শুক্রবার , ডিসেম্বর ২৭ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / সৌরবিদ্যুতে আলোকিত ২ কোটি প্রান্তিক মানুষ

সৌরবিদ্যুতে আলোকিত ২ কোটি প্রান্তিক মানুষ

নিউজ ডেস্ক:
মনপুরা দ্বীপটি ভোলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। চারপাশে ছোট-বড় ১০টি চরে লক্ষাধিক মানুষের বাস। কয়েক বছর আগেও এখানকার মানুষ অন্ধকারে ছিল। ছিল না বিদ্যুতের আলো। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে আঁধারে ডুবে যেত চারপাশ। থেমে যেত জীবনের কোলাহল। মনপুরাবাসীকে সেই আঁধার থেকে মুক্তি দিয়েছে সৌরবিদ্যুৎ। মনপুরার চর কলাতলী, চর জহিরউদ্দিন (মাঝেরচর), চর নিজাম, লালচর, বালুয়ারচরের মানুষের জীবনযাত্রা এখন পাল্টে গেছে। বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে জেলেদের নৌকাও আলোকিত হয়েছে সৌর প্যানেলে। বেড়েছে স্কুল-কলেজগামী ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা।

পানি সংকটের কারণে রাঙামাটি জেলার জুরাছড়িতে প্রায় ৬০-৭০ হেক্টর জমি অনাবাদি ছিল। এখন আর সেই সমস্যা নেই। সৌর পাম্পের মাধ্যমে এলাকার কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। শুস্ক মৌসুমেও বোরো চাষ হচ্ছে। একই সঙ্গে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে দুর্গম পাহাড়ি এলাকার শিশুরা রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করার সুযোগ পাচ্ছে।

এভাবে ৫৮ লাখ সোলার হোম সিস্টেম দেশের নানা প্রান্তের দুই কোটি প্রান্তিক জনগণকে আলোকিত করেছে। সৌরবিদ্যুতের পরিমাণ বেড়েই চলেছে সারাদেশে।

বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, ২০০৩ সালে ৫০ হাজার পরিবারের মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে পাইলট প্রকল্প আকারে বাংলাদেশে সোলার হোম সিস্টেমের যাত্রা শুরু। বর্তমানে এর মাধ্যমে ১৬ শতাংশ প্রান্তিক জনগণ বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করছে। ২০০৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সোলার হোম সিস্টেমের কারণে ৯ দশমিক ৬ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস নিঃসরণ থেকে পরিবেশ নিস্তার পেয়েছে। একই সঙ্গে ৪৪০ কোটি টন কেরোসিন পোড়ার দূষণ থেকে পরিবারগুলোকে নিরাপদ রাখতে পেরেছে এই প্রকল্প।

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সবচেয়ে সম্ভাবনাময় উৎস হচ্ছে সৌরশক্তি। সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হয়েছে, যার ২৫০ মেগাওয়াট এসেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের অফগ্রিড এলাকায় স্থাপিত সোলার হোম সিস্টেম থেকে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে উৎসাহিত করতে নেট মিটারিং ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে। নেট মিটারিং পদ্ধতিতে গ্রাহকের বিদ্যুৎ খরচ সাশ্রয় হয়। নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বর্তমানে ৭২২ দশমিক ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। তবে সরকারের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ১৭ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি দিয়ে উৎপাদন করা।

খাত সংশ্নিষ্টরা বলছেন, সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত সোলার হোম সিস্টেমের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার অফগ্রিড এলাকায় সফলতার সঙ্গে বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছাতে পেরেছে। দূষণমুক্ত জ্বালানি মানেই পরিবারের ভালো স্বাস্থ্য ও উন্নত জীবন-যাপনের সুযোগ।

পাওয়ার সেক্টর মাস্টারপ্ল্যান অনুসারে ২০৪১ সালের মধ্যে মোট ক্ষমতার ১৫ শতাংশ (প্রায় ৯ হাজার) বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে পাওয়ার কথা রয়েছে। এখন দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে পাওয়া যাচ্ছে ৭৩০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে গ্রিডে যায় ৩১৮ মেগাওয়াট, যার ৮৮ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ আর ২৩০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ। নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৪৬৭১ মেগাওয়াট অফগ্রিড বিদ্যুৎ আসে। এর মধ্যে ৪৬৬ মেগাওয়াটই আসে সোলার হোম সিস্টেম থেকে। আর বায়ু থেকে তিন মেগাওয়াট, জৈব-গ্যাস থেকে ৬৩০ কিলোওয়াট এবং বায়োগ্যাস থেকে ৪০০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ মেলে।

আরও দেখুন

বাগাতিপাড়ায় আগুনে পোড়া তিন পরিবার পেল সহায়তা

নিজস্ব প্রতিবেদক বাগাতিপাড়া,,,,,,,,,,,,,নাটোরের বাগাতিপাড়ায় আগুনে পুড়ে যাওয়া ৩টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে …