শনিবার , সেপ্টেম্বর ২৮ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / লুটকারীদের হাতে প্রথম শহীদ জ্ঞানেন্দ্রনাথ তরফদার

লুটকারীদের হাতে প্রথম শহীদ জ্ঞানেন্দ্রনাথ তরফদার

হামিদুর রহমান মিঞা:
উনিশ’শ একাত্তর সালে পাক বাহিনীরা অগনিত মানুষকে হত্যা করার সাথে সাথে বাড়িঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। শহর এলাকার মানুষজন আশ্রয়হীন হয়ে প্রাণ বাঁচাতে গ্রামাঞ্চলে ছুটে চলেছে। এদিকে এদেশীয় কিছু লুটকারী ছুটে চলা মানুষদের পথরোধ করে সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে। সারাদেশেই আগুনের লেলিহান অন্যদিকে স্বজনহারাদের আর্তচিৎকারে যেন আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছিল। সেই দুর্দিনেও কিছু নরপিশাচ লুটতরাজে উন্মত্ত ছিল।

নাটোরের পিপরুল ইউনিয়নের বৃহত্তর ৩ নং ওয়ার্ডের রায়সিংহপুরে অনেক কাপালী সম্প্রদায়ের লোক বাস করত। যখন চাবিদিকে লুটতরাজ চলছে তখন সেখানকার লোকজন ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছিল। মে মাসের শেষের দিকে আনুমানিক রাত ১১ এগারটার সময় কাপালী হিন্দুদের বাড়ির আশেপাশে কিছু চিহ্নিত দুষ্কৃতকারীদের আনাগোনা লক্ষ করা যায়।

বাড়ির মুরুব্বী জ্ঞানেন্দ্রনাথ তরফদার তার ছেলে শান্তি কুমার মাস্টার ও নিতাই মাস্টার সহ সবাইকে বাড়ির পশ্চিম প্রান্তে কালী মন্দির এর ওদিকে পালাতে বলে। ছেলেরা তখন উনাকে বলে তুমিও চল আমাদের সাথে। কিন্তু বৃদ্ধ জ্ঞানেন্দ্র বলে ওরা আমাকে কিছু বলবেনা তোরা তাড়াতাড়ি পালা। পালানোর কিছুক্ষণ পরেই দশ বারোজন লোক মুখোশ পরিহিত অবস্থায় বাড়িতে প্রবেশ করে। সেখানে নিতাই মাস্টারের মা তাদের পরিচয় জানতে চাইলে মুখোশধারীরা বৃদ্ধাকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। তারপর জ্ঞানেন্দ্র তরফদারকে জোর করে উঠায় নিয়ে যায়।

বাড়ির উত্তরে পাটক্ষেতের মধ্যে নিয়ে গিয়ে তাকে বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র দ্বারা কুপিয়ে হত্যা করে। যখন জ্ঞানেন্দ্রকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে তখন তার ভাতিজা নারায়ন চন্দ্র তাদের পিছু নেয়। নারায়ন তার জ্যেঠা মশায়ের লাশের নিকট গিয়ে চিৎকার দিয়ে বলে তোমরা কে কোথায় আছ? তারাতারি এদিকে এসো জ্যেঠা মশাই আর নাই! মাঠের মধ্যে যারা ছিল সবাই দৌড়ে এসে দেখে তাদের মুরুব্বীকে হত্যা করছে তাদেরই আশপাশের মানুষগুলো। তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা করলেও অদ্যাবধী কেউ মুখ খুলে প্রকাশ করেনা।

তবে বড়বাড়ি ও নগর মাঝগ্রামের মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের নাম বলেছে। তাদের মধ্যে একজন প্রধান শিক্ষকের ভাগিনা যে নাকি রাজাকারও হয়েছিল। অবশিষ্টরা পরবর্তীতে চুরি ডাকাতির সাথে জড়িত ছিল। যারা বিল হালতী ত্রিমোহনী ডাঙ্গাপাড়া কলেজের রাস্তায় যাতায়াত করেন দেখবেন রাস্তার পশ্চিম অংশে একটা সমাধী আছে সেটাই জ্ঞানেন্দ্রনাথের।

আরও দেখুন

মহানবীকে নিয়ে কটুক্তি করায় প্রতিবাদে নন্দীগ্রাম ওলমা পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল 

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) কে নিয়ে ভারতের মহারাষ্ট্রে হিন্দু পুরোহিতের কটুক্তির প্রতিবাদে বগুড়ার …