নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশে ৬৫ শতাংশ নারী তাদের শিশু ও নবজাতকদের পাঁচ মাস বয়স পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ খাওয়ান। এ হার বাংলাদেশসহ বিশ্বের আট দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে বাংলাদেশে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর অগ্রগতিতে বাধা ফর্মুলা দুধের আগ্রাসী বিপণন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফের) এক জরিপ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। আজ বুধবার ইউনিসেফের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ জরিপ সম্পর্কে জানানো হয়।
বাংলাদেশ ছাড়া অন্য দেশগুলো হলো চীন, মেপিকো, মরক্কো, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্য ও ভিয়েতনাম। এসব দেশের বিভিন্ন শহরের সাড়ে ৮ হাজার মা-বাবা ও অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং ৩০০ স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর পরিচালিত হয় এ জরিপ। জরিপের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে যত নারী জরিপে অংশ নিয়েছেন তাদের মধ্যে ৮৪ শতাংশ, ভিয়েতনামে জরিপে অংশগ্রহণকারী নারীদের ৯২ শতাংশ এবং চীনে জরিপে অংশগ্রহণকারী নারীদের ৯৭ শতাংশ এমন ফর্মুলা দুধের বিপণন ব্যবস্থার শিকার হয়েছেন। এ পরিস্থিতি তাদের ফর্মুলা খাবার বেছে নেওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশে ৬৫ শতাংশ নারী তাদের শিশু ও নবজাতকদের পাঁচ মাস বয়স পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ খাওয়ান। এটি জরিপ করা দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ হার; যদিও অন্য দেশের নারীদের তুলনায় বাংলাদেশের নারীরা ফর্মুলা দুধের প্রথাগত বিপণনের শিকার কম হন। তবে এ ধরনের বিপণন কার্যক্রম এতটাই শক্তিশালী যে চিকিৎসক ও অনেক স্বাস্থ্যকর্মী পর্যন্ত বুকের দুধকে অপর্যাপ্ত বলে মনে করেন। ফলস্বরূপ, বাংলাদেশে প্রসবপরবর্তী অবস্থায় প্রায় ৬০ শতাংশ নারীকেই ফর্মুলা দুধ ব্যবহারের পরামর্শ দেন স্বাস্থ্যকর্মীরা; যদিও এই নারীদের ৯৮ শতাংশের মধ্যেই তাদের শিশুকে শুধু বুকের দুধ খাওয়ানোর প্রবল ইচ্ছা রয়েছে। কিন্তু মাত্র ৬৫ শতাংশ নারী নবজাতকদের শুধু বুকের দুধ খাওয়ান।
ইউনিসেফ বাংলাদেশের উপপ্রতিনিধি ভিরা মেন্ডনকা বলেন, বাংলাদেশের সিংহভাগ নারী শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে চান। তবে তারা প্রায়ই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সমর্থন পান না। ফর্মুলা দুধ বিপণনের বার্তাগুলো ভয় ও সন্দেহের বীজ বপন করে। মুনাফা নয়, বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য নিশ্চিত করার মাধ্যমে মায়েদের এ অবস্থা থেকে কাটিয়ে ওঠা যেতে পারে।