পেঁয়াজ উধাও হয়ে গেছে। এর ওপর চাহিদা কমায় ভারতীয় পেঁয়াজ অনেকে রাখছেন না। এর মূল কারণ হলো বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ রয়েছে। সবাই দেশি পেঁয়াজ কিনছেন।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আমির হোসেন বলেন, মেহেরপুর, পাবনা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পেঁয়াজ উঠার ফলে দেশের বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। সেই সঙ্গে দাম আগের তুলনায় অনেকটা কমে এসেছে। এখন দেশি পেঁয়াজের চাহিদা বেড়েছে। এর ফলে দেশের বাজারে আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা আগের তুলনায় অনেকাংশে কমেছে। এরপরও বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি অব্যাহত থাকায় দেশের বাজারে পণ্যটির দাম কমছে।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন মল্লিক প্রতাপ বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে আমদানির পরিমাণ একেবারেই কমে এসেছে। আগে যেখানে বন্দর দিয়ে ১৫ থেকে ২০ ট্রাক করে পেঁয়াজ আমদানি হতো এখন তা কমে ২ ট্রাকে নেমে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বন্দর দিয়ে ২ ট্রাকে ৫৫ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির কারণে বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধ রয়েছে। শনিবার পুনরায় বন্দর দিয়ে আমদানি শুরু হবে।