নিজস্ব প্রতিবেদক:
হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ভেষজ গুণে অতিপরিচিত কাটাখুরা শাক। কাঁটাখুরা শাক হিসেবে খাওয়ার প্রচলন থাকলেও গাছটি ভেষজ গুণে অতিপরিচিত । গ্রামের মানুষ অবশ্য এ গাছের বহুমাত্রিক ব্যবহার সম্পর্কে জ্ঞাত। এ গাছের পাতা, মূল বা সব অংশই বিভিন্ন ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগলেও বর্তমানে সেটি বিলুপ্তর পথে।
জানাযায়, মারমা সম্প্রদায় সাধারণত প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, গায়ে গুটি এবং নারীদের ঋতু বন্ধে এ গাছ ব্যবহার করে থাকে।প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া সারাতে গোড়াসহ গাছটির শিকড় মাটি থেকে তুলে ভালো করে পরিস্কার পানিতে ধুয়ে পিষে চাল-ধোয়া পানিতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা ভিজিয়ে চিনি বা মিছরির সঙ্গে মিশিয়ে দৈনিক ৩ থেকে ৪ বার খেলে উপকার পাওয়া যেত এবং গায়ে গুটি উঠলে গাছের মূল পাথরে ঘষে রস বের করে আক্রান্ত স্থানে প্রতিদিন ১ বার ৩ দিন লাগালে সেরে যাবে এছাড়াও নারীদের ঋতুস্র্রাব মাস দুয়েক বন্ধ থাকলে পরিমাণ মতো গোলমরিচ, রসুনসহ শিকড় পাথরে ঘষে রস বের করে প্রতিদিন ২ বার ৪ চা-চামচ রস খাবারের আগে ১ সপ্তাহ খেলে উপকার হতো। এ ছাড়া গনোরিয়া, অ্যাকজিমা, পেটব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ফোঁড়া, সাপের কামড় ও মাতৃদুগ্ধ স্বল্পতায় গাছটির শিকড় ও পাতা ব্যবহার্য।
কাঁটাখুরা শাক দেশের সর্বত্র পতিত স্থান ও পথের ধারে জন্মে। বর্ষজীবী কাঁটাযুক্ত বীরুৎ। ১ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে দেখা যায়। কাণ্ড নরম, শাখাযুক্ত। পাতা ডিম্বাকৃতি, বোঁটা লম্বা। প্রত্যেক ডালের আগায় মঞ্জরি থাকে। ফুল ছোট, ধূসর-সাদাটে বর্ণের। ফুল ও ফল সারা বছর হয়। কাণ্ড ও শিকড় বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবে কাজে লাগে। বীজ থেকে চারা হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে এই কাটাখুরা শাকের বংশ বিস্তার না থাকলেও ভারত, শ্রীলংকা ও বিভিন্ন উষ্ণ অঞ্চলে এ গাছ পাওয়া যায়।