বৃহস্পতিবার , ডিসেম্বর ২৬ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / সম্ভাবনার নতুন দুয়ার

সম্ভাবনার নতুন দুয়ার

নিউজ ডেস্ক:
পদ্মা সেতুর পর শুরু হচ্ছে দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ প্রকল্প উন্মোচন হবে নতুন দিগন্তের

পদ্মা সেতু নির্মাণের সফল সমাপ্তির পর এবার ২৫০ কিলোমিটার দূরত্বের বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার। চট্টগ্রামের মীরসরাই থেকে টেকনাফ পর্যন্ত প্রায় আড়াইশ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ প্রকল্প শীগগিরই শুরু হচ্ছে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সড়ক নির্মাণ হলে এটি হবে পৃথিবীর দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ। এই সড়ক দেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। উন্মোচন হবে নতুন দিগন্তের। শুধু তাই নয়, বদলে যাবে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলীয় এলাকার আর্থ-সামাজিক চিত্রও। চলতি জুন মাসেই এর সম্ভাব্যতা যাচাই ও নকশা তৈরির প্রাথমিক কার্যক্রম শেষ হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট সূত্র। মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ার একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএমইটি ইন্টারন্যাশনাল (স্মেক) কাজ করছে। গত প্রায় এক বছর সময় ধরে সমীক্ষা পরিচালনা করে আসছে ওই পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি। জানা গেছে, প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে জোরারগঞ্জ থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত চার লেন মেরিন ড্রাইভের সমীক্ষা খুব শীগগিরই শেষ হচ্ছে। এর সাথে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিদ্যমান মেরিন ড্রাইভকে যুক্ত করে সর্বমোট মেরিন ড্রাইভের দূরত্ব দাঁড়াবে ২৬০ কিলোমিটার। আর এটি হবে পৃথিবীর দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ। যুক্ত করবে এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে।
এই মেরিন ড্রাইভের কাজ শেষ হলে দেশের সড়ক যোগাযোগ এবং পর্যটন অর্থনীতিতে বড় ধরনের ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, গত ১৭ নভেম্বর উক্ত প্রকল্পের ব্যাপারে কক্সবাজারে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রকল্পটির সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন সড়ক জনপথ বিভাগ চট্টগ্রাম অঞ্চলের একজন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী। প্রকল্পটির পিডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সমীক্ষা একেবারে শেষ পর্যায়ে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রকল্পটির ব্যাপারে তারা অগ্রসর হচ্ছেন। সমীক্ষা শেষে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নকশা প্রণয়ন করবে। এই নকশা পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে চার লেনের মেরিন ড্রাইভ নির্মিত হলেও ভবিষ্যতে সড়কটিকে ছয় লেনে উন্নীত করা যায় যত সুযোগ সুবিধা এখন থেকেই নিশ্চিত করা হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে এই প্রকল্প ব্যয় আনুমানিক পঁচিশ হাজার কোটি টাকা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র।
অভিজ্ঞ মহলের মতে মীরসরাইর জোরারগঞ্জ থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মিত হলে তা কেবল সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রেই নয়, প্রকল্পের এলাকার জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নত হবে। পাশাপাশি ওই অঞ্চলের মানুষের পেশায় ইতিবাচক পরিবর্তন হবে। পর্যটন ও নির্মাণ সেক্টরে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। দেশের পর্যটন অর্থনীতিতেও বড় ধরনের ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বদলে যাবে উপকূলীয় এলাকার মানুষের জীবন মান। বেড়ে যাবে ভূমি মূল্য, বিস্তীর্ণ ওই সড়ক ঘিরে গড়ে উঠবে নানা স্থাপনা ও কল কারখানা।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শাহে আরেফিন ইনকিলাবকে বলেন, প্রকল্পটি এখনো প্রাথমিক স্টেজে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘতম এই মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ করে বিশ্ব দরবারে দেশের পর্যটন সম্ভাবনাকে তুলে ধরতে চান। এই সড়কের দুই পাশে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম দুইটি বিমানবন্দর, অনেকগুলো মেগা প্রকল্প এবং মাতারবাড়ি বন্দরের কারণে এই সড়কের গুরুত্ব অনেক বেশী। বর্তমানে বিদ্যমান কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহা সড়কটি ওভার লোডেড হয়ে যাওয়ায় নতুন করে এটি চার লাইনের সড়ক করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যেই এর প্রক্রিয়া চলমান।
এছাড়াও দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভটি মীরসরাই থেকে কক্সবাজারের সাথে যুক্ত হলে মাতারবাড়ি বন্দর থেকেই দৈনিক ৬০ হাজার ভারী যানবাহন চলাচল করবে এই সড়ক দিয়ে। তিনি আরো বলেন, গত নভেম্বরে এর সমীক্ষা ও নকশা তৈরীর কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি সময় বাড়িয়ে চলতি জুন মাস পর্যন্ত সময় নিয়েছে। আশাকরা হচ্ছে এই সময়ের মধ্যে সমীক্ষা রিপোর্ট ও নকশা পাওয়া যাবে।

আরও দেখুন

বাগাতিপাড়ায় আগুনে পোড়া তিন পরিবার পেল সহায়তা

নিজস্ব প্রতিবেদক বাগাতিপাড়া,,,,,,,,,,,,,নাটোরের বাগাতিপাড়ায় আগুনে পুড়ে যাওয়া ৩টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে …