সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকায় থার্ড টার্মিনাল, ২৩ শত কোটি টাকায় সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর, ১৮ শত কোটি টাকায় কক্সবাজার এয়ারপোর্ট ১৯ শত কোটি টাকায় নির্মিত হচ্ছে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর। এগুলো বড় প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত। মাঝারি বা ছোট প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ৫৪০ কোটি টাকায় শাহ আমানত বিমানবন্দর, ৪শ’ কোটি টাকায় সৈয়দপুর, ৩৪০ কোটি টাকায় বরিশাল, ৭৬ কোটি টাকায় রাজশাহী ও একশ’ কোটি টাকায় যশোর এয়ারপোর্টের উন্নয়নকাজ চলছে। বর্তমানে দেশের আটটি বিমানবন্দরের ১৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে মোট ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ চলছে। এসব বিমানবন্দরের রানওয়ের বিশেষ কাজের উন্নয়নে ব্যয় হচ্ছে পাঁচ শতাধিক কোটি টাকার প্রকল্প। এগুলোর মধ্যে থার্ড টার্মিনাল, কক্সবাজার ও সিলেট বিমানবন্দরের কাজ শেষ হচ্ছে চলতি ও আগামী বছরের মধ্যেই। সবগুলোর কাজ শেষ হওয়াার পর দেশের এভিয়েশন খাতে নবদিগন্তের সূচনা হবে। রমরমা হবে আকাশপথের বাণিজ্য। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম হাব হিসেবেই বাংলাদেশ নজর কাড়বে গোটা বিশ্বের। এভিয়েশান বিশেষজ্ঞরা বলছেন- বর্তমান সরকারের ভিশন স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে অন্যতম সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে স্মার্ট এয়ারপোর্ট।
এসব প্রকল্প সম্পর্কে জানতে চাইলে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভিশন অনুযায়ী ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এবার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে অবশ্যই স্মার্ট এভিয়েশন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। থার্ড টার্মিনাল, কক্সবাজার ও সিলেট বিমানবন্দরের মতো মেগাপ্রকল্পের কাজ এখন সমাপ্তির পথে। এগুলো এ বছর আর আগামী বছরের মধ্যেই হয়ে যাবে। তখন সত্যিকার অর্থেই বলা যাবে স্মার্ট এয়ারপোর্টস ক্যান মেক স্মার্ট বাংলাদেশ।
স্মার্ট এয়ারপোর্টের রূপরেখা সম্পর্কে জানতে চাইলে এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন,আপাতত প্রাথমিকভাবে থার্ড টার্মিনালেই স্মার্ট এভিয়েশানের সব সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে। যেমন- এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট, পূূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা, অটোমেটেড রেভিনিউ ম্যানেজমেন্ট, অ্যাডভান্সড পাসেঞ্জার ইনফরমেশন সিস্টেম, আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্সের মতো সব ধরনের ব্যবস্থা থাকছে থার্ড টার্মিনালে। এ ছাড়া অত্যাধুনিক রাডার সিস্টেম সংবলিত এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ঢাকা থেকে কন্ট্রোল করা হলেও সারাদেশের অন্য এয়ারপোর্টগুলোও এতে সংযুক্ত থাকবে। এর পর ধাপে ধাপে অন্যান্য এয়ারপোর্টেও একই সিস্টেম চালু করা হবে। এভাবেই দেশের বিমানবন্দরগুলোকে স্মার্ট ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলেই স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করা হবে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, দেশের অন্যতম মেগাপ্রকল্প হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সম্প্রসারিত প্রকল্প থার্ড টার্মিনালই এখন দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলী হিসেবে সবার নজর কেড়েছে। চলতি বছরের অক্টোবরে প্রাথমিক উদ্বোধনের লক্ষ্যে এখন দিবারাত্রী চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে খিলক্ষেত থেকে উত্তরায় যাওয়ার পথে সবার নজর কাড়ে হাতের বাম পাশের এই অপূর্ব নির্মাণশৈলী। এটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আকর্ষণীয় প্রকল্প হিসেবে পরিচালিত।
থার্ড টার্মিনাল ॥ অবিশ্বাস্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের বিমানবন্দরের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ প্রকল্প হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারিত তৃতীয় প্রকল্প, যা থার্ড টার্মিনাল হিসেবেই সমধিক পরিচিত। বর্তমানে প্রধান বিমানবন্দর শাহজালালে বর্তমানে দুটি টার্মিনাল রয়েছে। এই দুটি টার্মিনাল এক লাখ বর্গমিটার জায়গার ওপর। আর থার্ড টার্মিনালে রয়েছে- দুই লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার এলাকা। বহুল আলোচিত ও প্রতীক্ষিত এই বিমাবন্দরের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। এটির কাজ আগামী বছরে শেষ হওয়ার শিডিউল থাকলেও চলতি বছরের অক্টোবরেই প্রাথমিক পর্ব শেষে উদ্বোধনের লক্ষ্যে তোড়জোড় চলছে। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে এখানে। এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে জাপানের মিৎসুবিশি ও ফুজিটা এবং কোরিয়ার স্যামসাং এই তিনটি প্রতিষ্ঠান থার্ড টার্মিনাল ভবন নির্মাণকাজ করছে। থার্ড টার্মিনালের নক্সা করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্থপতি রোহানি বাহারিন, যিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনালের নক্সা করে বিশ্বে খ্যাতি কুড়িয়েছেন।
ইতিমধ্যে থার্ড টার্মিনালের ৭২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখানে থাকছে ৩৭টি অ্যাপ্রোন পার্কিং। অর্থাৎ একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে। শাহজালাল বিমানবন্দরে বর্তমানে চারটি ট্যাক্সিওয়ে আছে। নতুন করে আরও দুটি হাই স্পিড ট্যাক্সিওয়ে যোগ হচ্ছে। রানওয়েতে উড়োজাহাজকে যাতে বেশি সময় থাকতে না হয়, সে জন্য নতুন দুটি ট্যাক্সিওয়ে তৈরি করা হচ্ছে। এ ছাড়া পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য দুটি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। আরো থাকবে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তিনতলা ভবন। এখানে থাকবে ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজ। প্রথম ধাপে চালু করা হবে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ। থাকবে উড়োজাহাজ রাখার জন্য ৩৬টি পার্কিং বে। বহির্গমনের জন্য ১৫টি সেলফ সার্ভিস চেকইন কাউন্টারসহ মোট ১১৫টি চেকইন কাউন্টার থাকবে। এ ছাড়া ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারসহ থাকবে ৬৬টি ডিপারচার ইমিগ্রেশন কাউন্টার। আগমনের ক্ষেত্রে পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় চেকইন কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি পাসপোর্ট ও ১৯টি চেকইন অ্যারাইভাল কাউন্টার থাকবে। এর বাইরে টার্মিনালে ১৬টি আগমনী ব্যাগেজ বেল্ট স্থাপন করা হবে। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য থার্ড টার্মিনালের সঙ্গে মাল্টি লেভেল কার পার্কিং ভবন নির্মাণ করা হবে। এতে এক হাজার ৩৫০টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে।
বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, ‘আগামী বছর অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই টার্মিনাল উদ্বোধন করবেন। আগামী এক বছরে কাজের গতি আরও বাড়বে। এখন অবকাঠামো কাজের শেষে যেসব যন্ত্রপাতি প্রয়োজন, সেগুলো স্থাপন করা হবে। থার্ড টার্মিনাল ভবনের সঙ্গে ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গপথ ও উড়ালসেতু নির্মাণ করা হবে, যার মাধ্যমে মেট্রো রেল ও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগব্যবস্থা থাকবে। এতে থাকবে আন্তর্জাতিক মানের অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। থার্ড টার্মিনালে স্বতন্ত্র কোনো ভিভিআইপি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে না। তবে টার্মিনাল ভবনের ভেতর দক্ষিণ পাশে সর্বাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ভিভিআইপিদের সময় কাটানোর জায়গা থাকবে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেছেন, ‘বিদ্যমান অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা দূর হওয়ায় যাত্রীরা এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক মানের সেবা পাবে। থার্ড টার্মিনালের প্রকল্প ব্যয় কোনোভাবেই বাড়বে না। বরং মোট প্রকল্প ব্যয় থেকে ৭৫০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এই টাকা দিয়ে সরকার ও জাইকার সম্মতি এবং অন্যান্য বিধিগত প্রক্রিয়া নিষ্পত্তি সাপেক্ষে থার্ড টার্মিনালে নির্মিতব্য ১২টি বোর্ডিং ব্রিজের অতিরিক্ত আরো ১৪টি বোর্ডিং ব্রিজ এবং একটি ভিভিআইপি টার্মিনাল কমপ্লেক্স নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান করার কথা ভাবছি। যারা এই টেন্ডারে উত্তীর্ণ হবে তারাই কাজ পাবে।
সমুদ্রের জলরাশিতে কক্সবাজার এয়ারপোর্ট ॥ সমুদ্রের জলরাশির ওপর রানওয়ে রেখে নতুন করে সাজানো হচ্ছে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানববন্দর। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দিনরাত সাগরজল ছুঁয়ে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ওঠানামা করবে এই রানওয়েতে। বছর দুয়েক আগে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে প্রথমবারের মতো সমুদ্রবক্ষের ওপর নির্মিতব্য ১ হাজার ৭০০ ফুটের রানওয়ের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যার পুরোটাই অর্থায়ন করছে বেবিচক। রানওয়ের অন্তত ৭০০ ফুট থাকবে সমুদ্রের পানির ওপর। এটিই হবে দেশের দীর্ঘতম রানওয়ে। বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হলে কক্সবাজারের পর্যটন ও অর্থনৈতিক বিকাশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে বলে মনে করছেন সংশিষ্ট ব্যক্তিরা। চীনের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চাংজিয়াং ইচাং ওয়াটার ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুরো (সিওয়াইডব্লিউসিবি) ও চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন-জেভি যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। রানওয়ে সম্প্রসারণকাজ শেষ হলেই এখানে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা ওঠা-নামা করতে পারবে ৩৮০-এর মতো সুপরিসর এয়ারবাস। বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান বলেন, আগামী ৫০ বছরের চাহিদা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বিশেষ এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। রানওয়ে সম্প্রসারণকাজ শেষ হলেই এখানে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা ওঠা-নামা করতে পারবে ৩৮০-এর মতো সুপরিসর এয়ারবাস।
জানা গেছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য ১০ হাজার ৫০০ ফুট। সাগরবক্ষে বিস্তৃত হওয়ার পর কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ১০ হাজার ৭০০ ফুট। এটি হবে দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন হলে কক্সবাজার থেকে সরাসরি পূর্ণ লোডে সুপরিসর আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা, সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন প্রিসিশন অ্যাপ্রোচ ক্যাট-১ লাইটিং সিস্টেম সংস্থাপনের ফলে রাত্রিকালীন বিমান পরিচালনা, বিমানবন্দরে যাত্রী ও কার্গো পরিবহন সক্ষমতা বৃদ্ধি, সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আকাশপথে দ্রুত যোগাযোগব্যবস্থা স্থাপন সম্ভব হবে।
কক্সবাজার বিমানবন্দর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনেক স্বপ্ন উলেখ করে প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, কক্সবাজারের পর্যটন ও অর্থনৈতিক বিকাশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে। এই বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক এভিয়েশন হাব হিসেবে ব্যবহার হবে। আন্তর্জাতিক টার্মিনাল হবে, বিদেশী পর্যটকেরা সরাসরি কক্সবাজার আসার সুযোগ পাবেন। ফলে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে আরও গতিশীলতা আসবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নতুন প্রজন্মের উড়োজাহাজ বোয়িং-৭৭৭-৩০০ ইআর, ৭৪৭-৪০০ ও এয়ারবাসের মতো উড়োজাহাজ সহজেই ওঠা-নামা করতে পারবে। কক্সবাজার বিমানবন্দরে বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ইউএস-বাংলা, নভোএয়ারের দৈনিক ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ১৮-২০টি ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে। কক্সবাজার-যশোর রুটে চিংড়ি পোনা সরবরাহ দিচ্ছে কয়েকটি কার্গোবিমান। সমুদ্রজলের রানওয়ের সম্প্রসারণ প্রকল্প শেষ হলে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের বড় বড় উড়োজাহাজ এখানে অবতরণ করতে পারবে।
সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর ॥ সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে বর্তমানে চলছে ২৩শ’ কোটি টাকার বিশাল প্রকল্প। এখানে উন্নীত করা হবে ৩৪ হাজার ৯১৯ বর্গফুটের টার্মিনাল ভবন, ৬ হাজার ৮৯২ বর্গফুটের কার্গো ভবন, কন্ট্রোল টাওয়ার, ফায়ার স্টেশন, কার পার্র্কিং ও রক্ষণাবেক্ষণ ভবন সহ অন্যান্য স্থাপনা। এরই মধ্যে কাজ শেষ হবার টার্গেট থাকলেও ডিজাইন ও নক্সায় জটিলতার দরুণ আবার সব নতুন করে সাজাতে হচেছ। যে কারণে নির্দিষ্ট সময়ে এটা সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। এটি নির্মিত হলে এখান থেকে সরাসরি বিমানের সিলেট লন্ডন ফ্লাইট ওঠানামা করতে পারবে। এখন শুধু লন্ডন থেকে ফ্লাইট অবতরণ করতে পারছে।
শাহ আমানত এয়ারপোর্ট ॥ বর্তমানে দেশের বন্দরনগরী চট্রগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরের রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়ের কাজ প্রায় শেষের পথে। ৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্প নির্র্দিষ্ট সময়ের আগেই শেষ হবে বলে জানিয়েছেন বেবিচক প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল মালেক। তিনি বলেন- এটি নির্মান হয়ে গেলে উড়োজাহাজাজ উড্ডয়ন ও অবতরণে আরও গতি আসবে। দেশী বিদেশী সুপরিসর উড়োজাহাজ নিরাপদেই ওঠানামা করতে।
সৈয়দপুর এয়ারপোর্ট ॥ দেশের উত্তরাঞ্চলে ভবিষ্যতে আঞ্চলিক হাব গড়ে তোলার লক্ষ্যে সৈয়দপুর এয়ারপোর্টকে নিয়ে ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছে বেবিচক। বর্তমান বিমানবন্দরকে আরও বৃহদাকারে গড়ে তোলার জন্য ইতোমধ্যে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। দেশী বিদেশী অর্থায়নে এর নির্মাণকাজের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও আপাতত কৌশলগত কারণে থমকে আছে প্রকল্প। তবে এরই মধ্যে ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে টার্মিনালসহ অন্যান্য সংস্কারমূলক কাজ সম্পন্ন করা
বরিশাল বিমানবন্দর ॥ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে আকাশপথের যোগাযোগ আরও জোরদার করার জন্য বরিশাল বিমানবন্দরের উন্নয়নে নেওয়া হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকার প্রকল্প। বর্তমানে চলছে রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ। বিদ্যমান রানওয়ে ৬ হাজার ফুট থেকে সাড়ে ৭ হাজার ফুটে উন্নীত করার কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা চলছে।
রাজশাহী ও যশোর বিমানবন্দর ॥ এদুটো বিমানবন্দরের ব্যাপক উন্নয়ন সংক্রান্ত বিশেষ প্রকল্পের কাজটি গত বছরই শুরু করার পরিকল্পনা থাকলেও দরপত্র জটিলতায় তা সম্ভব হয়নি। এ সংক্রান্ত একটি দরপত্র বেবিচক চূড়ান্ত করলেও মন্ত্রণালয় থেকে তা নাকচ করে দেওয়া হয়। এখন চলছে পুনঃদরপত্রের কাজ। এবিষয়ে জানতে চাইলে বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, উচিত ছিল কাজটি দ্রুত শুরু করার। উচিত ছিল প্রথম দরপত্রটিকেই আমলে নিয়ে কাজ শুরু করে দেয়ার। এখন তো প্রকল্পের ব্যয় ও সময় দুটোই বেড়ে যাবে। তবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো কিছু উন্নয়ন কাজ আগেই সম্পন্ন করা হয়েছে যশোর ও রাজশাহী বিমানবন্দরে।