নিজস্ব প্রতিবেদক, সিংড়া:
নাটোরের সিংড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুকুর লিজ দিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে। উপজেলার ১০১ নং কৈগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০ বিঘা পুকুর গোপনে লিজ দিয়ে অর্থ আত্মসাতের এ অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরেজমিনে কৈগ্রাম এলাকায় গেলে বিক্ষুব্ধ জনতা গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, অধিকাংশ সময় গোপনে পুকুর লিজ দিয়ে প্রতিষ্ঠানে কিছু টাকা দেয়া হয় আর বাকি টাকা হরিলুট হয়। এতে করে স্কুলটি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উন্মুক্ত ডাকের মাধ্যমে পুকুর লিজ দেয়ার দাবি তাদের।
স্থানীয় আঃ কুদ্দুস জানান, তিনি জানতে পেরেছেন ৯ লাখ টাকায় ৩ বছরের জন্য স্কুলের ১০ বিঘা পুকুর লিজ নিয়েছেন স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউনুস আলী। আর পুকুরের পূর্বের মাছের দাম বাবদ আরও ২৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। কিন্তু স্কুল ম্যানেজিং কমিটি স্থানীয়দের জানিয়েছেন ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকায় পুকুর লিজ দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় আবুল কালাম জানান, আমি ৭ লাখ টাকায় পুকুর লিজ নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে দেয়া হয়নি। মোর্শেদুল ইসলাম সাড়ে ৭ লাখ টাকা আর আঃ মজিদ ৮ লাখ টাকায় পুকুর লিজ নিতে চেয়েছিল অথচ তাদেরকে দেয়া হয়নি। এদিকে পুকুরে মাছ ছেড়েছে ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি ইউনুস আলী। এ ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। রবিবার (২৭ শে মার্চ) সকালে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয়দের বিষয়টি সুরাহার জন্য বসার কথা থাকলেও স্কুল প্রাঙ্গণে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সদস্য ও স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ কেউ উপস্থিত হয়নি।
স্কুলের অফিস কক্ষে গিয়ে প্রধান শিক্ষক মো. জালাল উদ্দিনকে পাওয়া যায়নি, মুঠোফোনে তিনি জানান, আমি অসুস্থ, আজ ছুটিতে আছি। এখনও পুকুর লিজ দেয়া হয়নি।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি জানান, পুকুর লিজের ব্যাপারে আলোচনা চলছে, এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
পুকুর লিজ গ্রহণকারী ও আ’লীগ নেতা ইউনুস আলী বলেন, পুকুর লিজ নিয়েছি বিধায় মাছ ছেড়েছি। কত টাকায় লিজ নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ কথা আমি স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ছাড়া কাউকে বলতে বাধ্য নই। স্কুলের সভাপতি আমাকে লিজ দিয়েছে তাই মাছ চাষ করছি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলী আশরাফ বলেন, আমি কিছুই জানিনা, খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম এম সামিরুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে কিছুই জানিনা, তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।