নিজস্ব প্রতিবেদক:
দিনাজপুর ফুলবাড়ীতে শুরু হয়েছে ধানকাটামাড়াঁ। আর এই ধান কাটামাড়াঁকে কেন্দ্র করে কৃষি শ্রমিক সংকট ও মজুরি বেশি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষক। অনেক স্থানে বাড়তি মজুরি দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না ধানকাটা কৃষি শ্রমিক। ধান ঘরে তুলতে বাড়তি খরচ হওয়ায় ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন উপজেলার কৃষকরা।
উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, গত মাসের শেষের দিকে এবং চলতি মাসের প্রথম থেকে শুরু হয়েছে ধানকাটার উৎসব। আবহাওয়া এখনো ভালো থাকায় দ্রুত ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা।
তবে বাড়তি মজুরি ও শ্রমিকসংকটে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। এক বিঘা জমির ধান কাটতে দিতে হচ্ছে ৫ হাজার ৫শ থেকে ৬ হাজার ২শ টাকা পর্যন্ত। এর সঙ্গে রয়েছে মাড়াই, ঝাড়াই ও শুকানোর বাড়তি খরচ। আবার জমির দূরত্ব বেশি হলে মজুরি আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে আবাদ হয়েছে ১৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬২ হাজার ১৭ মেট্রিক টন। কৃষকেরা জানান, বোরো মৌসুমে এমনিতেই শ্রমিকসংকট থাকে। অনেকে বেশি উপার্জনের আশায় স্থানীয় কৃষিশ্রমিকরা বগুড়া, নওগাঁ, নাটোর, সান্তাহার, চলনবিলসহ বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটতে চলে যান। ফলে চলতি বোরো মৌসুমে শ্রমিকসংকট তীব্র হয়েছে।
উপজেলার বাগড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল মোতালেব বলেন, দেড় বিঘা জমির ধান কাটতে বিঘা প্রতি সাড়ে ৫ হাজার টাকা চুক্তিতে ২০ জন কৃষি শ্রমিক লাগিয়েছেন। এরপর রয়েছে মাড়াই ও পরিবহন খরচ। তবে ধানের ফলনে তিনি খুব খুশি।
বিঘা প্রতি ৪২ মন ধান পেয়েছেন। বাড়তি মজুরির বিষয়ে বাগড়া গ্রামের কৃষিশ্রমিক আতিউর রহমান, লিয়াকত আলী, রুহুল আমিন ও আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ধান কাটাই-মাড়াই মৌসুমেই কৃষি শ্রমিকদের যা আয় হয়। অন্য সময় দিন-মজুরি ছাড়া অন্যকোনো আয় থাকে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, উপজেলায় ভর্তুকিতে কৃষকদের ছয়টি হারভেস্টার মেশিন দেওয়া হয়েছে। সেগুলো দিয়ে মাঠে ধান কাটার কাজ চলছে। শ্রমিক সংকটের কারণে সব সময় কৃষকদের আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছ। তবে বিঘাপ্রতি ধান টাকার মজুরি ৬ হাজার টাকা উপজেলা থেকে নির্ধারণ করা হলেও, এখন পর্যন্ত এ বছর মূল্য নির্ধারণ করা যায়নি।