নিউজ ডেস্ক:
ধর্মীয়, রাজনৈতিক আবেদনের উর্ধ্বে অনন্য এক স্থাপত্য নিদর্শন হয়ে রয়েছে লালমনিরহাটের একই আঙ্গিনায় মসজিদ ও মন্দির। শতাধিক বছর ধরে মসজিদ ও মন্দিরটি দুই ধর্মের সহাবস্থানের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শহরের কালিবাড়ী পুরানবাজার এলাকায় ধর্মীয় সম্প্রীতির এই নিদর্শনের অবস্থান। পুরান বাজার জামে মসজিদের দেয়াল ঘেঁষেই কালীবাড়ি মন্দির। এক পাশে মুসলিমরা নামাজ পড়ে আর অন্যপাশে হিন্দুরা পূজা করেন। এমনকি মসজিদ ও মন্দিরের সামনের খোলা জায়গায় মুসলমানরা জানাজার নমাজ আর হিন্দুরা পূজার মেলার আয়োজন করে থাকে। এ যেন ধূপকাঠি ও আতরের সুগন্ধির মিলনমেলা।
সম্প্রতি লালমনিরহাটে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে আসেন নেপালের রাষ্ট্রদূত শ্রী ঘনশ্যাম ভান্ডারী। তিনি বলেন, একই আঙ্গিনায় মসজিদ মন্দির দেখে তিনি অভিভূত ও বিস্মিত হয়েছেন। বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। এই ধরনের দৃষ্টান্ত খুবই কম।
কালীবাড়ী এলাকার ব্যবসায়ী ও পুরানবাজার জামে মসজিদের সহ-সভাপতি হাজী আব্দুল বাতেন জানান, ১৯১৫ সালের দিকে এই মসজিদ নির্মিত হয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন দুর্গাপূজাসহ অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও মুসলমানরা মসজিদে নামাজ আদায় করে আসছেন। এটি ধর্মীয় সম্প্রীতির এক বড় উদাহরণ।
পুরান বাজার জামে মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ইসলাম ধর্মের এটাই সৌন্দর্য। তারা তাদের ধর্ম পালন করে, আমরা আমাদেরটা করি। নামাজের সময় মন্দিরের ঢাক-ঢোল বন্ধ রাখা হয়। একই আঙ্গিনায় মন্দির মসজিদের অবস্থান ধর্মীয় সম্প্রীতির বন্ধনকে দৃঢ় করেছে।
কেন্দ্রীয় কালীবাড়ী মন্দিরের সভাপতি ও প্রধান পুরোহিত শংকর চক্রবর্তী জানান, মন্দিরের নামানুসারে এলাকার নামকরন হয় কালীবাড়ী। পরে এখানে বাজার গড়ে উঠলে বাজারের ব্যবসায়ী ও শহরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মন্দিরের পাশেই প্রতিষ্ঠা করেন পুরান বাজার জামে মসজিদ। সেই থেকে এক উঠানে চলছে দুই ধর্মের দুই উপাসনালয়ের কার্যক্রম।
লালমনিরহাটে সদ্য যোগদানকারী পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, সম্প্রীতির এই বন্ধন দেখে তিনি নিজেও অভিভূত। পূজাকে ঘিরে মন্দিরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।