নিজস্ব প্রতিবেদক, সিংড়া
নাটোরের সিংড়ায় কৃষকরা ব্যাপারীদের কাছে ধান বিক্রি করেছিল কম মূল্যে, আর ৬ মাস পর সেই মূল্য পরিশোধের টাকার বদলে ব্যাপারীরা ধানের প্রায় দ্বিগুন মূল্য দরে চাল দিল কৃষকদেরকে। এতে দিশাহারা হাজার হাজার কৃষক। গতকাল ইটালী – জামতলী সড়কে ভ্যান ভর্তি চালের বস্তা কৃষকদেরকে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
জানা যায়, সম্প্রতি সিংড়ায় বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের কাছ থেকে কৌশলে ব্যাপারীরা ধান নিয়ে সবার চক্ষুর আড়ালে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে কৃষকদের টাকায়। এতে বিপাকে পড়েছে সাধারণ কৃষক। ধান নেওয়ার ১ সপ্তাহের মধ্যে টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও ব্যাপারিরা দিনের পর দিন মাসের পর মাস পার করেও কৃষকের টাকার কোন খবর নাই। কৃষকরা কাউকে অভিযোগ করতেও ভয় পাচ্ছে কারণ তারা প্রভাবশালী ব্যবসায়ী।
প্রতি হাটে ব্যাপারীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে। অনেক কৃষক বুক ভরা আশা নিয়ে ব্যাগ হাতে বাজার করতে এসেছে টাকা পাবে বলে। কেউবা আবার হালখাতার বাকি পরিশোধ করবে কিন্তু ব্যাপারিরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
আসলে পালিয়ে বেড়ানোর কারণ কৃষকদের টাকায় ব্যবসা করতে তো সুদ দিতে হচ্ছে না। কৃষকদের টাকা তারা অনায়াষেই রাতারাতি বাড়ি গাড়ীর মালিক হচ্ছে। কৃষকদের শোষন করে।
গত শুক্রবার এক কৃষক জামতলী বাজারে ব্যাগ হাতে নিয়ে বসে আছে। তিনি বলেন ৬ মাস হলো ব্যাপারীদের কাছে ধান দিয়েছি, টাকা দেয় না। আজও বাজার করতে পারিনি। কাউকে বলতেও পারছি না। বাজারে হালখাতার বাকিগুলো পরিশোধ করতে পারিনি। বলতে পারেন আমরা কিভাবে বাঁচবো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক বলেন, জামতলী, চৌগ্রাম, রনবাঘাসহ এলাকার বেশ কিছু ব্যাপারী রয়েছে তারা সবাই কৌশল করে এগুলো করছে। টাকা চাইতে গেলে লাঞ্ছনার স্বীকার হতে হয়।
এভাবেই প্রতি মৌসুমে একশ্রেণীর ব্যবসায়ীরা কৃষকদের শোষণ করে রাতারাতি বাড়ি গাড়ীর মালিক হচ্ছে।
কৃষকদের অভিযোগ, ব্যাপারীরা ধান নিয়েছে টাকা দিবে কিন্তু ৬ মাস পর আমাদের চাল দিচ্ছে তাও আবার দ্বিগুন মূল্য ধরে। কি করবো ব্যাপারিরা প্রভাবশালী। চাল নিয়ে যাচ্ছি এতগুলো চাল কিভাবে খাবো।
ধান ছাড়া সব কিছুই ঠিক আছে কিন্তু আমারা এত কষ্ট করেও ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছি না। ধান বিক্রির জন্য কোন ব্যাপারীই নাই।
ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে তিলে তিলে শেষ হচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। কেউবা আবার আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে।