নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশিদের ভিসা দেয়ার সংখ্যা বাড়ছে। ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাস প্রতিদিন অন্তত ৪ হাজার বাংলাদেশি কর্মীকে ভিসা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান। গেল ছয় মাসে প্রায় ৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মীর সউদীতে কর্মসংস্থান হয়েছে। সউদী কোম্পানিগুলো শান্তি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে আন্তরিক আগ্রহ প্রকাশ করছে। বাংলাদেশে ২০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা চলছে বলেও জানান রাষ্ট্রদূত। এটি দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সহায়তা করবে।
বাংলাদেশের জীবনযাত্রার মান ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সউদীর অবদানের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, এ দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সউদীর বিশাল অবদান আছে। রোববার রাতে রাজধানীর খিলক্ষেতস্থ একটি হোটেলে দেশটির ৯২ তম জাতীয় দিবস উপলক্ষে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি। অনুষ্ঠানে সউদী-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রæপের চেয়ারম্যান বিএইচ হারুন এমপি, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদারের্ছীনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল শাব্বির আহমদ মোমতাজী, ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং, জাপানি রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, হাবের সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, বিএমইটির মহাপরিচালক মো. শহিদুল আলম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চরমোনাই আলিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন দেশের ক‚টনীতিক, সেনাপ্রধান ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান বলেন, ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ ও সউদী আরবের মধ্যে ক‚টনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সউদী বাদশাহ ফয়সালের মধ্যেও একাধিক বার সাক্ষাতে দুই দেশের বন্ধুত্বের সূচনা হয়েছিল। বাংলাদেশ-সউদী আরব নানা ক্ষেত্রে একে অপরকে সহযোগিতা করে আসছে। বিশেষ করে সউদীর নেতৃত্বে সন্ত্রাসবিরোধী সামরিক জোটে বাংলাদেশ অংশ নিয়েছে। সউদী আরবে ২.৬ মিলিয়ন প্রবাসী বাংলাদেশি উভয় দেশের উন্নয়নে কাজ করছে। তারা প্রচুর রেমিট্যান্সও পাঠাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, তিনি বলেন, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক সম্পর্কের দৃঢ়তার ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ ও সউদীর মধ্যে গভীর ও অসাধারণ যোগাযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, বৈশ্বিক করোনা মহামারির পর গত বছর বাংলাদেশ থেকে ৬০ হাজার বাংলাদেশি সুন্দরভাবে পবিত্র হজ পালন করেছেন। সউদী আরব সব সময় বাংলাদেশের পাশে আছে এবং থাকবে, বিশেষ করে দুঃসময়ে। রাষ্ট্রদূত বলেন, ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সউদী সফর এবং বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের সঙ্গে তার সাক্ষাতের পর বাংলাদেশ ও সউদীর সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে। আগামী দিনে বাংলাদেশ ও সউদী আরবের মধ্যে সম্পর্ক আরও বাড়বে বলেও প্রত্যাশা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ও সউদী আরব এখন সম্পর্ক উপভোগ করছে। দুই দেশের বহুমুখী সম্পর্ক নতুন দিগন্তে প্রবেশ করেছে। উভয় দেশ একে অপরের উন্নয়নে অবদান রাখছে। আগামী দিনে উভয় দেশের দ্বিপক্ষীয় ও বহুমুখী সম্পর্ক আরও বিস্তৃত হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২৩ সেপ্টেম্বর ছিল সউদী আরবের জাতীয় দিবস। সউদী আরবের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে দিনটি পরিচিত। প্রতিবারের মতো এবারও সউদী আরব অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে ৯২তম জাতীয় দিবস উদযাপন করছে। এ উপলক্ষে ঢাকার সউদী দূতাবাস এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ১৯০২ সালের ১৫ জানুয়ারি সউদী আরবের প্রতিষ্ঠাতা বাদশাহ আব্দুল আজিজ আব্দুর রহমান আল সউদ এক যুদ্ধের মাধ্যমে তার পৈত্রিক শহর রিয়াদ দখল করেন। দীর্ঘ প্রায় ৩২ বছর সংগ্রামের পর ১৯৩২ সালের ২১ মে এক রাজকীয় ফরমানের মাধ্যমে আরবের বিভিন্ন অংশের একত্রিকরণের ঘোষণা দেয়া হয়। পরবর্তীতে একই বছর ২৩ সেপ্টেম্বর আধুনিক সউদী আরব গঠিত হয়। সেই থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর দিনটিকে সউদী আরবের জাতীয় দিবস হিসেবে গণ্য করা হয়।
আরও দেখুন
সিংড়ায় আগ্রহ বাড়ছে বস্তায় আদা চাষের
নিজস্ব প্রতিবেদক সিংড়ায় ,,,,,,,,,,,কম খরচে বেশি আয়ের আশায় পতিত জমিতে আদা চাষ শুরু করেছেন নাটোরের …