নিজস্ব প্রতিবেদক, সিংড়া:
নাটোরের সিংড়ায় ইসলামী ফাউন্ডেশনের সুপারভাইজার হাসানুজ্জামানের বিরুদ্ধে স্ত্রীর উপর শারীরিক, মানসিক নির্যাতন ও যৌতুকের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন বানুর কাছে বরাবর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেছেন তাঁর স্ত্রী নুরুন্নাহার।
পরিবার ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৩ আগষ্ট বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তাঁরা। বিয়ের পর নুরুন্নাহার জানতে পারেন এর আগে তাঁর দুটি বিয়ে হয়েছিলো। চারিত্রিক অবক্ষয় এবং যৌতুকলোভির কারণে দুটি বউ এর সাখে তালাক হয়েছে।
নুরুন্নাহারের সাথে বিয়ের পর ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে তাঁর স্বামীর সাথে বিভিন্ন মেয়ের অশালিন চ্যাট বন্ধ করার কথা বলার পর থেকে তাঁর উপর নেমে আসে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে হাসান্নুজামান, নতুবা অন্যজনকে বিয়ের কথা বলতে থাকে।
গত ৮মে হাসানুজ্জামান তাঁর নিজ বাড়ি রাজশাহীর পুঠিয়ায় স্ত্রী নুরুন্নাহারকে অমানসিক নির্যাতন করে। পরে তাঁর বাবাকে ফোনে আসতে বলে ঐদিন নুরুন্নাহার ও তাঁর বাবাকে আটকে রাখে। পরবর্তীতে সাদা স্ট্যাম্পে সই নিয়ে ছেড়ে দেয়।
১৪ জুন সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর নুরুন্নাহার অভিযোগ দিতে এলে বিষয়টি টের পেয়ে নুরুন্নাহারকে শাসন গর্জন করে। ঐ দিন দুপুরে বাড়ি যাবার পথে থাঔল বাজারে তাদের পথরোধ করে নুরুন্নাহার ও তাঁর বাবাকে কিলঘুষি সহ অভিযোগের কপি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে।
জানা যায়, ইফার সুপারভাইজার হাসানুজ্জামান ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার ব্যবহার করে বিভিন্ন মেয়েদের সাথে অশালিন চ্যাট করে। সে শিক্ষিকাদের ফোনে কু-প্রস্তাবসহ অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে আসছে। এর আগে তাঁর অত্যাচার ও যৌতুকলোভীর কারণে পরপর দুটি বউ তালাক হয়। সুপারভাইজার হবার সুবাদে শিক্ষিকাদের চাকুরির নানা ভয়ভীতি, বেতন বন্ধের ভয় দেখিয়ে সম্পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালের শেষের দিকে সিংড়া অফিসে যোগদান করেন হাসানুজ্জামান।
হাসানুজ্জামানের স্ত্রী নুরুন্নাহার জানান, আমি ২০১৭ সালের ১লা জানুয়ারী চাকুরিতে যোগদান করি। ২০১৮ সালের শেষের দিকে হাসানুজ্জামান সিংড়া উপজেলার সুপারভাইজার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কেন্দ্রে গিয়ে পরিচয় হয় এ সুবাদে আমাকে ফোন দেয়। আমার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে একসময় বিয়ের প্রস্তাব দেয়। ২০১৯ সালের ১৩ আগষ্ট ১ লক্ষ টাকার দেনমোহরে বিয়ে করেন। বিয়ের রাতে ১ লক্ষ টাকার চেক দেন। পরে সে চেকটি ফেরত নেন। বিয়ের পর হতেই যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। বাড়ি, পুকুর, জমি লিখে দেবার জন্য চাপ দিতে থাকে। কিছুদিন পর আমার পেটে বাচ্চা আসে কিন্তু তার কয়েকদিন পর হাসানকে এই কথা জানালে ও বলে বাচ্চা নষ্ট করে দে তোর পেটের বাচ্চা নিবনা। আগে ৫ লক্ষ টাকা দে। আমি রাজি হইনা তখন বলে তোর বাপের তো সম্পদ আছে মানুষ কর।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত হাসানুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সে আমার স্ত্রী, তাঁর সাথে কিছু বনিবনা রয়েছে। তবে অভিযোগ সত্য নয়।
সিংড়া থানার ওসি নুর-এ-আলম সিদ্দিকী জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।