শুক্রবার , নভেম্বর ১৫ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে জেলায় জেলায় কেন্দ্র

শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে জেলায় জেলায় কেন্দ্র

নিউজ ডেস্ক:
মধ্য অক্টোবর খুলবে বিশ্ববিদ্যালয়

· স্কুল-কলেজ খোলা নির্ভর করছে সংক্রমণ পরিস্থিতির ওপর

· চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ১ সেপ্টেম্বর ফের কারিগরি কমিটির সঙ্গে বৈঠক

করোনার কারণে দীর্ঘ ১৮ মাস ধরে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরেক দফা বাড়িয়ে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর করা হয়েছে। তবে ছুটি আরও বাড়বে। ১৮ বছরের ওপরের সব শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কর্মচারীদের আগামী মাসের মধ্যে টিকাদান শেষ করে মধ্য অক্টোবরে খুলবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। করোনার সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের নিচে নামলেই প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে চায় শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয়।

তবে এ সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির মতামতের ওপর। 

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। প্রতিদিন অনলাইনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো মনিটরিং করবে মন্ত্রণালয়। তবে ১২ বছর পর্যন্ত বয়সের শিক্ষার্থীদের ফেসশিল্ড ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। দেশের বাস্তবতায় এটি পালন করা কঠিন। যে কারণে কারিগরি কমিটির সঙ্গে আগামী বুধবার ( ১ সেপ্টেম্বর) ফের সভা করে সিদ্ধান্ত নেবে। একই সভায় সংক্রমণের হার কত শতাংশ হলে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হবে সেটি ঠিক করা হবে। ১৮ বছরের ওপরের শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করতে জেলায় জেলায় কেন্দ্র খোলা হবে।

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ে এক ভার্চুয়াল সভায় এসব আলোচনা হয়েছে বলে সভা সূত্রে জানা গেছে।    

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপির সভাপতিত্বে সভায় যুক্ত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব গোলাম হাসিবুল আলম, কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেনসহ স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিনিধি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং  প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দফতর সংস্থার প্রতিনিধি, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানরা।

বুধবার ফের সভা
সংক্রমণের হার কত শতাংশ হলে প্রাথমিক  থেকে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে এবং ১২ বছরের নিচের শিক্ষার্থীদের মাস্ক না ফেসশিল্ড পরবে- এই দুটি বিষয় চূড়ান্ত করতে আগামী বুধবার সভায় বসবে আন্তঃমন্ত্রণালয়। পরদিন সরকারের সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে।

জেলায় জেলায় টিকা কেন্দ্র
দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার লক্ষ্যে জেলায় জেলায় কেবল ১৮ বছরের ওপরের শিক্ষার্থীদের জন্য টিকাদান কেন্দ্র করা হবে। এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আলাপ হয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হলে উপজেলা পর্যায় টিকা কেন্দ্র করা হবে বৈঠকে এ তথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী। সভায় মন্ত্রী বলেন, আগামী মাসের মধ্যে শতভাগ শিক্ষক-কর্মচারীদের টিকা নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ কারণে কেউ টিকা নিতে না পারলে তা মন্ত্রণালয়কে জানতে হবে।

মধ্য অক্টোবরে খুলবে বিশ্ববিদ্যালয়
সভার শুরুতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দেন। সভা সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শিরিন আক্তার জানান, তার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব শিক্ষক করোনার টিকা নিয়েছেন। এছাড়া হলে থাকা শিক্ষার্থীরাও করোনা টিকার দুটি ডোজ নিয়েছেন। তাই সেপ্টেম্বর থেকে হল খোলার আহ্বান জানান তিনি। আর দ্রুত সময়ের মধ্যে টিকা কার্যক্রম শেষ করে হল খুলে দেওয়ার প্রস্তাব করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। এছাড়াও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাও হল খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দেন।

ভিসিদের আলোচনা শেষে ইউজিসি চেয়ারম্যান ড. কাজী শহীদুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে জানতে চান শিক্ষামন্ত্রীর কাছে। তখন তিনি বলেন, কত জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছেন, কতজন টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন, আর কতজন এক ডোজ নিয়েছেন- এসব তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউজিসির কাছে থাকতে হবে।

আর খোলার পর মাস্ক ব্যবহার, স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনসহ আনুষঙ্গিক নিয়ম পালন করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ১৮ বছরের ওপরের যেসব শিক্ষার্থীর টিকা দেওয়া হয়নি তাদের তালিকা করে আগামী সাত দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরে পাঠাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। আর যাদের এনআইডি নেই তাদের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। মন্ত্রণালয় এনআইডি করে দেওয়ার চেষ্টা করবে।

যদি সম্ভব না হয় তাহলে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নিয়ে টিকা দেওয়ার চেষ্টা করবে। মন্ত্রী আরও বলেন, আগামী মাসের ১২ তারিখ গণটিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শেষ হবে। এই সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের অনেকের দ্বিতীয় ডোজ, কারও প্রথম ডোজ নেওয়া শেষ হবে। এরপর ১৫ দিন ইউমিনিটি তৈরির জন্য সময় দিতে হবে। তারপর মধ্য অক্টোবর থেকে ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে।

স্কুল-কলেজ খোলা নির্ভর করছে সংক্রমণ পরিস্থিতির ওপর
নাম প্রকাশ না করে বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা জানান, বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেশিদিন বন্ধ রাখার সুযোগ নেই। স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের চাপ রয়েছে, খুলেও আবার আক্রান্তের আশঙ্কা রয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের নিচে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায়। আমাদের দেশের বাস্তবতায় আক্রান্তের হার ১০ শতাংশের নিচে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে চাই। মন্ত্রীর এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, এ প্রস্তাব আমাদের কাছে লিখিতভাবে জানালে কমিটি আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত জানাবে। তখন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী রোব-সোমবারের মধ্যে আমরা লিখিতভাবে জানাবো। ১২ বছর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ফেসশিল্ডের পরিবর্তে মাস্ক ব্যবহার করা যায় কিনা এসব বিষয়ে কারিগরি কমিটির সঙ্গে প্রাথমিক গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রীকে নিয়ে সভা করে সিদ্ধান্ত নেব।

খোলার পরের পরিকল্পনা
স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার পর কীভাবে ক্লাস পরিচালনা করা হবে সে বিষয়ে সভায় শিক্ষামন্ত্রী জানান, আগের ঘোষণা অনুযায়ী এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সপ্তাহে ছয় দিন করে ক্লাস নেওয়া হবে। অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীদের প্রথম ধাপে একদিন করে ক্লাস নেওয়া হবে। একটি ক্লাসের শিক্ষার্থীরা তিনটি কক্ষে বসবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে তাদের সপ্তাহে দুই দিন করে ক্লাস নেওয়া হবে। তাদের স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে চলতে হবে।

মাস্ক পরা, ক্লাসে ঢোকার সময়ে শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার একটি গাইড লাইন আগামী সপ্তাহের মধ্যে ঠিক করা হবে। মন্ত্রীর বক্তব্যের কারিগরি কমিটি একজন সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে কিনা তা তদারকি করার জন্য একটি সেল গঠনের পরামর্শ দেন। তার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে কোনো ছাড়া দেওয়া হবে না। প্রতিদিন অনলাইনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে কিনা তা মনিটরিং করা হবে। প্রতিদিন মন্ত্রণালয়ে তথ্য পাঠাতে হবে। 

জানা গেছে, বৈঠকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন প্রতিনিধি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ১২ বছরের নিচের শিক্ষার্থীদের মাস্কের পরিবর্তে ফেসশিল্ড পরার কথা বলেন। বিশেষ করে ৫ থেকে ১২বছরের শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করার কথা বলেন তিনি। কিন্তু শহরের বাইরে সারাদেশে গ্রামে-গঞ্জে সেটা নিশ্চিত করা কতটা সম্ভব হবে- এসব ভাবা জরুরি বলে শিক্ষামন্ত্রী বৈঠকে বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি
২০২১ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্ন ছাপার বিষয়ে গতকাল বোর্ড চেয়ারম্যানদের নিয়ে বিজিপ্রেসে সভা হয়েছে। শনিবার ঢাকা বোর্ডে লটারির মাধ্যমে প্রশ্নের সেটা নির্ধারণ করে ছাপা শুরু হবে।

আরও দেখুন

রাণীনগরে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে মারপিট করে  ১৫ভরি স্বর্ণের ও 

১০০ভরি চান্দির গহনা ছিনতাই নিজস্ব প্রতিবেদক রাণীনগর,,,,,,,,,,  নওগাঁর রাণীনগরে দোকান থেকে বাড়ী ফেরার  পথে পথ …