নিউজ ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গেল বছর মার্চ মাস থেকেই বন্ধ রয়েছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। কয়েক দফায় তারিখ ঘোষণা করেও খোলা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে শিক্ষার্থীদের করোনা প্রতিরোধী টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। টিকা দেওয়া শেষ হলে অল্প সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও অনলাইনে পাঠদান চালু আছে, ভবিষ্যতে অনলাইন শিক্ষা পদ্ধতিকে আরও উন্নত করতে কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) রাতে মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রসায়ন বিভাগের আয়োজনে ‘জাতি গঠনে শিক্ষার ভূমিকা: বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন ও বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ১২ দিনের মাথায় টেলিভিশনে ক্লাস শুরু করা হয়েছে। অনলাইন ক্লাস অস্বীকার করার সুযোগ নেই। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের পাশাপাশি অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমেও গুরুত্ব দিতে হবে। যেটি আমাদের শুরু করতে আরও কয়েক বছর লেগে যেত, করোনার কারণে তা আমরা এখনই শুরু করে ফেলেছি।
বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শনকে যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে ডা. দীপু মনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা, ইউজিসি সক্ষমতা আইন, শিক্ষা কমিশন নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন। যাতে করে শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা নিয়ে কারও কোনও প্রশ্ন না থাকে। বর্তমানে শিক্ষার মূলনীতিগুলো হলো মূল্যবোধ, নৈতিকতা, দক্ষতা। শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে আমরা এখন কাজ করছি। সেজন্যে বিনামূল্যে বই দেওয়া, সাক্ষরতা হার বৃদ্ধি, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা, শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ, কারিগরি শিক্ষা, শিক্ষক প্রশিক্ষণ দেওয়া নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
কারিগরি শিক্ষার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল তৈরি হচ্ছে। এগুলো থেকে প্রদত্ত ডিগ্রির সার্টিফিকেট গুলো সমমানের প্রতিষ্ঠানে কাজে লাগাতে পারে সে চেষ্টা চলছে। আইসিটি স্কিল, ভাষার শিক্ষা, বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার নিয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিদেশি ভাষা এখন টুল হয়ে গেছে। কমিউনিকেশন স্কিল, কোলাবোরেশান স্কিল, ক্রিটিকাল থিংকিং স্কিলগুলো অর্জন করা প্রয়োজন।
জ্ঞানের প্রয়োগিক দিকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দক্ষ মানুষ হওয়ার পাশাপাশি আমাদের মানবিক মানুষ হতে হবে। শিক্ষার্থীদের শুধু জ্ঞান অর্জন করার সহায়তা করলে হবে না। তাদের চাকরির জন্যে উপযুক্ত করে তুলতে হবে। সেজন্যে শিক্ষকদের আরও মনোযোগী হতে হবে।
রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. সুব্রত চন্দ্র রায় ও সহযোগী অধ্যাপক নাফিস আহমদের সঞ্চলনায় ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক। প্রধান আলোচক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শামছুন নাহার। এছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম।