রবিবার , ডিসেম্বর ২৯ ২০২৪
নীড় পাতা / আইন-আদালত / সরকারি আইন সেবায় আপনার পাশে হটলাইন ১৬৪৩০

সরকারি আইন সেবায় আপনার পাশে হটলাইন ১৬৪৩০

মনি আক্তার (ছদ্মনাম) গ্রামে বসবাস করেন। সামান্য কিছু সম্পত্তি ছিলো। এক প্রভাবশালী নেতার কু-নজর পড়ে তাতে। তারপর এক প্রকার জোর করেই তা নামমাত্র কিছু টাকা দিয়ে দখল করে। গ্রাম সালিস বসলেও কোন ভাবেই প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না। মনি আক্তারের এত বেশি টাকাও নাই যে কোর্টে গিয়ে মামলায় লড়বে। একপ্রকার নিরুপায় হয়ে যান তিনি। 
পরে গ্রামের একজনের পরামর্শে সরকারি আইন সেবা “১৬৪৩০”এ ফোন করে সব জানান। পরের দিনই তার মামলা হাতে নেন সরকার। এবং মামলা শেষে ফিরিয়ে দেন তার জমি। 

এমন আইন সহায়তা বর্তমানে অনেকেই পাচ্ছেন। এটি সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতার ফলেই। 

২০১৩ সালে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসটির প্রথম অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিগ্যাল এইড কল সেন্টার ‘জাতীয় হেল্পলাইন’-এর উদ্বোধন করেন। এ হেল্পলাইনে ১৬৪৩০ নম্বরে ফোন করে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার মাধ্যমে জনগণ বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পাচ্ছেন।  

২০০৮ সালে সরকার গঠনের পর থেকেই আওয়ামী লীগ সরকার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রসার ও বিকাশের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ : ভিশন-২০২১’ প্রস্তাবনা করে। এবং ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষে কাজ করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি সেবাসমূহ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে দ্রুত জণগণের কাছে নিয়ে আশাই এর মূল উদ্দেশ্য। উন্নয়নের জন্য তথ্য প্রযুক্তি বা ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে শুধু কম্পিউটার নয়, এদেশের জনসংখ্যার এক বড় অংশের হাতে মোবাইল ফোন আছে, কাজেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সরকারি সেবার বার্তা দ্রুততম সময়ে জনগণের হাতের মুঠোয় নিয়ে আসা সম্ভব।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের অধীনে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা ‘সকল মানুষের বিচারে প্রবেশ অধিকার’ – এই সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় সরকারি অর্থায়নে আইনি পরামর্শ ও মামলা পরিচালনায় আইনগত সহায়তা দিয়ে আসছে। 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রাষ্ট্রের অসহায়, দরিদ্র ও সুবিধা-বঞ্চিত সকল মানুষদের এই সেবা প্রদান করার জন্য বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলায় জেলা লিগ্যাল এইড অফিস স্থাপন করা হয়েছে।

বর্তমান সরকার অসহায়, দরিদ্র, নির্যাতিত সকল শ্রেণীর মানুষের আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করে “আইনি সেবা” নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সম্পূর্ণ সরকারী অর্থায়নে “সরকারি আইনি সেবার মানোন্নয়নে সহায়তা প্রদান” প্রকল্পের আওতায় জাতীয় পর্যায়ে সম্পূর্ণ টোল ফ্রি একটি নম্বরের মাধ্যমে হেল্পলাইন সার্ভিস কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। এই টোল ফ্রি নম্বরটি হলো “১৬৪৩০”। 

এই শর্টকোড নম্বরটি নিয়ে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে একটি কল সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে।  গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৮ এপ্রিল ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ তারিখে সরকারি আইনগত সহায়তায় জাতীয় হেল্পলাইন কল সেন্টারটি উদ্বোধন করেছেন।

জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা ২০০৯ থেকে ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্ত ৬৪টি জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৭৮৮ জনকে মামলায় আর্থিক সহায়তা এবং ৬৯ হাজার ৮২২টি মামলা নিষ্পত্তি করেছে। কারাগারে আটককৃত ৪৪ হাজার ৫১৬ জনকে আইনগত সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি বিধিমালা-২০১৫ এর আওতায় জুলাই, ২০১৫ থেকে জুন, ২০১৭ পর্যন্ত ৩৯৮২টি প্রি-কেইস এবং ৬১২টি পোস্ট-কেইস মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এই সময়ে মোট= ৪,৬২,৯৬,৮১৩ (চার কোটি বাষট্টি লক্ষ ছিয়ানব্বই হাজার আটশত তের) টাকা এডি.আর. এর মাধ্যমে উপকারভোগীদেরকে আদায় করে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও জেলা লিগ্যাল এইড অফিস এবং সুপ্রীম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে মোহরানা-খোরপোষ, নাবালকের অভিভাবকত্ব, বিবাহ-বিচ্ছেদ, পারিবারিক কলহ, নারী ও শিশু নির্যাতন, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা, অপহরণ, ধর্ষণ, ভূমি বিরোধ, দলিল জালিয়াতি, ভুল রেকর্ড সংশোধন ইত্যাদি বিষয়ে ২৪,৬৭২ জনকে আইনি পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।

আরও দেখুন

পাখি ও বন্যপ্রাণি শিকারের তথ্য দিলেই উপহার! ১১ টি শালিক অবমুক্ত, পাখি রক্ষায় লিফলেট বিতরণ 

নিজস্ব প্রতিবেদক ,,,,,,,,,,,,,,,,,,চলনবিলে পাখি শিকার রোধ ও সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠন …