নিউজ ডেস্ক:
অভাবের তাড়নায় স্ত্রীর গর্ভের বাচ্চা বিক্রি করে দিয়েছিলেন জামালপুরের হতদরিদ্র দিনমজুর আলী আকবর। কিন্তু হাসপাতালে জন্ম নেওয়া যমজ নবজাতকের উধাও হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয় হাসপাতালজুড়ে। অবশেষে দুই নবজাতককে উদ্ধার করে ফিরিয়ে দেওয়া হয় মায়ের বুকে।
জামালপুর পৌর শহরের রামনগর গ্রামের মর্জিনা বেগম অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ৬ মাসের সময় অভাবের তাড়নায় স্বামী আলী আকবর স্ত্রীর সিজারিয়ানসহ চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ব্যয় মেটানোর শর্তে গর্ভের বাচ্চা বিক্রি করে দেন প্রতিবেশী জাহিদুল ইসলামের কাছে। গত বছর ২৭ ডিসেম্বর জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে অপ্রত্যাশিতভাবে পুত্র, কন্যাসহ দুই নবজাতকের জন্ম দেন সেই গৃহবধূ। পরদিন হাসপাতাল থেকে চুরি হয়ে যায় দুই নবজাতক। এ ঘটনায় বাবা আলী আকবরের চিৎকারে তোলপাড় শুরু হয় হাসপাতালজুড়ে। এ সময় হাসপাতালে অবস্থানরত সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন মিন্টু ও তার সহকর্মীরা এক পাচারকারীকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সীমা রানী সরকার।
পরে প্রসূতির যাবতীয় চিকিৎসা খরচসহ দুই নবজাতকের প্রতিপালন ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্পের একটি ঘরেরও বরাদ্দ দেন তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক মোর্শেদা জামান রামনগর গ্রামে যান। সেখানে ওই পরিবারের জন্য নির্মিত নতুন ঘরের উদ্বোধন করেন। এছাড়া ওই পরিবারকে পুনর্বাসনের ঘোষণা দেন। পাকা ঘরের চাবি পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন আলী আকবর ও তার স্ত্রী মর্জিনা বেগম।
এ সময় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী খন্দকার মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক কবীর উদ্দিন আহামেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোখলেছুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাসরীন পারভীন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটুস লরেন্স চিরান, ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মাহমুদা বেগম ও সহকারী কমিশনার ভূমি তাহমিনা আক্তার উপস্থিত ছিলেন।