নিউজ ডেস্ক:
টানা ৬ বছর নির্বাসনে থেকে ১৯৮১ সালের এই দিনে পরিবারের সকল সদস্যকে হারানোর দুঃসহ বেদনা নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার সামনে একদিকে ছিল বহুধা বিভক্ত দলকে সংগঠিত করার চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে সেনাশাসনের কবল থেকে দেশের মানুষকে মুক্ত করাও ছিল তার অন্যতম লক্ষ্য।
১৯৮১ সালের ১৭ই মে। প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টি আর দুর্যোগ গতিরোধ করতে পারেনি তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে গণতন্ত্রকামী লাখ লাখ মানুষের মিছিলের। বিকেল ৪টায় দীর্ঘ ৬ বছর পর দেশের মাটিতে পা রাখেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। পরিবার হারানোর বেদনা নিয়ে দেশে ফিরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। তখনকার সামরিক সরকার বঙ্গবন্ধু কন্যাকে দেশে ফেরার অনুমতি দিলেও তার নিরাপত্তায় কোন ব্যবস্থাই নেয়নি। সেসময় আওয়ামী লীগের তরুণ কর্মীরাই শেখ হাসিনার জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।
সেদিন শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানানোর জন্য উপস্থিত প্রায় ১৫ লাখ মানুষের হৃদয় ছোঁয়া ভালবাসার জবাবে এদিন তিনি বলেন, ‘বাংলার মানুষের পাশে থেকে মুক্তির সংগ্রামে অংশ নেয়ার জন্য আমি দেশে এসেছি। আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসাবে, মেয়ে হিসাবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের কর্মী হিসাবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই।’
স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন দেশব্যাপী প্রতিবছর বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করলেও এবার করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে দিবস পালন করবে।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের চার দশক পূর্তি উপলক্ষে ‘শেখ হাসিনার চার দশক: বদলে যাওয়া বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটি। এই তথ্যচিত্র প্রদশর্নীর মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম এবং রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তাঁর নেতৃত্বে অপ্রতিরোধ্য গতিতে উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবে। দুইদিনব্যাপী (১৬ ও ১৭ মে) এই প্রদর্শনী ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বত্রিশ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে ১৭ মে সকাল ১১ টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং ১৭ মে বিকেল ৩ টায় মহানগর নাট্য মঞ্চে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা অনুষ্ঠান। এছাড়াও সারাদেশে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করা হবে।