নিজস্ব প্রতিবেদক, লালপুর:
নাটোরের লালপুরে পদ্মা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের ব্লক ধ্বসে ভাঙ্গনের আতংকে এলাকার মানুষ। উপজেলার ঈশ্বরদী ইউনিয়নের পালিদেহা, গৌরীপুর, নূরুল্লাপুর, লক্ষীপুর, তিলকপুর পর্যন্ত প্রায় ২শ ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সিসি ব্লক দিয়ে ৮.৫৮৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বাঁধ নির্মাণ করেছে পানি উন্নয় বোর্ড।
এই বছরে পালিদেহা ও গৌরীপুর সহ নূরুল্লাপুর এবং গৌরীপুর উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন প্রায় ৬শ গজ সিসি ব্লক পদ্মা নদীতে ধ্বসে গেছে। এছাড়াও পিচিংব্লকের মাঝে ছিদ্র হওয়ায় পুরাতন সিসি ব্লক সংস্কার করা না হলে বাঁধটি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। এতে নদীর তীর এলাকার মানুষ আতংকের মধ্যে দিন অতিবাহীত করেছে। নদীর তীরে কিছু লোকজন বাঁধের উপর বাঁশ, কাঠ, লোহার রড ব্লকের ভিতর পুতে জিও ব্যাগ ছিদ্র করে দিয়েছে। গৌরীপুর আকছেদ মোড়ে ২০ মিটার এবং নূরুল্লাপুর ১৫ মিটার এলাকা জুড়ে নদীর তীর রক্ষা ব্লক ধ্বসে গেছে। ওই স্থানে প্রায় ৭৩ মিটার এলাকা জুড়ে নদীতে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে । ফলে পদ্মা নদীর পানির স্রোতে আবাদি জমি, বসত বাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার হুমকির মুখে পড়েছে এই এলাকার মানুষ।
এবিষয়ে গৌরীপুর গ্রামের মসলেম খাঁ জানান, প্রায় ৬ বছর আগে পদ্মার তীরবর্তী ভাঙ্গন রোধে ব্লক বসানো হয়। নদী ভাঙ্গনে আকছেদ মোড়ে ৮০ মিটার এবং নূরুল্লাপুরে নতুন বাঁধ এলাকায় ১শ৫০ মিটার এলাকা জুড়ে নদীর তীর রক্ষা ব্লক ধ্বসে গেছে। তাই নদী ভাঙ্গনের আতংকে দিন অতিবাহীত করছে নদীর তীরবর্তী মানুষেরা।
স্থানীয় মুদি দোকানদার সৈয়দ শওকত আলী জানান, গৌরীপুর দক্ষিণপাড়ার পদ্মা নদীর প্রায় আড়াই কিলোমিটার পাড় ঘিরে গড়ে উঠেছে বেড়িবাঁধ। প্রতিদিন কয়েক”শ ভ্রমণপিয়াসি মানুষ নদীর পাড় এলাকা ঘুরতে আসে। মানুষের অনাগোনায় নদীর বাঁধ এলাকা মুখরিত হয়ে উঠে। কিন্তু নদীর তীরের সিসি ব্লক ধ্বসে যাচ্ছে এতে আমরা আতংকের মধ্যে দিন পার করছি, যে কোন সময় বাড়ী ঘর নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
এবিষয়ে ঈশ্বরদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা জানান, প্রথমে পানির লেয়ার উপরে ছিল, পরে পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ায় গভীরতার সৃষ্টি হলে বাঁধের সিসি ব্লক ধসে পড়ে ।
এবিষয়ে ঈশ্বরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম জয় জানান, নদীর তীর রক্ষা বাঁধ তৈরীর সময় কিছু অনিয়ম হয়েছে। বর্ষাকালে নদীর প্রবল স্রোতে পালিদেহা, গৌরীপুর, নূরুল্লাপুর গ্রামে পদ্মা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের কিছু স্থানে ধ্বসের সৃষ্টি হয়েছে।
এবিষয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (দায়িত্বপ্রাপ্ত) শাম্মী আক্তার জানান, বাঁধের ক্ষতিকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনাণুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং বাঁধটির সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হবে বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান জানান, বাঁধের কিছু জায়গা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে ভয়াবহ কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি ।