নিউজ ডেস্ক:
রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচন ঘিরে প্রচারে জোর দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের পক্ষে প্রচারে নেমেছে আওয়ামী লীগ। আর সর্বশেষ এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে সমর্থন দিয়ে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজশাহীর ১৪ দল। মঙ্গলবার রাতে রাজশাহী নগরীর রানীবাজারে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাসিক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলের সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত ও ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ও উপ-কমিটি গঠনের বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
১৪ দল রাজশাহীর সমন্বয়ক ও রাসিক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-২ (সদর) আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য বেগম আখতার জাহান, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, জাসদ রাজশাহী মহানগর সভাপতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী, সাধারণ সম্পাদক আমিরুল কবির বাবু, মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামাণিক দেবু, মহানগর ন্যাপের সভাপতি সাইদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক বাসেত হোসেন প্রামাণিক, সাম্যবাদী দলের সম্পাদক এস এম ওমর ফারুক প্রমুখ।
সমন্বয় সভা শেষে এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমরা ১৪ দল জোটগতভাবে আন্দোলন করেছি, সরকার গঠন করে এখন পর্যন্ত জোটগতভাবেই আছি। রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন ১৪ দলগতভাবেই আমরা মোকাবিলা করতে চাই। যারা প্রার্থী হবেন, তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই নির্বাচনে আমরা জয়লাভ করতে চাই। শুধু সিটি নির্বাচন নয়, এরপর জাতীয় সংসদ নির্বাচনও আমরা জোটগতভাবেই করব ইনশাআল্লাহ।
এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না।’ আমরা দেখাতে চাই নির্বাচনে প্রচুর পরিমাণে মানুষ ভোট প্রদান করবে, শতভাগ স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে।
খায়রুজ্জামান লিটন আরও বলেন, আমরা জানি না বিএনপি প্রার্থী দেবে কি দেবে না। তারা এবারও অতীতের মতো কূটকৌশল প্রয়োগ করতে পারে। সে বিষয়ে সতর্ক থেকে আমরা নির্বাচনে জয়ী হতে চাই। নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি মূল কমিটি ও কতগুলো উপ-কমিটি গঠন করা হবে। সে ব্যাপারেও ১৪ দলের সভায় আলোচনা হয়েছে। আগামী ১০ মে পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভা আহ্বান করা হয়েছে। সভায় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-২ (সদর) আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, আগামীতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। কর্মসংস্থান বাড়াতে হলে কল-কারখানাগুলো চালু করতে হবে। সেক্ষেত্রে আমরা একসঙ্গে কাজ করব। বাদশা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে আমরা কাজ করব। ১৪ দলের কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত আছে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল যে প্রার্থী ঠিক করবে, তাদের আমরা ১৪ দল ঐক্যবদ্ধভাবে সমর্থন করব। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন জনগণের অংশগ্রহণমূলক ও অর্থবহ করার জন্য এটি আমাদের রাজনৈতিক লড়াই। আমরা লড়াই করে মেয়র প্রার্থী ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিজয়ী করব। পাশাপাশি বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়- এই ধারণা আমরা মুছে ফেলতে চাই। এদিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতকে পাশে পাওয়ার আশা করছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সে ইঙ্গিত দিয়ে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন বলেন, ‘সব ইসলামী দল এবং ইসলামী মনোভাবাপন্ন অন্য দলগুলো আমাদের শুভকামনা জানিয়েছে। তাদের সঙ্গে সব জায়গায় আমাদের সুসম্পর্ক।’ তবে এবার বিএনপি এই ভোটে অংশ নিচ্ছে না, এবার কোনো দলকে সমর্থন দিচ্ছে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুরশিদ আলম ফারুকী বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কারও সঙ্গে জোটে নেই। তারপরও ইসলামী দলগুলো আমাদের সমর্থন করবে। ইসলামী দলের বাইরেও যারা আছে তারাও আমাদের সঙ্গে থাকবে।’ জামায়াত ও বিএনপি পাশে থাকবে কি না সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এভাবে বলি না। সবাই আমাদের সঙ্গে আছে, আমরা এটাই জানি’।
ইসলামী আন্দোলনের এ নেতা বিএনপি ও জামায়াতকে পাশে পাওয়ার ইঙ্গিত দিলেও পরিস্থিতি ভিন্ন। বিএনপি ও জামায়াত এ দলটির সঙ্গে থাকার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করেছে। রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসা বলেন, ‘তারা নিজেদের মতো করে যা খুশি বলতেই পারেন। কিন্তু আমরা ভোটে নেই, কারও সঙ্গে জোটেও নেই। জামায়াতের রাজশাহী মহানগরের শূরা পরিষদ সদস্য মাজেদুর রহমান বলেন, ইসলামী আন্দোলন একটি আলাদা দল, তারা নিজেদের মতো করে চলে। তাদের সমর্থনের কোনো সুযোগ নেই।