নিজস্ব প্রতিবেদক, গুরুদাসপুর:
নাটোরের গুরুদাসপুরে ৪৯ বছর আগে অন্যের ১২ বিঘা জমি নকল কাগজপত্র তৈরি করে রেজিষ্ট্রি করে বাবা ও মায়ের নামে দিয়েছিলেন উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের পশ্চিমনওপাড়া গ্রামের মোজাহিদ ইসলাম। এখন ওই জমিটি নিজের দাবী করে নানাভাবে হয়রানী করা হচ্ছে দখলদারদের। এনিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে এলাকায়।
এদিকে নকলকাগজপত্র তৈরি করে জমিদাবী করার ঘটনায় মোজাহিদ ও তাদের ১০ ওয়ারিশের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি গুরুদাসপুর থানায় ( মামলা নম্বর-৫৯৮(৩)-১)একটি প্রতারনা মামলা দায়ের করা হয়। জমিটির দখলদার মোশারফ হোসেনের ছেলে কলেজ শিক্ষক আলী হাসান বাদী হয়ে ওই মামলাটি দায়ের করেন।
এর আগে প্রতিপক্ষের কাগজপত্র যাচাই বাছাইয়ের জন্য চাপিলা ইউনিয়ন ভুমি অফিস ও গুরুদাসপুর উপজেলা সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে আবেদন দেওয়া হয় ওই মামলার বাদীর পক্ষ থেকে। যাচাই বাছাইয়ের পর ওই দুই দপ্তরের পক্ষ থেকে দাবীকরা ১২বিঘা জমির কাগজপত্র জাল (অস্তিত্ব নেই) বলে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ইউনিয়ন ভুমিকর্তা মিনহাজুল ইসলাম প্রতিবেদনের তথ্যটি নিশ্চিত করেন।
মামলারনথি, ভুমি অফিসের প্রতিবেদন ও আলী হাসানের সাথে কথাবলে জানা গেছে,- চাপিলা ইউনিয়নের খামারপাথুরিয়া মৌজার খতিয়ান ৭৭৭ ও ৬৩০ দাগের ১২বিঘা জমিটি মামলার বাদী আলী হাসানের বাবা মোশারফ হোসেন ও তার চাচাতো ভাই আব্দুল মান্নান পৈত্রিকসুত্রে ভোগ দখল করে আসছেন।
কিন্তু প্রতিপক্ষ মো. মোজাহিদ ইসলাম ১৯৭১ সালের ৯এপ্রিল নওগাঁর পত্নীতলা সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে গিয়ে তার বাব মোহাম্মদ আলীর(বিশু) নামে ৬বিঘা (দলিল নম্বর-১-১২৪৪) এবং ১৯৬৯ সালে ১৩ মার্চ গুরুদাসপুর সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে গিয়ে তাঁর মা মোছা. ফিরোজা বেগমের নামে আরো ৬বিঘা জমি রেজিষ্ট্রি (দলিল নম্বর-২৫৩০) করে দেন।
চারযুগেরও বেশি সময় পর এসে মোজাহিদ ইসলাম তার বাবা ও মায়ের জমি বলে দাবী করেন। এবং বিভিন্ন সময় ওই জমিতে খনন করা পুকুরের মাছ মেরে নেওয়া ও কলাকেটে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। সর্বশেষ গত বুধবার দিবাগত পুকুরে বিষয় প্রয়োগ করে মাছ নিধনের অভিযোগও রয়েছে মোজাহিদ ইসলাম ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
এসব ঘটনায় মোজাহিদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে গুরুদাসপুর থানা ও আদালতে কমপক্ষে আটটি মামলা রয়েছে। এখন এসব মামলা তুলে নিতে দখলকৃত ১২বিঘা জমি ফেরত দিতে আলী হাসান ও তার পরিবারের সদস্যদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। অভিযুক্তরা এলাকায় দাপটশালী হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে তারা। অভিযোগ কলেজ শিক্ষক আলী হাসান ও তার পরিবারের।
ভুয়াকাগজে জমিরেজিষ্ট্রির প্রতারনার মামলা, পুকুরের মাছ নিধন ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাহরুল ইসলাম বলেন মামলা ও অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এব্যাপারে অভিযুক্ত মোজাহিদ সোমবার মুঠোফোনে দাবী করেন.- তাদের কাগজপত্র সঠিক রয়েছে। জাল দলিলের বিষয়টি নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলায় করায় তারাও আদালতে পাল্টামামলা দায়ের করেছেন। আদালতেই চুড়ান্ত ফায়সালা হবে। তবে পুকুরের মাছ মারা, গাছের কলাকেটে নেওয়া এবং ভীতি দেখানোর অভিযোগ সত্য নয়।
আরও দেখুন
নাটোরে স্ত্রীর সামনে স্বামীকে মারধর ভিডিও ভাইরাল
নিজস্ব প্রতিবেদক বড়াইগ্রামে,,,,,,,,,,নাটোরের বড়াইগ্রামে এক স্বামীকে তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সামনে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে …