নিজস্ব প্রতিবেদক, রাণীনগর:
নওগাঁর রাণীনগরে নাহিদ হোসেন নামে ১০ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীর বাড়ীতে গিয়ে লাঠি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ ওঠেছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়ে এক সহকারী শিক্ষকের ঘারে ওই শিক্ষার্থীর হাত পরার জের ধরে সোমবার বিকেলে উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে গিয়ে এঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ ওঠেছে। শিক্ষার্থী নাহিদ শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং মনোহরপুর গ্রামের আশরাফ আলীর ছেলে।
নাহিদ হোসেন বলেন, সোমবার শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর শাহাদাত বার্ষিকী অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠান শেষের দিকে পুরস্কার বিতরনের আগ মুহুর্তে একটি ক্লাস রুমে শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও সুধিজনরা উপস্থি ছিলাম। এসময় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উত্তম কুমার মোবাইল দিয়ে ছবি তোলার সময় আমরা পিছনে দারিয়ে ছিলাম। শিক্ষার্থীদের গাদা-গাদির কারনে আমি মাটিতে পরে যাবার সময় অজান্তেই সামনে থাকা শিক্ষক উত্তম কুমারের ঘারে হাত লাগে। এসময় তার ঘারে কেন হাত দেয়া হলো এমনটি জানতে চাইলে সঙ্গে সঙ্গে ওই শিক্ষকের নিকট ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি।এর পরেও তিন দফায় শিক্ষক উত্তম কুমারের কাছে ক্ষমা চেয়ে বাড়ীতে চলে আসি। এর পর বেলা আড়াইটা নাগাদ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষকস্টাপ,ইউনিয়ন পরিষদের দুইজন মেম্বার ও মনোহরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলার রহমান সঙ্গে আসেন। তখন আমার বাবা মা বাড়িতে ছিলেন না। শিক্ষকরা আমাকে বাড়ির বাহিরে ডেকে নিয়ে কোন কথা বলার আগেই শিক্ষক ফজলার রহমান আমাকে লাঠি দিয়ে পিটাতে থাকেন এবং আমি কারো ইন্দনে ওই শিক্ষকের ঘারে হাত দিয়েছি কি-না তা জানতে চায়। আমি তাদেরকে বলেছি যে আমার অজান্তে এমনটা হয়েছে এবং শিক্ষকের নিকট ক্ষমা চেয়েছি কিন্তু তার পরেও আমাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে। এতে দুই পায়ে আঘাত পেয়ে ওষুধ কিনে খাচ্ছি।
নাহিদের বাবা আশরাফ আলী বলেন, আমার ছেলে কোন দোষ করলে অন্তত: আমাকে জানানো উচিৎ ছিল,কিন্তু আমাকে না জানিয়ে বাড়ীতে এসে লাঠি দিয়ে মারপিট করে চলে গেল। নাহিদের দাদী আয়েশা বলেন,মারপিটের সময় আমি নিষেধ করতে গেলে তারা আমার কোন কথায় শোনেননি। সহকারী শিক্ষক উত্তম কুমার বলেন,অনুষ্ঠানে ছবি তোলার সময় নাহিদ পিছন থেকে আমার ঘারে হাত রেখেছিল। কেন ঘারে হাত রেখেছে এমনটি বলার সাথে সাথে নাহিদ সেখান থেকে চলে যায়। তবে পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সামনেই ভুল হয়েছে বলে ক্ষমা চেয়ে মিলাদের তবারক না নিয়েই চলে যায়। কিন্তু ঘারে হাত রাখার পিছনে অন্য কোন ষড়যন্ত্র থাকতে পারে,এমনটি ধারনা করে প্রধান শিক্ষকসহ সকল শিক্ষক এবং মনোহরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলার রহমান ও স্থানীয়ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার স্বপন ও মামুনসহ তার বাড়ীতে গিয়েছিলাম। সেখানে ফজলার মাস্টার শাসন স্বরুপ দু’টা বাড়ি মেরেছে।ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় মেম্বার মামুন হোসেন বলেন,ঘটনা শুনে নাহিদের দাদার হুকুমে ফজলার মাস্টার শাসন মূলক দু’টা বারি মেরেছে।
মনোহরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলার রহমান বলেন,শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্রনাথসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আমাকে ডেকে নিয়ে বিষয়টি অবহিত করেন। নাহিদ আমার নাতি হওয়ায় তাকে একটু শাসন করেছি। তবে এসময় নাহিদের বাবা-মা বাড়ীতে না থাকলেও দাদা-দাদি ছিলেন বলে জানান তিনি।শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, বিদ্যালয়ে শাহাদাত বার্ষিকীর অনুষ্ঠান বাঞ্চাল করার জন্য এক শিক্ষককে গলা ধাক্কা দিয়েছে। কেন একজন শিক্ষককে গলা ধাক্কা দেয়া হলো এটি জানার জন্য আমরা স্টাপ মিটিং করে নাহিদের বাড়ীতে গিয়েছিলাম। সেখানে শিক্ষক ফজলার রহমান নাহিদকে একটু শাসন করেছে। এর আগে ওই ছাত্র বিদ্যালয়ের কয়েকটি ফ্যানসহ আসবাবপত্র ভাংচুর করেছে বলে দাবি করেন তিনি।বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আজিজুল হক বলেন, অসুস্থ্য থাকার কারনে আমি বিদ্যালয়ে যেতে পারিনি।তবে প্রধান শিক্ষকের নিকট থেকে আমি শুনেছি আমার বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক নাহিদকে মারপিট করেনি। নাহিদের দাদা-কি বড়আব্বা তাকে শাসন করেছে। কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটল তা ক্ষতিয়ে দেখব।
রাণীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: রুহুল আমিন বলেন,বিদ্যালয়ে কি যেন একটা ঝামেলা হয়েছে শুনে সোমবার রাতেই প্রধান শিক্ষককে ফোন করেছিলাম,কিন্তু প্রধান শিক্ষক আমাকে বিষয়টি পরিস্কার করে বলেননি। শুধু বলেছেন যা হয়েছে তা লিখিত ভাবে জানাবো। রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, ঘটনাটি শোনার পর একাডেমিক সুপার ভাইজারকে ডেকেছি। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নীড় পাতা / উত্তরবঙ্গ / নওগাঁ / রাণীনগরে বাড়ীতে গিয়ে ১০ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীকে লাঠিপেটার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে
আরও দেখুন
সভাপতি আব্দুল আলীম,সম্পাদক ফারুক হোসেন
রাণীনগরে জাতীয়তাবাদী প্রবাসী ঐক্য পরিষদের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত নিজস্ব প্রতিবেদক রাণীনগর,,,,,,,,,,,,,,,জাতীয়তাবাদী প্রবাসী ঐক্য পরিষদের নওগাঁর রাণীনগর …