নিউজ ডেস্ক:
একের পর এক যুদ্ধে ব্যবহৃত হেলিকপ্টারের আকাশ সীমা লঙ্ঘন, মর্টারশেল হামলাসহ সীমান্তে সাম্প্রতিক ঘটনার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি। ভবিষ্যতে সীমান্ত প্রটোকল ব্যত্যয় না হওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছে তারা।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সাত সদস্যের একটি দল স্পিড বোটে করে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের নাফ নদীর শাহপরীরদ্বীপ জেটি ঘাটে পৌঁছায়।
পতাকা বৈঠকে বিজিবি প্রতিনিধি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন টেকনাফের বিজিবি ২ ব্যাটালিয়নে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার। মিয়ানমার বিজিপির পক্ষে নেতৃত্ব দেন পিউন ফিউর ১ বর্ডার গার্ড পুলিশের অধিনায়ক কর্নেল ইয়ে ওয়াই শো। বৈঠকের শুরুতে বিজিবি সীমান্তের গোলাগুলি বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, সীমান্তের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও দুই দেশের মানুষ যাতে নিরাপদে বসবাস করতে পারে সে ব্যাপারে বিজিবি-বিজিপি এক সঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন। বৈঠকে অনুপ্রবেশ রোধ, মাদক চোরাচালান বন্ধসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি অধিনায়ককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বিজিবির অধিনায়ক। ছবি: আজকের পত্রিকা
শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, ‘বৈঠকে বিজিপির পক্ষে বলা হয়েছে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে সীমান্তে নানা অপরাধ করছে। বিজিবির পক্ষ থেকে এ ঘটনা অস্বীকার করা হয়। বিজিবি তাদের জানিয়েছে, কখনো কোনো সময় বাংলাদেশের ভূখণ্ড কোনো প্রকার সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। একই সঙ্গে সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশ কোনো সহায়তাও করে না। ভবিষ্যতেও সন্ত্রাসীদের রোধে বাংলাদেশ কঠোর অবস্থানে থাকবে। সীমান্তে জনসাধারণের নিরাপত্তা ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে উভয় দেশের অধিনায়ক এক সঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিজিবির রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ আজিজুর রউফ। তিনি বলেন, পতাকা বৈঠকটি দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর নিয়মমাফিক বৈঠকের অংশ। গত তিন মাস ধরে মিয়ানমার অভ্যন্তরে চলমান গোলাগুলিকে কেন্দ্র করে সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে বৈঠক করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। সীমান্তে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ঘটনায় বাসিন্দারা আতঙ্কগ্রস্ত হন। এ পরিস্থিতি নিয়ে শুরু থেকে দু-দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে নানা পর্যায়ে যোগাযোগ চলছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিজিবির পক্ষ থেকে বিজিপির কাছে একাধিকবার চিঠি পাঠানোও হয়েছিল। এর প্রেক্ষিতে বিজিপি বৈঠকে বসতে রাজী হন এবং বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রামু সেক্টরের স্টাফ অফিসার আহমেদ তারেল কবির।
উল্লেখ্য, প্রায় তিন মাস ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান গোলাগুলিকে কেন্দ্র করে সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সীমান্তের এ পরিস্থিতি নিয়ে শুরু থেকে দু-দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে নানা পর্যায়ে যোগাযোগ চলছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিজিবির পক্ষ থেকে বিজিপির কাছে একাধিকবার চিঠি পাঠানোও হয়েছিল। বাংলাদেশের সীমান্তে মর্টার শেল ও গুলি এসে পড়ে হতাহতের ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে একাধিক বার তলব করে প্রতিবাদ জানানো হয়।