নিজস্ব প্রতিবেদক, হিলি:
প্রায় চার মাস ধরে হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বোরহান উদ্দিন দায়িত্ব পালন না করে নানা তাল বাহানা করে সময় পার করছেন। তার দীর্ঘ সময় অনুপস্থিতিতে অফিসের কাজ কর্ম বেতন ভাতা নিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন কর্মচারীরা। তবে অনুপস্থিত থাকলেও প্রতিটি বিল ভাউচারে স্বাক্ষর রয়েছে ওই কর্মকর্তার। এদিকে অন্যান্য বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার কাজে নানা বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে।
কর্মকর্তা না থাকলেও বেতন ভাতা কি ভাবে হয় এমন কথা জানতে চাইলে অফিস সহকারী আশরাফুল আলম জানান, তার বাড়ী কুমিল্লা কিন্তু তিনি থাকেন ঢাকায়। তিনি প্রথম শ্রেনীর একজন অফিসার, আমি তার সম্পর্কে কিছইু বলতে পারবোনা। বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজকর্ম বিল ভাউচারের স্বাক্ষর করার ব্যপারে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন মাঝে মধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বোরহান উদ্দিন স্যার এসে কাগজ পত্রাদি স্বাক্ষর করে চলে যান। এক পর্যয়ে তিনি জোড় হাত করে বললেন, আমি যেন তাকে আর কোন প্রশ্ন না করি। কারণ বেশী কিছু বললে এতে করে তিনি চাকুরিটাও হারাতে পারেন।
অফিস সহকারী আশরাফুল আলম এর কথায়, মাঝে মধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বোরহান উদ্দিন উপজেলা পরিষদে যে আসেন, কিন্তু উপজেলা পরিষদের নৈশ্য প্রহরী থেকে উপজেলার কোন কর্মকর্তা বা কোন কর্মচারি জানেন না বা দেখেন নাই।
এ ব্যপারে হাকিমপুর উপজেলা একাডেমিক কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন জানান, আমাকে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ নির্দেশনা দিয়েছেন দাপ্তরিক কাজ সম্পাদন করার জন্য। আমি সেই মোতাবেক কাজ করে যাচ্ছি।
এব্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাফিউল আলম জানান, আনুমানিক প্রায় চার মাসাধিকাল মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বোরহান উদ্দিন তার অফিসে আসেন নাই। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস কালিন সরকারী কর্মকর্তাদের নিয়মিত অফিস করার প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনাও তিনি মানেননি। নির্বাহী অফিসার তাকে ফোনে কয়েকবার উপস্থিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন, তাতেও তিনি কর্ণপাত করেননি। তার অনুপস্থিতির কারণে বেশ কয়েকবার উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় রেজুলেশন নেয়া হয়েছে। এদিকে নির্বহী অফিসার তাকে শো-কোজও করেছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই ফলাফল আসেনি।
হাকিমপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ জানান, ওই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাকিমপুরে যোগদানের পন থেকে তিনি নিয়মিত অফিস করতেন না। এদিকে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে থেকে তিনি অফিসে আসেননি। এব্যপারে আমরা উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার রেজুলেশন নিয়েছি। এবং উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে জানাণো হয়েছে।
এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বোরহান উদ্দিনের সাথে বৃহস্পতিবার (০৪.০৬.২০) তারিখে বেলা ৩ টা ১০ মিনিটে আলাপ কালে সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে কোন কথা বলতে রাজি হননি। তিনি এখন ব্যস্ত আছেন, পরে কথা হবে এই কথা বলে ফোন কেটে দেন।
এব্যপারে জেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি বিষয়টি নিয়ে অবগত আছেন। তিনি তার দপ্তর থেকে শো-কোজ করেছেন তারও জবাব পাননি তিনি। তিনি বলেন, তিনি এ বিষয় নিয়ে হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়াম্যানের সাথে কথা বলেছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।