শেষ থেকে শুরু
ভোরের রবি হেসে ওঠতেই
দূর হয় আঁধার কণা,
সোনা রোদ্দুর ঝলমলিয়ে
আঁকে আলোর আলপনা।
শুকনো পাতা ঝরার বেলায়
শুধালেম তারে আমি যবে,
যাচ্ছো যে হে বড় অবেলায়
ফিরবে আবার তুমি কবে?
বিদায় কালে যাবার বেলায়
শুকনো পাতারা হেসে কয়,
যেখানেই তুমি দেখবে শেষ
জেনো সেখানেই শুরু হয়।
অধিকার বিহীন অধিকারে
তুমি আজ আমার নও
তুমি নেই আমার আঁকা
জলরঙ আল্পনায়।
তোমায় নিয়ে
স্বপ্ন দেখিনা আর
মাঝে মাঝে দুঃস্বপ্ন হয়ে এসে
শুনিয়ে যাও স্বপ্ন ভাঙার গান!
স্মৃতির কপাটের ফাঁকে বেয়ে
আজও নিত্য তোমার আসা যাওয়া!
দখিনা বাতাসের সাথে
তোমার ভাবনাগুলো
উড়িয়ে দিয়েছিলেম মেঘে মেঘে
তোমার রেশমি চুড়ির
লেগে থাকা পরশটুকুও
বিলিয়েছি ক্ষয়ত্রী চাঁদের আলোয়।
তুমি মুক্তি চেয়েছিলে!
আমার থেকে তোমাকে
দিয়েছিলাম মুক্ত করে।
কোনও বাঁধনে বেঁধে রাখার
দাবি করিনি।
তবু কেন
মুক্তি মেলেনি এই আত্মার?
চোরকাঁটা হয়ে বিঁধে থাকো
দেহে, অন্তরে!
তুমিতো আজ আর আমার নও
তবু হৃদয়টা তোমাকে বেঁধে রাখে
অধিকার বিহীন অধিকারে।
আজ আর কিছু নেই
আমার একটা
শিউলি ঝরা ভোর ছিলো।
বরশী দিয়ে নদীতে মাছ ধরার
একটা দুপুর ছিলো।
ছিলো ডাংগুলি খেলার
স্বপ্নিল বিকেল।
প্রতিদিন মনের সুখে
স্কুলে যাওয়ার সোনালি দিন ছিলো।
মায়ের আদর
বাবার শাসন আর
দূরন্ত কৈশোর ছিলো।
চারদিকে শুধুই আনন্দ
আর আলো ছিলো।
গাছে গাছে ফুল, পাখি,
নদীর জলে নৌকা,
লঞ্চের হুইসেল আর
আইক্রিমওয়ালার ডাক ছিলো।
কাউকে ভালোলাগার
একটি সুন্দর মন ছিলো।
ভালোলাগা-ভালোবাসার
একটা মানুষ ছিলো।
আজ আমি আছি ঠিকই
কিন্তু এগুলো আজ
আর কিছু নেই, কিচ্ছু নেই!
আমি তোমার কেউ নই
আমি তোমার কাছে না থেকেও
কাছে থাকার অব্যক্ত অনুভব!
আমি তো তোমার কেউ নই
তোমার সুখের দিনে দূরে থাকা
আমি তোমার অসময়ের ডাক!
চাই যে তোমার দুঃখের ভাগ।
আমি তোমার কেউ নই
তবুও তুমি আমার অনেক কিছু!
আমি কেবল
ক্ষনিক পাওয়া মুগ্ধতা,
হারিয়ে গেলে মরিয়া হয়ে
দিগ্বিদিক হাতড়ে ফেরা কোনও চাওয়া।
আমি কেবল একাকী প্রহর!
অখণ্ড অবসরে
হৃদয়ের আনাচে কানাচে
ঘুরে বেড়ানো নিঃশব্দ কোনও পায়চারী!
ছুঁয়ে যাওয়া উষ্ণতা।
আমি কেউ নই,
আমি কেবল
যাতনা-বাসনা-সাধনাতে
খুঁজে পাওয়া অনন্ত আশ্বাস!
আমি কেবল বিচ্ছেদী বেদনা,
দুঃখ কুড়োনো সুখ!
আমি তো তোমার কেউ নই
আমি কেবল নিয়ম না মানা
অহর্নিশ নিরব ভালোবাসা!
আমি তোমার কেউ নই
তবুও হয়তো আমি
মনের কোণে আলগোছে
তুলে রাখা একটি নাম,
তন্দ্রা জড়ানো কোনও মায়া;
অদৃশ্য পিছুটান!
অনেকের ভীড়ে কেউ না হয়েও
হয়তো আমি কেউ!
যদি বলতে- ভালোবাসি
তোমার চোখে
হাজার গোলাপ আঁকলেও
ফাগুন কখনও আসবে না
আমি নিশ্চিত বলতে পারি।
তোমার থেকে
‘ভালোবাসি’ শব্দটি
শুনতে চেয়েছি
শত সহস্র বার,
তোমার পাষাণ হৃদয়ে
ফোটেনি ফুল কভু।
‘ভালোবাসি’
কখনই বলোনি বলেই
ফিরে গেছে অনাগত বসন্ত
চেয়ে থাকা সুদীর্ঘ পথের বাঁকে!
আমার রাতজাগা
হাজার রাতের কাব্যে
জমে থাকা পঙতিমালার
অশ্রুত উপাখ্যান শুনবে না
জানি তুমি কোনওদিন।
তবুও বুকের মাঝে,
সবুজ জমিনে এঁকেছি
তোমারই ছবি অনন্ত প্রহর ধরে।
একটি বার যদি বলতে- ভালোবাসি।
প্রখর দারুণ গ্রীষ্মময় এই বুকে
অন্তত ফাগুন আসতো আর
হৃদয়টা তোমাকেই ভালোবাসতো।