শুক্রবার , ডিসেম্বর ২৭ ২০২৪
নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / সিংড়ায় লিরা জামানের শখের বাগান, রয়েছে শত রকম ফুল-ফলের গাছ

সিংড়ায় লিরা জামানের শখের বাগান, রয়েছে শত রকম ফুল-ফলের গাছ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিংড়া:
বসতবাড়ির আঙ্গিনায় ফুল-ফলের বাগান করে সফলতা পেয়েছেন লিরা জামান নামে এক নারী উদ্দোক্তা। তার বসতবাড়ির আঙ্গিনায় প্রায় ৩ বিঘা জায়গায় এখন শোভা পাচ্ছে দেশি-বিদেশি প্রায় ১২০ রকমের ফুল গাছ, প্রায় ২৫ রকমের আম গাছ ও ১০ রকমের সবজি গাছ। তার এ সফলতায় ফুল-ফলের বাগান করতে উৎসাহী হচ্ছেন অনেকেই। সারাদিন বাড়ির কাজ, সংসারের কাজের মধ্যে লিরা জামান উদ্দোক্তা হিসেবে অনলাইনে কেনাকাটা করেন। পাশাপাশি নিজস্ব অনলাইন পেজ রয়েছে জায়রাস ফ্যাশন। এর মাধ্যমে মেয়েদের পণ্য সরবরাহ করে থাকেন।

নাটোরের সিংড়া পৌর শহরের কাঁটাপুকুরিয়া মহল্লার বাসিন্দা জামান আইটির কর্ণধার ফ্রিল্যান্সার আবু হেনা মোস্তফা জামান রনি’র সহধর্মিণী লিরা জামান। সংসারের সকল কাজ করে বাগানের যত্ন নিতে কমতি নেই এই দুই সন্তানের জননীর। ছোটবেলায় বাবার বাড়িতে আর বিবাহের পরে এখন শশুরবাড়িতে বাগানেই যেন কাটে তাঁর বেশি সময়। প্রায় ২০ বছর আগে ফুল-ফলের বাগান শুরু করেন লিরা জামান। ঢাকা, রংপুর, পাবনা, রাজশাহী, নাটোর, বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলা থেকে তিনি দেশি-বিদেশি প্রায় ১২০ প্রজাতির ফুল গাছ সংগ্রহ করে বাগান তৈরি করেছেন। তাঁর নিরলস প্রচেষ্টায় বাগানে শোভা পাচ্ছে অসংখ্য ফুল ও ফল।

সরেজমিনে দেখা যায়, চিতালিলি, পামটি, মানি প্ল্যান্ট, চায়না বট, চায়না বাঁশ, পাতা বাহার বাটারফ্লাই, বাগানবিলাশ, রক্ত পরোবি, হলুদ এ্যালমন্ডা, বেগুনি এ্যালমন্ডা, এ্যারিকাপাম, সিঙ্গোনিয়াম, ফার্ন, বেবি টিয়ারস, অপরাজিতা, স্থলপদ্ম, হাসনাহেনা, রঙ্গন, শেফালি ফুল, কাঠগোলাপ, দোলনচাঁপা, ফুরুজ ফুল, ৮ রকম ঘাস ফুল, ৬ রকম পর্তুলিকা, ৫ রকম কচুপাতা, ৭ রকম গোলাপ, ৫ রকম জবা, ৭ রকম রেইন লিলি, ৩০ রকম ইন্ডোর প্ল্যান্টসহ প্রায় ১২০ রকমের ফুল গাছ রয়েছে লিরা জামানের বাগানে।

এছাড়া ল্যাংড়া, সুরমা ফজলি, বারি-৪, খিরসাপাতসহ প্রায় ২৫ রকম জাতের আম গাছ ও বেগুন, কাঁচা মরিচ, পুঁইশাক, লাউ, টমেটো, কলমি শাক, মিষ্টি কুমড়া, লেবুসহ ১০ রকমের নিরাপদ সবজি উৎপাদন হচ্ছে তার বাগানে। এ বাগানে তিনি সর্বনিম্ন লিলি ফুল ৫০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১২০০ টাকা দিয়ে চিতালিলি ফুল ক্রয় করেছেন। চিতালিলি ফুল গাছ সিংড়া উপজেলায় শুধু লিরা জামানের বাগানেই রয়েছে।

লিরা জামান বলেন, ছোটবেলা থেকে ‘গাছ ও প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা থেকেই এ বাগানের জন্ম। যখন স্কুলে পড়তাম উপবৃত্তির টাকা পেলে সেই টাকায় গাছ কিনে বাড়ির আঙ্গিনায় লাগাতাম। তখন থেকেই শুরু। আমার গাছের প্রতি মমত্ববোধে কেউ বাধা দেয়নি। বরং সাপোর্ট পেয়েছি। এখনো আমার স্বামী সার্বক্ষনিক সাপোর্ট দেয়। বাহির থেকে হরেক রকম গাছ এনে দেয়। আমিও কোথায় গেলে নিজেই পছন্দের গাছ সংগ্রহ করি।

তিনি আরও জানান, বিভিন্ন জেলা থেকে গাছগুলো সংগ্রহ করতে এ পর্যন্ত প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। দুইজন শ্রমিক বাগানে কাজ করে। বাগানটি আরও বড় করার ইচ্ছা আছে। তাঁর বাগান দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রতিবেশি ও স্বজনরা বাগান করেছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফুল গাছগুলো প্রকৃতির সৌন্দর্য ধরে রেখেছে, যা সবাইকে মুগ্ধ করে। এখান থেকে ফরমালিনমুক্ত ফল ও সবজি পাওয়া যায়। নিজেদের চাহিদা প‚রণ করে প্রতিবেশী ও স্বজনদের দেয়া হয় এ ফল।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেলিম রেজা বলেন, তার বাগান পরিদর্শন করেছি। ভালো লেগেছে। ফুল, ফল ও সবজি বাগান করতে আগ্রহী আমরা তাঁদেরকে পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তাসহ যাবতীয় সহযোহিতা করে থাকি। যাতে তাঁদেরকে দেখে অন্যরাও উদ্বুদ্ধ হতে পারে। কৃষি বিভাগ সবসময় তাঁদের সাথে রয়েছে।

আরও দেখুন

বাগাতিপাড়ায় আগুনে পোড়া তিন পরিবার পেল সহায়তা

নিজস্ব প্রতিবেদক বাগাতিপাড়া,,,,,,,,,,,,,নাটোরের বাগাতিপাড়ায় আগুনে পুড়ে যাওয়া ৩টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে …