নিজস্ব প্রতিবেদক, সিংড়া:
নাটোরের সিংড়ায় চলনবিল ও আত্রাই নদী দখল করে অবৈধভাবে বাঁনার বাঁধ এবং সৌঁতিজাল দিয়ে মাছ শিকার করছে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। নাটোরের সিংড়ার অধিকাংশ এলাকা চলনবিল বেষ্টিত। বিলে বর্ষার পানি চলে আসায় এসব এলাকায় মাছ শিকারিদের তৎপরতা বেড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার জোলার বাতা, চৌগ্রামের বড়িয়া, জামতলী-বামিহাল খালে, তাজপুর ইউনিয়নের জয়নগর এলাকায় বাঁনার বাঁধ এবং সৌঁতিজাল দিয়ে ছোট-বড় মাছ নিধন করা হচ্ছে। বাঁধাগ্রস্থ করা হচ্ছে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, চলনবিলে ও আত্রাই নদীতে বাঁশের বাঁধ দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে মাছ ধরছেন। এতে নদীর পাড় ভাঙনের আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। সৌঁতিজাল দিয়ে মৎস্য সম্পদ নিধনের নিষেধাজ্ঞা আইন থাকলেও যথাযথভাবে প্রয়োগ না হওয়ায় কিছু অর্থলোভী অসাধু মৎস্য শিকারিদের দ্বারা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে মাছের বংশবিস্তার। সরকার কারেন্ট জাল উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, বাজারজাত, ক্রয় ও ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিলে মাছের অভাব থেকে দেশ কিছুটা হলেও কমবে বলে তারা মনে করছেন।
পরিবেশ ও প্রকৃতি আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সিদ্দিকী জানান, চলনবিলে বাঁনার বাঁধ ও সৌঁতিজাল দেওয়ায় সব ধরনের মাছ ও জলজ প্রাণীর জীবন ধারণের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে মাছসহ বিভিন্ন জলজ পোকামাকড় বিলুপ্তির পথে। এসব রোধে প্রশাসনের অভিযান ও এলাকাবাসীর সচেতনতা প্রয়োজন। নির্বিচারে মা মাছ নিধনে দেশীয় প্রায় ৩৯ প্রজাতির মাছের বিলুপ্তি ঘটেছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। ইতোমধ্যে কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাল জব্দ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অবৈধ মৎস্য শিকারিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এম এম সামিরুল ইসলাম জানান, গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকটি বাঁনার বাঁধ ও সৌঁতিজাল উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।