নিউজ ডেস্ক:
আইন অনুযায়ী আয়কর বিবরণী জমা দেওয়ার সময় যথাযথভাবে হিসাব-নিকাশ করেই করদাতা কর পরিশোধ করে থাকেন। তবে সরকার ঘোষিত ২২ ধরনের খাত রয়েছে, যেখান থেকে অর্জিত আয়ে কর অব্যাহতি পাওয়া যাবে। অর্থাৎ ওই খাতগুলো থেকে আয় করলেও করদাতাকে কোনো কর দিতে হবে না।
তবে শর্ত হলো- করদাতার করমুক্ত এবং কর অব্যাহতি প্রাপ্ত আয় থাকলে তা রিটার্নে উলেস্নখ করতে হবে। যদিও এর আগে ২৭ ধরনের আয়ে করমুক্ত সুবিধা ছিল, চলিত কর বছরে যা কমে ২২ খাত হয়েছে।
এনবিআরের ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের আয়কর নির্দেশিকা অনুসারে করমুক্ত বা কর অব্যাহতি প্রাপ্ত আয়ের খাতগুলো হচ্ছে-
১. সরকারি পেনশন তহবিল হতে করদাতা কর্তৃক গৃহীত বা করদাতার বকেয়া পেনশন।
২. সরকারি আনুতোষিক তহবিল হতে করদাতা কর্তৃক আনুতোষিক হিসাবে গৃহীত অনধিক ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা আয়।
৩. কোনো স্বীকৃত ভবিষ্যৎ তহবিল, অনুমোদিত বার্ধক্য তহবিল, পেনশন তহবিল এবং অনুমোদিত আনুতোষিক তহবিল হতে তাদের সুবিধাভোগীদের মধ্যে বিতরণ করা আয়, যা উক্ত তহবিলের হাতে করারোপিত হয়েছে।
৪. ভবিষ্য তহবিল আইন, ১৯২৫ (১৯২৫ সনের ১৯ নং আইন) প্রযোজ্য এরূপ কোনো ভবিষ্যৎ তহবিলে উদ্ভূত বা উপচিত অথবা ভবিষ্যৎ তহবিল হতে উদ্ভূত কোনো আয়।
\হ৫. সরকারি সংস্থা, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা স্বায়ত্তশাসিত বা আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও তাদের নিয়ন্ত্রিত ইউনিট বা প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মচারী কর্তৃক স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণের সময় এই উদ্দেশে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোনো পরিকল্প অনুসারে গৃহীত যে কোনো পরিমাণ অর্থ।
৬. পেনশনারস সেভিংস সার্টিফিকেট হতে সুদ হিসাবে গৃহীত কোনো অর্থ বা গৃহীত অর্থের সমষ্টি, যে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষের শেষে উক্ত সার্টিফিকেটের বিনিয়োগ করা অর্থের মোট পুঞ্জিভূত অর্জিত মূল্য/প্রকৃত মূল্য/আক্ষরিক মূল্য/ক্রয়মূল্য অনধিক পাঁচ লাখ টাকা হয়।
৭. কোনো নিয়োগকারী কর্তৃক কোনো কর্মচারীর ব্যয় পুনর্ভরণ যদি-উক্ত ব্যয় সম্পূর্ণভাবে এবং আবশ্যকতা অনুসারে কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সূত্রে ব্যয় করা হয় এবং নিয়োগকারীর জন্য ওই কর্মচারীর মাধ্যমে এ ধরনের নির্বাহ সর্বাধিক সুবিধাজনক ছিল।
৮. কোনো অংশীদারি ফার্মের অংশীদার হিসেবে কোনো করদাতা কর্তৃক মূলধনি আয়ের অংশ হিসেবে প্রাপ্ত আয়ের অংশ যার ওপর উক্ত ফার্ম কর্তৃক কর পরিশোধ করা হয়েছে।
৯. হিন্দু অবিভক্ত পরিবারের সদস্য হিসেবে একজন করদাতা যে পরিমাণ অর্থ প্রাপ্ত হন, যার ওপর ওই পরিবার কর্তৃক কর পরিশোধিত।
১০. বাংলাদেশি কোনো স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা কর্তৃক বিদেশে উপার্জিত কোনো আয়, যা তিনি বৈদেশিক রেমিট্যান্স সম্পর্কিত বিদ্যমান আইন অনুসারে বাংলাদেশে আনেন।
১১. কোনো করদাতা কর্তৃক ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট ফান্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড, ইউরো প্রিমিয়াম বন্ড, ইউরো ইনভেস্টমেন্ট বন্ড, পাউন্ড স্টারলিং ইনভেস্টমেন্ট বন্ড বা পাউন্ড স্টারলিং প্রিমিয়াম বন্ধ হতে গৃহীত কোনো আয়।
১২. রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কোনো স্বাভাবিক ব্যক্তির আয় যা কেবল উক্ত পার্বত্য জেলায় পরিচালিত অর্থনৈতিক কর্মকান্ড হতে উদ্ভূত হয়েছে।
১৩. কোনো স্বাভাবিক ব্যক্তির ‘কৃষি হতে আয়’ খাতের আওতাভুক্ত অনধিক দুই লাখ টাকা পর্যন্ত।
১৪. ২০২০ সালের জুলাই হতে ২০২৪ সালের ৩০ জুন তারিখের মধ্যে ২৭ ধরনের প্রযুক্তি নির্ভর কোনো ব্যবসা হতে উদ্ভূত নিবাসী ব্যক্তি বা অনাবাসী বাংলাদেশির আয়।
১৫. ২০২০ সালের জুলাই হতে ২০২৪ সালের ৩০ জুন তারিখের মধ্যে হস্তশিল্প রপ্তানি হতে উদ্ভূত কোনো আয়।
১৬. যে কোনো পণ্য উৎপাদনে জড়িত ক্ষুদ্র বা মাঝারি শিল্প হতে উদ্ভূত আয়।
১৭. শর্তসাপেক্ষে ব্যাংক, বীমা বা কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যতীত ব্যক্তি কর্তৃক জিরো কূপন বন্ড হতে উদ্ভূত কোনো আয়।
১৮. ‘চাকরি হতে আয়’ হিসাবে পরিগণিত আয়ের এক-তৃতীয়াংশ বা চার লাখ ৫০ হাজার টাকার যেটা কম।
১৯. কোনো ব্যক্তি কর্তৃক বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট হতে গৃহীত সম্মানী বা ভাতা প্রকৃতির কোনো অর্থ বা সরকারের কাছ থেকে গৃহীত কোনো কল্যাণ ভাতা।
২০. সরকার হতে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক গৃহীত কোনো পুরস্কার।
২১. কোনো বৃদ্ধাশ্রম পরিচালনা হতে উদ্ভূত কোনো আয়।
২২. ৩০ জুন ২০৩০ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশের পতাকাবাহী সমুদ্রগামী জাহাজ কর্তৃক অর্জিত ব্যবসার আয় ফরেন রেমিট্যান্স-সংক্রান্ত বিধানাবলি অনুসরণ করে বাংলাদেশে আনা আয়।