শনিবার , অক্টোবর ৫ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / সংকটে থাকা নন-এমপিও শিক্ষকরা পাচ্ছেন অনুদান

সংকটে থাকা নন-এমপিও শিক্ষকরা পাচ্ছেন অনুদান

নিউজ ডেস্ক:
কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান জানান, এই অনুদানের অংশ হিসেবে একজন শিক্ষক পাচ্ছেন ৫ হাজার এবং কর্মচারী আড়াই হাজার টাকা। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অনুদানের অর্থ ইতোমধ্যে চেক ও ‘নগদ’ হিসাবের মাধ্যমে বিতরণ শুরু হয়েছে।

করোনা মহামারিতে আর্থিকভাবে সংকটে থাকা নন-এমপিও শিক্ষক, কর্মচারীদের জন্য অনুদানের ব্যবস্থা করেছে সরকার। এই অনুদানের অংশ হিসেবে একজন শিক্ষক এককালীন পাচ্ছেন ৫ হাজার। প্রতি কর্মচারীকে দেয়া হচ্ছে আড়াই হাজার টাকা করে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুদানের এ অর্থ বিতরণ শুরু হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া অনুদানের অর্থ ইতোমধ্যে চেক ও ‘নগদ’ হিসাবের মাধ্যমে বিতরণ শুরু হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইতোমধ্যে শিক্ষক এবং কর্মচারীরা অনুদানের অর্থ পেতে শুরু করেছেন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি নন-এমপিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্তির মাধ্যমে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাই।’

অনুদানের অর্থ পাওয়া তেমনই একজন খুলনা আইডিয়াল কলেজের হিসাববিজ্ঞানের প্রভাষক মো. রেজাউল কবির। তিনি বলেন, ‘এই দুঃসময়ে অর্থসহায়তা দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ।’

উল্লেখ্য, গত ১২ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য প্রায় ৭৫ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন। কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সৃষ্ট পরিস্থিতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক সহায়তা দিতে প্রধানমন্ত্রী এ উদ্যোগ নিয়েছেন।

এ অনুদানের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগকে দেয়া হয়েছে ৪৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগকে ২৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

এ অনুদান পাবেন মোট ১ লাখ ৬৭ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী। এর মধ্যে সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১ লাখ ৫ হাজার ৭৮৫ জন শিক্ষক-কর্মচারী এবং কারিগরি শিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষা ও স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬১ হাজার ৪৪০ জন শিক্ষক-কর্মচারী।

করোনায় সংকটে ননএমপিও শিক্ষকরা

করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছেন ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। বেঁচে থাকার জন্য অনেক শিক্ষক-কর্মচারীই পেশা পরিবর্তন করছেন। কেউ কৃষিকাজ করছেন, কেউবা ভ্যান-ইজিবাইক চালাচ্ছেন, আবার কেউবা দোকানদারী করছেন। অনেক শিক্ষক-কর্মচারীই শহর ছেড়ে চলে গেছেন গ্রামে।

তেমনই একজন ফেনীর একটি বেসরকারী কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক নিউজবাংলাকে বলেন, করোনা শুরু হওয়ার পর কলেজ থেকে আর কোন টাকা দেয়া হয়নি। আমার পরিবারে সদস্য সংখ্যা ৫জন। আগে কলেজ থেকে বেতন না দিলেও টিউশনি করে চলতাম। কিন্তু করোনা শুরু হওয়ার পর টিউশনিও বন্ধ। চলবো কি করে বলেন?

তিনি আরও বলেন, জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে মুদির দোকান দিয়েছি। এ ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না।

এমপিও হলো মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার বা মাসিক বেতন আদেশ, যার মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করে সরকার। বেশির ভাগ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয়ে ঘাটতি থাকার কারণে শিক্ষকদের কাছে এমপিওভুক্তি একটি কাঙ্ক্ষিত বিষয়।

সর্বশেষ সরকার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করে ২০১৯ সালে। ওই বছরের ২৩ অক্টোবর ২ হাজার ৭৩০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। পরে চূড়ান্ত বাছাইয়ে ২ হাজার ৬১৫টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ছাড়পত্র পায়। এরপর আবার ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর ছয়টি এবং ১৪ নভেম্বর একটি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়।

দেশে এ পর্যন্ত এমপিওভুক্ত হয়েছে এমন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার। আর এমপিওভুক্ত হয়নি এখনও প্রায় ৭ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

দেশে করোনা শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। ভাইরাসের বিস্তার রোধে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। দফায় দফায় তা বাড়িয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত করা হয়।

আরও দেখুন

নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে বড়াইগ্রামে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত 

  নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষকের কন্ঠস্বর, শিক্ষায় একটি নতুন সামাজিক অঙ্গীকার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নাটোরের বড়াইগ্রামে …