নিউজ ডেস্ক:
দেশের ১২-১৭ বছর বয়সী স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের টিকা দেবে সরকার। আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে অথবা আগামী সপ্তাহের শুরুতে এ টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে। প্রথম দিন পরীক্ষামূলকভাবে ৫০-১০০ শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হবে। তাদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে পুরো টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে।
প্রথম দফায় শুধু ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের ১৯ জেলায় টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পরে পর্যায়ক্রমে আরও সাত জেলা বাড়িয়ে ২৬ জেলার শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনা হবে। টিকা পাবে ৩০ লাখ শিক্ষার্থী।
গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম রাজধানীর এক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার তথ্য জানান। তিনি বলেন, চলতি সপ্তাহে পরীক্ষামূলকভাবে ৫০-১০০ জনকে টিকা দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে। পরে ব্যাপক আকারে টিকা দেওয়া হবে। ফাইজারের টিকা পাবে শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিকভাবে রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কয়েকটি কেন্দ্রে এ টিকা দেওয়া হবে। পরের সপ্তাহে ব্যাপকহারে ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের ১৯ জেলায় দেওয়া হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে ২৬ জেলায় শিক্ষার্থীরা ফাইজারের টিকা পাবে। এজন্য আট শতাধিক নার্স নিয়োজিত থাকবেন।
অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আরও জানান, নির্দিষ্ট জেলাগুলোতে ইতিমধ্যেই টিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণও দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নিবন্ধনের জন্য স্কুল-কলেজ থেকে শিক্ষার্থীদের তালিকা এনে তাদের তথ্য সুরক্ষা ওয়েবসাইটে যুক্ত করা হবে। যাদের জন্ম নিবন্ধন সনদ রয়েছে, তাদেরই টিকা দেওয়া হবে। শিশুদের টিকা কেন্দ্র আলাদা হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে আগামী তিন মাসে আরও ২ কোটি ৯৬ লাখ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা আসছে। এর মধ্যে ২৫ অক্টোবরের মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ, ২৯ নভেম্বরের মধ্যে ১ কোটি ২৬ লাখ ডোজ এবং ২৭ ডিসেম্বরের মধ্যে আসবে ১ কোটি ২০ লাখ ডোজ। ইতিমধ্যে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কভিশিল্ডের বাকি চালানও আসতে শুরু করেছে। আগামী নভেম্বরের পর আরও ছয় কোটি টিকা ও সিরিঞ্জ কেনারও প্রস্তুতি চলছে।
অধিদপ্তরের টিকার তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কভিশিল্ড এসেছে ১ কোটি ৪৩ লাখ ২৭ হাজার ৮৬০ ডোজ। এর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৩২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৯৯ জনকে। বর্তমানে কভিশিল্ড মজুদ আছে ১০ লাখ ৭৭ হাজার ৯৬১ ডোজ। এ পর্যন্ত ফাইজারের টিকা এসেছে ৬১ লাখ ২১ হাজার ৪৪০ ডোজ। যা দেওয়া হয়েছে ৩ লাখ ১৭ হাজার ৫০২ ডোজ। মজুদ রয়েছে ৫৮ লাখ ৩ হাজার ৯৩৮ ডোজ। মডার্নার টিকা এসেছে ৫৫ লাখ ৬০ ডোজ। এ পর্যন্ত প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ৫১ লাখ ৮৮ হাজার ৬৭৩ জনকে। মজুদ রয়েছে ৩ লাখ ১১ হাজার ৩৮৭ ডোজ। সিনোফার্মের টিকা এসেছে ৪ কোটি ৬০ লাখ ৭১ হাজার ৬০০ ডোজ। প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলে এ পর্যন্ত এই টিকা দেওয়া হয়েছে ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৫২ হাজার ১৩২ ডোজ।