নিউজ ডেস্ক:
দেশের সব সিটি করপোরেশনকে নিজের আয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সিটি করপোরেশনগুলোকে প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে এবং আয় বুঝে ব্যয় করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সিটি করপোরেশনগুলো প্রায় অনুদাননির্ভর। প্রধানমন্ত্রী তাদের নিজেদের আয়ে চলতে ও আয় বুঝে ব্যয় করতে বলেছেন। আমরা আর সিটি করপোরেশনগুলোকে টানব না। তিনি বলেন, ‘ঢাকা সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনসহ দেশের সব সিটি করপোরেশনকে স্বাবলম্বী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। করপোরেশনগুলোকে যাতে নিজেদের অর্থে নিজেরাই চলতে পারে এ জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ হবে। পর্যায়ক্রমে সব কটি সিটি করপোরেশনকে স্বাবলম্বী হতে হবে।’
১১ প্রকল্প অনুমোদন : একনেক সভায় ৪ হাজার ৫৪১ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে ১১ প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্পূর্ণ অর্থ সরকারের তহবিল থেকে খরচ করা হবে। একনেক সভা শেষে ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। অনুমোদিত প্রকল্প হচ্ছে- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ‘হার পাওয়ার প্রকল্প : প্রযুক্তির সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন (২য় পর্যায়)’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের চারটি প্রকল্প যথাক্রমে ‘দুগ্ধ ঘাটতি উপজেলায় দুগ্ধ সমবায়ের কার্যক্রম সম্প্রসারণ’ প্রকল্প; ‘নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার জলাবদ্ধতা নিরসন’ প্রকল্প।
সনাতনী ও আধুনিক ওষুধের পাশাপাশি ব্যবহার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারে– প্রধানমন্ত্রী : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আধুনিক ওষুধের পাশাপাশি সনাতনী ওষুধ ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে পারস্পরিক স্বার্থে গ্লোবাল সেন্টারের সঙ্গে যৌথ মেডিকেল গবেষণার প্রস্তাব দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, যদি আধুনিক ওষুধের সঙ্গে সনাতনী ওষুধ ব্যবহার করা হয়, তবে আমরা এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ৩-এ উল্লিখিত সবার জন্য মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে আরও ভালো ফল আশা করতে পারি।’
ভারতের গুজরাটে এই প্রথম এ ধরনের গ্লোবাল সেন্টার ফর ট্রাডিশনাল মেডিসিন উদ্বোধন হলো। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. তেদ্রোস গেব্রিয়াসুস যৌথভাবে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন। সনাতনী ওষুধের সঙ্গে প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটিয়ে ও প্রমাণ নির্ভর গবেষণার মাধ্যমে সম্ভাবনার ক্ষেত্র তৈরি করাই এই সেন্টারের লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা মান নিয়ন্ত্রণ ও কারিকুলাম উন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোর ব্যাপারে গ্লোবাল সেন্টারের সঙ্গে অংশীদারিত্বে আগ্রহী। তিনি বলেন, ‘আমাদের পারস্পরিক স্বার্থেই আমরা যৌথ মেডিকেল গবেষণা প্রকল্পের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করব।’ শেখ হাসিনা বলেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী যে সনাতনী ওষুধের জন্য প্রমাণ-ভিত্তিক গবেষণা ও গুণগত মানের একটি বৈশ্বিক কেন্দ্র হিসেবে গ্লোবাল সেন্টার ফর ট্রাডিশনাল মেডিসিনের অভ্যুদয় ঘটবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সনাতনী ওষুধ সব সময়ই বাংলাদেশের ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হয়ে আছে। আমাদের সরকার ২০১১ সালে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতিতে সনাতনী ওষুধকে সন্নিবেশিত করেছে। আমরা এসডিজি-৩ অভীষ্ট অর্জনে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউনানী, আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক ওষুধ সেবার সম্ভাবনা ও অবদানকে স্বীকৃতি দিয়েছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সনাতনী চিকিৎসার ওপর ৭৩টি প্রতিষ্ঠান চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স করাচ্ছে এবং চারটি কলেজ এই চিকিৎসার ওপর স্নাতক ডিগ্রি দিচ্ছে। সনাতনী ওষুধ বিশেষজ্ঞ দ্বারা আউটপেশেন্টদের চিকিৎসাসেবা প্রদান ছাড়াও আমাদের অধিকাংশ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ঔষধি গাছের বাগান রয়েছে। তিনি বলেন, কভিড-১৯ মহামারি সুস্বাস্থ্য ও মানব কল্যাণ নিশ্চিতে সনাতনী চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। শেখ হাসিনা ভারতে কভিড-১৯ মহামারি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যাপক টিকাদানের জন্য নরেন্দ্র মোদির গতিশীল নেতৃত্বে ভারত সরকারের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশও সফলভাবে এই মহামারি নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং দেশের শতভাগ মানুষকে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দিয়েছে। দেশের ৯৭ শতাংশ মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।