নিউজ ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের এ দুর্যোগকালেও শিডিউল অনুযায়ী এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশের অন্যতম মেগা প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ। এরই মধ্যে প্রকল্পের প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। শিডিউল অনুযায়ী কাজ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার আশা প্রকাশ করছেন প্রকল্প পরিচালক ড. শওকত আকবর।
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন ২৫ হাজার স্থানীয়সহ প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক এই প্রকল্পে কাজ করছেন। তারা কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করছেন। শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য প্রকল্পের এলাকায় পর্যবেক্ষণ এবং আইসোলেশন সেন্টার চালু করা হয়েছে।’
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘আমরা প্রতিটি কর্মীর দিনে দুইবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছি। যদি কেউ সংক্রমিত হয় বা কোনও উপসর্গ দেখা দেয়, তবে তাদের এবং আশেপাশের লোকজনকে পর্যবেক্ষণ ও আইসোলেশন সেন্টারে নিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ায় করোনা পরিস্থিতি খারাপ হলেও প্রকল্পের কাজ থামছে না। আমরা ইতোমধ্যে দেশের বৃহত্তম এ উন্নয়ন প্রকল্পের ৩৮ থেকে ৪০ শতাংশ কাজ শেষ করেছি এবং শিডিউল অনুযায়ী নির্ধারিত সময়েই কাজ শেষ করার প্রত্যাশা করছি।’
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিয়ে রুশ নকশার আওতায় রূপপুরে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার দুটি ভিভিআর প্রযুক্তির রিঅ্যাকটরের দুটি ইউনিট তৈরি হবে। শিডিউল অনুযায়ী ২০২৩ সালে ইউনিট-১, ২০২৪ সালের ইউনিট-২ চালুর জন্য সময় নির্ধারিত রয়েছে।
এদিকে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই প্রথম ইউনিট বিল্ডিংয়ে নিউক্লিয়ার চুল্লি স্থাপন সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান।
সম্প্রতি মন্ত্রী রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিদর্শন করে জানান, গত এক বছরে মহামারি চললেও প্রকল্পের শিডিউল অনুযায়ী উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রথম ইউনিটের পাশাপাশি দ্বিতীয় ইউনিটের কাজও সাবলীলভাবে চলছে। করোনা মহামারিতে একদিনের জন্যও কাজে কোনও বিঘ্ন ঘটেনি।
ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘মহামারি শুরুর পর থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ চলছে। প্রকল্পের সমস্ত কর্মচারীকে টিকা কর্মসূচির আওতায় আনার পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রকল্পে কর্মরত রাশিয়ান নাগরিকরা রাশিয়ান ভ্যাকসিন স্পুটনিক-৫ পাচ্ছেন এবং বাংলাদেশি কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীরাও রাশিয়ার সহায়তায় একই টিকা পাচ্ছেন।’
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ান ফেডারেশনের রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন- রোসাটোম পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে। ১২.৬৫ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পের প্রাথমিক চুক্তিটি ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।