ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ২৩টি অস্থায়ী পশুরহাটে আজ বুধবার পশু কেনাবেচা শুরু হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় ১৪টি এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় বসবে ৯টি পশুরহাট। একই সঙ্গে গাবতলীর স্থায়ী পশুরহাটেও চলবে কোরবানির পশু বেচাকেনা। এবার ইজারার রাজস্ব আদায়ে এগিয়ে আছে ডিএনসিসি। সংস্থাটির নয়টি হাট থেকে দরপত্রের সর্বোচ্চ মূল্য পেয়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৯৩ হাজার ৭৮৬ টাকা। আর ডিএসসিসির ১৪টির মধ্যে ১২টি হাটের দরপত্রে সর্বোচ্চ মূল্য পেয়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৮ কোটি ৮৭ লাখ ৫২ হাজার ৮৪১ টাকা। ডিএসসিসির দুটি হাটে কাঙ্খিত দর মেলেনি। ১৪টি হাটের সর্বনিন্ম দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল ৭ কোটি ৮৯ হাজার ৭০৪ টাকা, যা গত বছরের ১৩টি হাটের দরপত্রের তুলনায় প্রায় ৪ কোটি টাকা কম।
ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন জানান, ক্রেতাদের সঙ্গে অসৌজন্য আচরণ করা হলে ইজারাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে অন্য বছরের তুলনায় এবার বেশি গরু এসেছে। গাবতলী হাটের ইজারাদাররা জোর করে ব্যবসায়িদের গরু হাটে রাখতে বাধ্য করছে। হাটে গরু বিক্রি করতে আসা একাধিক ব্যবসায়ি জানান, আমরা সায়েদাবাদের আশপাশের হাটে গরু নিয়ে যেতাম। কিন্তু আমাদের ট্রাক থামিয়ে গরু নামিয়ে নেয়া হয়েছে।
দেশের উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা হবার কারণে খামারিরা ঢাকায় গরু নিয়ে আসা শুরু করেছে। এ কারণেই পশুর হাটগুলোতে প্রতিদিনই শত শত ট্রাক কোরবানির গরু আসতে শুরু করেছে। হাটে পছন্দ মতো জায়গা দখল, আর পশুর বাড়তি যত্ন নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন গরু ব্যবসায়ীরা।
ডিএসসিসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, এবার কাঙ্খিত সর্বোচ্চ দর পাওয়া গেছে। সেগুলো ইজারা দেওয়া হয়ে গেছে। ইজারাদার না পাওয়া গেলে শেষ পর্যন্ত সিটি করপোরেশন নিজেরাই হাসিল আদায় করতে পারে বলেও জানান তিনি।
উত্তর সিটি করপোরেশনের ভাটারা সাঈদ নগর হাটে, প্রায় তিন হাজার গরু মজুদ করা হযেছে। হাট প্রস্তুতির অংশ হিসেবে কোরবানির পশু রাখার জন্য খুঁটি দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে। হাটের ইজারাদার ইকবাল হোসেন খন্দকার বলেন, বুধবার থেকে বিক্রি শুরু হবে। সারাক্ষণ মাইকিং করা হচ্ছে। ব্যাপারিদের ডেঙ্গু সচেতন করা হচ্ছে। অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টির ব্যাপারে সচেতন করা হচ্ছে। বেপারিরা এসে কোথায় গরু রাখবেন তা আগেই নির্ধারণ করা হয়েছে। যে আগে আসছে সে ভাল জায়গা নিয়ে বসছে। তবে যত গরুই আসুক কোন সমস্যা হবে না।
আফতাবনগর গরুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, এই হাটে সাতক্ষীরা, যশোর, কুষ্টিয়া, পাবনা, মেহেরপুর, রংপুর ও দিনাজপুর থেকে গরু এসেছে। চারদিকে সারিবদ্ধভাবে লাগানো হয়েছে বাঁশের খুঁঁটি। খুঁটির সঙ্গে বাঁধা বাঁশ। উঁচু-নিচু মাটি সমান করা হয়েছে বালু বা ইটের খোঁয়া দিয়ে। হাসিল টাওয়ার ও নিরাপত্তা বলয়ের জন্য ওয়াচ টাওয়ারও বসানো হয়েছে।
ডিএসসিসি এলাকায় অস্থায়ী পশুর হাটগুলো হচ্ছে, উত্তর শাহজাহানপুরের মৈত্রী সংঘ মাঠ, জিগাতলা হাজারীবাগ মাঠ, লালবাগের রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ, কামরাঙ্গীরচর চেয়ারম্যান বাড়ি মোড়, পোস্তগোলা শ্মশানঘাট, শ্যামপুর বালুর মাঠ, মেরাদিয়া বাজার, ৩২ নম্বর ওয়ার্ড শামসাবাদ মাঠ, গোপীবাগ বালুর মাঠ ও কমলাপুর স্টেডিয়াম এলাকা, দনিয়া মাঠ, ধূপখোলা মাঠ, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউয়ারটেক মাঠ, আফতাব নগর ইস্টার্ন হাউজিং এবং আমুলিয়া মডেল টাউন।