নিউজ ডেস্ক: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম খুনি ও কারাগারে চার জাতীয় নেতা হত্যা (জেলহত্যা) মামলার আসামি খায়রুজ্জামানের স্ত্রী রিটা রহমানকে নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে রংপুরের বিএনপি নেতাকর্মীরা।
রিটার পরিচয় বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ফলাওভাবে ছড়িয়ে পড়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। রিটা রহমানকে বিএনপির প্রার্থী করায় দলের অনেক নেতাই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির সিনিয়র নেতাদের একাংশ মনে করছে, রিটা রহমানের মতো বিতর্কিত প্রার্থীকে রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন না দিয়ে স্থানীয় অন্য নেতাকে মনোনয়ন দেয়া যেত। কিন্তু মাঠ পর্যালোচনা না করেই দলীয় হাইকমান্ডের এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত নেতাদের পর্যদুস্ত করতে পারে সে বিষয়ে কেউই গুরুত্ব দেয়নি। যা নেতাদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করেছে।
রিটাকে মনোনয়ন দেয়ায় স্থানীয় বিএনপি নেতারা যে অসন্তুষ্ট, তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে মনোনয়নপত্র জমার দিন। রিটার সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসে যাননি। জেলা ও মহানগর বিএনপির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বঙ্গবন্ধু ও জেলখানায় চার নেতার খুনির স্ত্রী রিটা রহমান তাদের দলীয় প্রার্থী হওয়ায় ভোটের প্রচারণায় অন্যরকম নেতিবাচক মাত্রা যোগ হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএনপির রংপুর মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু বলেন, আমরা যখন জেনেছি রিটা রহমান বঙ্গবন্ধু ও জেলহত্যা মামলার আসামির স্ত্রী, তখন ভোটের প্রচারণায় থমকে গেছি। যদিও সেভাবে প্রচারণার কোনো প্ল্যানিং করা হয়নি, তা হবে কি না সেটা এখনো নিশ্চিত না। তবে দলের ভেতরে নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এমন একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে কেন দলের পক্ষে মনোনয়ন দেয়া হল? প্রচারণায় গিয়ে দলের নেতাকর্মীরা ভোটারদের নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, আমি শুনেছি- খায়রুজ্জামান বঙ্গবন্ধু হত্যা নয়, জেলহত্যা মামলার আসামি ছিলেন। পরে মামলা থেকে অব্যাহতি পান। তবে যাই হোক, একটি স্পর্শকাতর হত্যা মামলার ঘটনায় জড়িয়ে আছে রিটা রহমানের স্বামীর নাম। তাকে প্রার্থী করায় দলের লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়েছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ভোটের বাক্সে- এমনটি আশঙ্কা করছি।
বিএনপির রংপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রইচ আহমেদ বলেন, আমি নিজেও প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন চেয়েছিলাম। দল মনোনয়ন দেয়নি। তাতে দুঃখ নেই। কিন্তু এমন একজনকে প্রার্থী হিসেবে দলের মনোনয়ন দেয়া হল- তার পরিবার সম্পর্কে নানা বিতর্ক রয়েছে, যা এখন বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে জেনে আমরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছি।
এমন প্রেক্ষাপটে বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীরা রিটা রহমানের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় কীভাবে নামবেন, তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানা গেছে।