রবিবার , নভেম্বর ১৭ ২০২৪
নীড় পাতা / উত্তরবঙ্গ / রাণীনগরে লেপ-তোষক যাচ্ছে শীতপ্রবন এলাকায়

রাণীনগরে লেপ-তোষক যাচ্ছে শীতপ্রবন এলাকায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাণীনগর:
নওগাঁর রাণীনগরে সারা দেশের মতো মাঘের ঘনকুয়াশা আর শৈতপ্রবাহের কারণে গ্রামীণ জনপদে জেঁকে বসেছে কনকনে তীব্র শীত। দিনের শুরুতে সূর্যের সোনালী আলোর মুখ তেমন দেখা না মিললেও শেষ বিকেলের দিকে উকি মারা আলোই সোনালী আভা দখতে দেখতে ডুবে যাচ্ছে পশ্চিম দিগন্তে।

গা গরম হতে না হতেই সন্ধ্যার পরেই শীতের দাপটে ছিন্নমূল অসহায় হতদরিদ্র শ্রমজীবি সাধারণ মানুষ ঘরে ঢুকে সাধ্যমতো গরম কাপড় ও লেপ মোড়িয়ে বসে থাকছে। শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে লেপ-তোষক কেনার ধূম পড়েছে। খাদ্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত এই জনপদে বর্তমান ইরি-বোরো রোপনের কাজ শুরু হলেও ঠান্ডা আর কুয়াশা জনতি কারণে যথা সময়ে জমিতে শ্রমিকরা নামতে পারছে না। ফলে তীব্র শীতের কারণে চলতি মৌসুমের ইরি-বোরো চাষ শুরুতেই থমকে দাঁড়াচ্ছে।

জানা গেছে, তীব্র ঠান্ডা নিবারনের জন্য ছিন্নমূল মানুষদের পর্যাপ্ত পরিমান গরম কাপড় না থাকলেও সামর্থবানরা চাহিদার চেয়ে বেশি পরিমাণ লেপ তৈরি করতে লেপ-তোষকের দোকানে ভির করছে। এ পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ৬ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। জনস্বার্থে আরো ৪ হাজার কম্বলের চাহিদাপত্র দূর্যোক ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখানকার তৈরি লেপ-তোষকগুলো কম দামে মানসম্পূর্ণ হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে উত্তর জনপদের শীত প্রবন জেলা পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁ, কুড়িগ্রাম, লালমুনিরহাট, দিনাজপুর, নিলফামারী, দক্ষিন জনপদের চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা, নড়াইল ও রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলাগুলোতে ট্রাক যোগে প্রতিদিন পাইকাররা নিয়ে হচ্ছে। শীতের কারণে গত বছরের তুলনায় বিভিন্ন ধরণের মাপ অনুযায়ী এ বছর লেপ প্রতি প্রায় ২শ’ টাকা বেশি ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে। চাহিদার পরিমাণ বেশি হওয়ায় স্থাণীয় লেপের দোকানীরা অর্ডার নিয়ে যথা সময়ে সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে।

ছয় ঋতুর এই দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তা ঋতুর সাথে তাল মিলছে না। গ্রাম-বাংলার প্রবাদ আছে মাঘের শীতে নাকি বনের বাঘ কাঁদে। মাঝারী ধরণের শৈতপ্রবাহ ও ঘনকুয়াশার কারণে অনেক বাসা-বাড়িতে শীত নিবারণের প্রস্তুতি যেন শেষ হচ্ছে না।

সরেজমিন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কনকনে শীত জেঁকে বসায় তা মোকাবেলা করার জন্য অধিকাংশ মানুষ বাহিরের দোকান থেকে লেপ তৈরি করছে। দিন যতই গড়ছে শীত কমার কথা থাকলেও উল্টো চিত্র হওয়ায় শীত বেশি পড়ার আশংকায় উপজেলা সদর সহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষেরা নতুন নতুন লেপ তৈরি করছে। লেপ তৈরির কারিগররা শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে অর্ডার নিলেও যথা সময়ে সরবারহ করতে হিমশিম খাচ্ছে।

লেপ তৈরির অর্ডার দিতে আশা মানুষের তারাহুরার কারণে উপজেলার কোবরাতলী, বিএনপি’র মোড়, স্টেশন রোড, কুজাইল, বেতগাড়ী বাজার ও আবাদপুকুর হাটের শো-রুমের পার্শে¦ ফাকা জায়গাই ক্রেতাদের উপস্থিতি আর কারিগরদের ধুনুক দিয়ে তুলা ফাটানোর সরগরমেই যেন বলে দিচ্ছে লেপ তৈরির নতুন করে ধুম পড়েছে। তীব্র শীতের কারণে তুলার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় ত্রিমোহনী-কুবরাতলী এলাকায় প্রায় ১১ টি তুলার মিলে উৎপাদিত মানসম্পন্ন তুলা দোকানীদের কাছে সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে।

প্রতি কেজি শিমল তুলা ২শ’ ৮০ টাকা থেকে ৪শ’ টাকা, মিলের তুলা ভাল মানের সাদা ১০০ টাকা, কারপাস তুলা ২৮০ টাকার বেশি বিক্রয় হচ্ছে। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রেণী ভেদে তুলার দাম মিল মালিকরা বেশি নেওয়ার অভিযোগ উঠছে। একটি ৪ হাত ব্যায় ৫ হাত লেপ তৈরি করতে সাদা তুলার প্রায় ১৩ শ’ টাকা লাগছে, যা গত বছর ছিল ১১ শ’ টাকার কিছু বেশি বলে জানিয়েছেন উপজেলার কুবরাতলি গ্রামের আরিফ তুলা ঘরের স্বত্তাধিকারী জহির আলী পোদ্দার।

লেপ-তোষক পাইকারী ব্যবসায়ী আব্বাছ আলী জানান, শীত আসলে আমি কুবরাতলী থেকে তৈরি লেপ নানা মাপের বিভিন্ন দামে কিনে নিয়ে ট্রাক যোগে শীত প্রবণ জেলা কুড়িগ্রামে পাইকারী সরবারহ করি।

আরও দেখুন

তারেক রহমানের ইতিবাচক রাজনীতি আশার সঞ্চার করছে:দুলু

নিজস্ব প্রতিবেদক,,,,,,,বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন,গতানুগতিক রাজনীতির বাইরে তারেক …