নিউজ ডেস্ক:
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪১তম ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ মঙ্গলবার। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ১৯৮১ সালের ১৭ মে দীর্ঘ নির্বাসন শেষে তিনি বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং বিমানে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লী থেকে কোলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। এ সময় তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রবাসে থাকায় ঘাতকদের হাত থেকে রেহাই পান। পরবর্তী সময়ে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এরপরেই তিনি ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আজকের জনসভায় লাখো চেনামুখ আমি দেখছি। শুধু নেই আমার প্রিয় পিতা বঙ্গবন্ধু, মা আর ভাইয়েরা এবং আরো অনেক প্রিয়জন। শেখ হাসিনা বলেন, ভাই রাসেল আর কোনো দিন ফিরে আসবে না, আপা বলে ডাকবে না। সব হারিয়ে আজ আপনারাই আমার আপনজন।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে পরদিন ১৯৮১ সালের ১৮ মে দৈনিক ‘সংবাদ’ ‘লাখো জনতা অকৃপণ প্রাণঢালা অভ্যর্থনার মধ্যদিয়ে বরণ করে নেয় তাদের নেত্রীকে’ শিরোনামে লিখে, রাজধানী ঢাকা গতকাল (১৭ মে) মিছিলের শহরে পরিণত হয়েছিল। প্রচন্ড ঝড়বৃষ্টিও মিছিলের গতিরোধ করতে পারেনি। শ্লোগানেও ভাটা পড়েনি। লাখো কণ্ঠের শ্লোগান নগরীকে প্রকম্পিত করেছে।’
বেলা ৪টা ৩২ মিনিটে শেখ হাসিনা সিঁড়ি দিয়ে ট্রাকে নেমে আসেন। এই সময় লাখো জনতার কণ্ঠে ছিল গগন বিদারী শ্লোগান ‘হাসিনা তোমায় কথা দিলাম মুজিব হত্যার বদলা নেব।’ এ সময় অনেকের চোখে ছিল অশ্রুধারা। যখন তাকে মালা পরিয়ে দেয়া হয়, তখন শেখ হাসিনাও অঝোর ধারায় কাঁদছিলেন। এ সময় শেখ হাসিনার পরনে ছিল সাদা রঙের ওপর কালো ডোরাকাটা তাঁতের মোটা শাড়ী ও মাথায় ঘোমটা।
কুর্মিটোলা থেকে শেখ হাসিনার শেরেবাংলা নগরে এসে পৌঁছতে সময় লাগে ৩ ঘন্টা। এ সময় ঝড় বৃষ্টিতে নগর জীবন প্রায় বিপন্ন। রাস্তাঘাট স্বাভাবিক জীবন যখন ব্যাহত তখন এখানে অপেক্ষা করে কয়েক লাখ মানুষ। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় তিনি গণসংবর্ধনা মঞ্চে উপস্থিত হন।