নিউজ ডেস্ক:
১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে সারা দেশের স্কুল-কলেজে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ধুলোমাখা বোর্ড ও বেঞ্চ ধোয়ামোছার কাজ করছেন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা। নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে জোরেশোরে কাজ চলছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এদিকে গতকাল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, পরিস্থিতি বিবেচনা করে নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরের শুরুতে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা হতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ের সব বার্ষিক পরীক্ষাও এ বছর নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি সম্পর্কে রাজধানীর ডেমরার সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে আমরা যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করছি। শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও নানা মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।’ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।
সরেজমিন সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে গিয়ে দেখা গেছে ধোয়ামোছার কাজ চলছে। বেঞ্চগুলো ইতিমধ্যে পরিষ্কার করা হয়েছে। পরিপাটি কলেজের আঙিনা যেন শিক্ষার্থীদের অপেক্ষার প্রহর গুনছে। কলেজের অধ্যক্ষ কানিজ মাহমুদা আকতার বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা মেনে কলেজ খোলার সব প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি শুরু করেছে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদরাসা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণায় খুশি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তবে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে কিছুটা চিন্তিতও রয়েছেন কিছু অভিভাবক। বাংলাহিলি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমান ও কোকতাড়া দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, সরকারের নির্দেশনা মেনে স্কুল খোলার সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ফারুক সম্প্রতি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘স্কুল-কলেজে সরাসরি পাঠদান চালু না থাকলেও প্রতিষ্ঠান কিন্তু বন্ধ ছিল না। কারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম চালু রয়েছে। শিক্ষকরাও প্রতিষ্ঠানে আসছেন।’ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি। আগামীকাল আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় নভেম্বরের শেষে কিংবা ডিসেম্বরের শুরুতে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা হতে পারে। সে পরীক্ষা নেওয়া হবে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কতগুলো বিষয়ের ওপর পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষা হবে তা পরিস্থিতি অনুযায়ী ঠিক করা হবে। ছয়টি বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়ার মতো অবস্থা থাকলে ছয়টিই নেওয়া হবে। আমাদের প্রস্তুতি আছে।’ তিনি বলেন, প্রাথমিকের বার্ষিক পরীক্ষাও হবে।
জাকির হোসেন বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হলেও প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের আপাতত স্কুলে নেওয়ার পরিকল্পনা নেই। প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা আপাতত স্কুলে আসবে না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘লিটারেসি ফর এ হিউম্যান সেন্টারড্ রিকভারি : ন্যারোয়িং দ্য ডিজিটাল ডিভাইড’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে এ বছরের আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালিত হবে। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম উপস্থিত ছিলেন। এর আগে রবিবার আন্তমন্ত্রণালয় সভা করে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানান, করোনার কারণে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর বন্ধের পর ১২ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।