করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সবাই নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করছে। ইতোমধ্যে চারদিন কঠিন এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব থেকে বেশি দিশেহারা হয়ে পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষগুলোর।
এসব মানুষের খাদ্য সংকট দেখা দেয়ায় তাদের বাড়িতে বাজার পৌঁছে দিয়েছে
বাউফল থানা পুলিশের ওসি। খাবারের তালিকায় ১০ দিনের চাল, আলু, মুসুরের ডাল,
পেঁয়াজ ও সয়াবিন তৈল রয়েছে।
দাশপাড়া ইউনিয়নের ৬০ ঊর্ধ্ব রিকশাচালক
লাল মিয়া হাওলাদার বলেন, আমার পরিবারে বিবিমহ (বৌ) সদস্য ৬ জন। আমি যা আয়
করি তা দিয়ে আমার সংসার চলে। স্যার (ওসি) বাইরে বের হতে নিষেধ করেছে। বাইরে
বের হলে আমরা নাকি মারা যামু। তাই আজ চারদিন হলো রিকশা নিয়ে রাস্তায় বের
হতে পারি নাই। পরিবারে আমিই একমাত্র উপার্জনক্ষম। বাসায় যা খাবার আছিল সব
শেষ হয়ে গেছে বাবা। বাচ্চাগুলোরে যে কি খাওয়ামু কইতে পারি নাই।
তিনি
আরও বলেন, নামাজ পড়ে চোখের পানি ছেড়ে আল্লাহর কাছে বলছি, আল্লাহ রিজিকের
মালিক তুমি। তুমি ব্যবস্থা করে দাও। এরমধ্যে (২৭ মার্চ) শুক্রবার সন্ধ্যায়
স্যার বাসায় আসছে। আমি ভয়ে বাইরে বের হয়ে বলি স্যার (ওসি) আমি এই কয়দিন
রিকশা চালাই নাই। এরমধ্যে স্যার (ওসি) হাসি দিয়ে বলে, তোমার জন্য বাজার
নিয়ে এসেছি। সাথে সাথে আল্লাহর কাছে বলছি, আল্লাহ তুমি মহান, তুমি আমার
দোয়া কবুল করছো। আল্লাহর কাছে দোয়া করি স্যার (ওসি) হাজার বছর বেঁচে
থাকুক।
দাশপাড়া ৪নং ওয়ার্ডের শারীরিক প্রতিবন্ধী রিকশাচালক মো. ফিরোজ আলম (৩৮)
বলেন, আমরা দিন আনি দিন খাই। চারদিন পর্যন্ত আয় বন্ধ। বাসায় খাবারও শেষ।
স্যারের (ওসি) নির্দেশে গাড়ি (রিকশা) বন্ধ রাখছি, তিনি আজ সকালে বাসায়
বাজার নিয়ে হাজির। স্যার (ওসি) এ বিপদের দিনে পাশে দাঁড়িয়েছে। আজ গোপনে
গাড়ি (রিকশা) চালালে মার খাইতে হতো।
বাউফল থানা পুলিশের অফিসার
ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জেলা পুলিশের অভিভাবক পুলিশ
সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসানের নির্দেশনায় প্রকৃত অসহায়, রিকশাচালক,
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাদের বাড়িতে গিয়ে ১০ দিনের চাল, আলু,
মুসুরের ডাল, পেঁয়াজ, সয়াবিন তৈল পৌঁছে দিয়েছি। এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, যাতে তারা ঘর থেকে বের না হয়। তাদের অনুরোধ করেছি যাতে তারা সচেতন হন। তারা সচেতন হলে এই দুর্যোগ আমরা মোকাবিলা করতে পারবো ইনশাল্লাহ।