ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলমান রয়েছে মশক নিধন অভিযান। বর্তমান সরকারের নানা পদক্ষেপে ডেঙ্গুর প্রভাব কমতে শুরু করেছে। যতটা ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিলো, পরিস্থিতি ততটা ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারেনি বলে মনে করছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
তারা বলছেন, সরকারের সর্বোচ্চ সতর্কতার কারণেই তা সম্ভব হয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যমতে, সর্বশেষ ডেঙ্গু
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শের জন্য আন্তর্জাতিক একটি বিশেষজ্ঞ দলের তিন
প্রতিনিধি ঢাকায় অবস্থান করছেন। তাদের মতে, (এসআইটি) বা বন্ধ্যাকরণ
প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ডেঙ্গু
নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিজ্ঞানসম্মত বিভিন্ন পদ্ধতি
খতিয়ে দেখতেই এ বিশেষজ্ঞ দল বাংলাদেশে এসেছেন। তাদের পরামর্শ মোতাবেক
দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এদিকে চলমান রয়েছে ডেঙ্গুর লার্ভা নিধনে বাসা-বাড়িতে বিশেষ অভিযান। এরইমধ্যে কেবল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অন্তত ৫৮ হাজার বাসাবাড়িতে অভিযান পরিচালনা করার পাশাপাশি জরিমানাও করা হয়েছে।
এডিস মশা নিধনে ২০ দিনের বিশেষ চিরুনি অভিযান শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। উত্তরের পুরনো ৩৬টি ওয়ার্ডকে ১০টি ইউনিটে ভাগ করে প্রতি ইউনিটে ১০টি টিম কাজ শুরু করেছে। অভিযানে বিভিন্ন বাসায় এডিসের লার্ভা ধ্বংস করা হয়েছে। প্রথম ধাপে বসতবাড়ির ভেতর ও এর আশেপাশে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে এসব বাড়ি চিহ্নিত করে সতর্ক করা হবে। তবে, পরের ধাপে অর্থাৎ শেষ দশ দিনে একই জায়গায় লার্ভা পাওয়া গেলে জরিমানা করা হবে বলেও জানা গেছে। এসব অভিযানের ফলে একদিকে যেমন মানুষ সচেতন হতে শুরু করেছে তেমনি ডেঙ্গুর প্রভাব কমতে শুরু করেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে দেশের সকল হাসপাতালের ডিরেক্টর, লাইন ডিরেক্টরদের উপস্থিতিতে, সিভিল সার্জন ও ইউএইচএসপিএদের সঙ্গে ডেঙ্গু নিয়ে এর প্রতিকার প্রতিরোধ ও এর ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর ফলে দেখা যাচ্ছে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমছে। ফলে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আশা বলছেন, সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং আপামর মানুষ সচেতনতার কারণে এ অর্জন সম্ভব হচ্ছে।
এদিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া অসচ্ছল পরিবারের পাশে দাঁড়াতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। জানা গেছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির পরিবারকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।