নিজস্ব প্রতিবেদক, রাণীনগর:
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও কয়েক দিনের টানা বর্ষণে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার নান্দাইবাড়ি-কৃষ্ণপুর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানি বন্দি হয়ে পরেছে তিন গ্রামের মানুষ। এতে চরম দুর্ভোগে পরেছেন বানভাসি মানুষরা। বন্যায় গত পাঁচ দিনেও জোটেনি বানভাসি মানুষের মাঝে সরকারি সহায়তা। আর এদিকে কর্মকর্তা বলছেন তালিকা করা হচ্ছে।
রাণীনগর উপজেলার নান্দাইবাড়ি-কৃষ্ণপুর বেড়িবাঁধ গত ৪০ বছর ধরে সংস্কার না করায় পুরাতন ভাঙ্গা বাঁধ দিয়ে ও নতুন করে নান্দাইবাড়ি ও কৃষ্ণপুর নামক দুই স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে নান্দাইবাড়ি-কৃষ্ণপুর ও মালনঞ্চিসহ তিন গ্রামের প্রায় ৩ হাজার মানুষ পানি বন্দি। এছাড়া ভেসে গেছে চাষকৃত পুকুরের মাছ, নষ্ট হয়েছে ধানের বীজতলাসহ অন্যান্য ফসল।
এই উপজেলায় কুজাইল সুইচ গেটের দক্ষিণে, দুর্গাপুর মসজিদের কাছে, মালঞ্চি ব্রিজের পার্শ্বেসহ ৫ টি পয়েন্ট ঝুকিপ‚র্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে শুক্রবার থেকে নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। এদিকে নদীর পানি আবার বৃদ্ধি পেলে ঝুকিপ‚র্ণ পয়েন্ট ভেঙ্গে বড় ধরণের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নওগাঁর ছোট যমুনা নদী জেলার রাণীনগর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে আত্রাই নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। প্রায় ৮০ দশকে রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন সময়ের চেয়ারম্যান আহাদ আলী প্রামানিক খাদ্যের বিনিময়ে কর্মস‚চির আওতায় নান্দাইবাড়ি এলাকায় প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তা কাম বেড়িবাঁধ নির্মান করেন। এরপর থেকে প্রায় ৪০ বছর ধরে বেড়িবাঁধটি সংস্কার করা হয়নি। ফলে তৎকালীন সময়ে নির্মিত বেড়িবাঁধের দুই পাশের মাটি ভেঙ্গে বেড়িবাঁধ বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। প্রতি বছর বাঁধ ভেঙ্গে রাণীনগর উপজেলার হাজার হাজার হেক্টর জমির ধানসহ বিভিন্ন ফসল ও চাষকৃত মাছ ভেসে যায়। এছাড়া শত শত বসতি পানি বন্দি হয়ে পরে। ফলে কোটি কোটি টাকার ক্ষতির কবলে পরেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রতি বছর ধারাবাহিক ভাবে বাঁধ ভেঙ্গে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হলেও নতুন করে বেড়িবাঁধ নির্মানে কিম্বা সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কেউ।
এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মেহেদী হাসান বলেন, কয়েকেটি পয়েন্ট ঝুকিপ‚র্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা সব সময় ওই এলাকার খোঁজ খবর রাখছি। পানি বন্দি মানুষের তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা শেষে তাদের সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান বলেন, শুক্রবার থেকে নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। নদীর পানি এখন বিপদসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। রাণীনগরে নতুন করে বাঁধ ভাঙ্গার বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখা হচ্ছে। এছাড়া ঝুঁকিপ‚র্ণ স্থানগুলো তদারকি করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন।