যশোরে হালকা প্রকৌশল শিল্পে রীতিমতো বিপ্লব সৃষ্টি হয়েছে। এসব পণ্য যশোরে
উৎপাদিত হয়ে শুধু বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ই করছে না, আহরণও করছে। সৃষ্টি
হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এই শিল্পের বিকাশে নানা অন্তরায় থাকলেও সম্প্রতি যশোরে
সরকারি শিল্প সহায়ক কেন্দ্র বিটাকের একটি অফিস স্থাপনের ঘোষণায় এই শিল্পের
মালিকদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
গাড়ির পার্টস, স্প্রিংপাতি ও বডি, ডাকটাইল স্টিল, ইলিশ মাছ ধরার ট্রলারের
পাখা, পাথর ও ইটভাঙা মেশিন এমনকি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর শিপইয়ার্ডের ট্রাক
বোর্ডের মালামাল ও ক্রেনের ৮০০-৯০০ কেজি ওজনের হুইল—এসব কিছুই এখন যশোরে
উৎপাদিত হচ্ছে। এর সবই আগে আমদানিনির্ভর ছিল।
এখানে উৎপাদিত গাড়ির পার্টস ব্যবহার করছেন দেশের প্রতিষ্ঠিত পরিবহন ও
স্থানীয় রুটের গাড়ি ব্যবসায়ীরা। একইসঙ্গে ইট ও পাথরভাঙা মেশিন ভারতে
রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন উদ্যোক্তারা। শুধুমাত্র ইট ও
পাথরভাঙা মেশিনের বাজার হাজার কোটি টাকা বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
যশোর লাইট অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং মালিক সমিতির সভাপতি ও রিপন মেশিনারিজের
স্বত্বাধিকারী আশরাফুল ইসলাম বাবু জানান, প্রতিমাসে তাদের তৈরি ১৫ থেকে
২০টি পাথরভাঙা মেশিন ভারতে রপ্তানি করা হচ্ছে। যার প্রতিটি মেশিনের দাম
সাড়ে ৪ লাখ টাকা। আর সারাদেশের বাজারে তাদের ইট ও পাথরভাঙা মেশিনের বাজারও
ভালো। সবসময় ৩০-৩৫টি মেশিনের অর্ডার থাকে তার।
শুধু রিপন ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ না, যশোরে অন্তত ৩০০ হালকা ও ভারী প্রকৌশল
শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যাদের পণ্য সারাদেশে ব্যবহার হচ্ছে। যশোরের গাড়ির
পার্টস উৎপাদনকারীদের মধ্যে অন্যতম এনায়েত ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানা। এর
স্বত্বাধিকারী মো. আক্তার হোসেন ১৯৮০ সালে নিজেই মটরপার্টস তৈরি করতেন। তার
আগে রিপিয়ারিংয়ের কাজ করতেন। ২০১১ সালে বিসিক শিল্পনগরীতে এক বিঘা জমির
ওপর কারখানা গড়ে তোলেন। বর্তমানে এখানে ৪০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। শতাধিক
গাড়ির পার্টস উত্পাদিত হয় এখানে।
এনায়েত ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানার স্বত্বাধিকারী মো. আক্তার হোসেন বলেন, আমাদের
উত্পাদিত পণ্য বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করছে। প্রতিমাসে নতুন শত শত মানুষের
কর্মসংস্থান করছে। অথচ সরকারি প্রণোদনা তো নেই-ই, উপরন্তু বিদ্যুতের
মূল্যবৃদ্ধি, লোডশেডিং, ভ্যাট-ট্যাক্সের বোঝায় বিকাশমান শিল্পটি
ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এজন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত্সহ ব্যবসাবান্ধব নীতি দাবি
করেন।
যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান জানান, যশোরের
ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প প্রতিষ্ঠান অনেক আগে থেকে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রেখে
চলেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের উত্পাদিত যন্ত্রাংশ ভালোমানের। তবে তাদের আরো
বিকশিত হতে হলে আন্তর্জাতিক বাজার খুঁজে বের করতে হবে। কেননা উৎপাদিত
পণ্যের পরিচিতি না থাকলে তা খুব বেশি এগুবে না। আর ব্যাংকগুলোকে ভালো
প্রতিষ্ঠানে এসএমই ঋণ দিতে হবে।
আরও দেখুন
পিরোজপুরে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ে দিনব্যাপীপ্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৩ জুলাই ২০২৪, শনিবার, ঢাকা: মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ে পিরোজপুরের …