নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ:
নওগাঁর রাণীনগরে কৃষি সেচ কাজে ব্যবহৃত বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রায় ১৫ বছর আগে মোহাম্মদ আবুল হোসেনের নামে একটি গভীর নলকূপ থাকলেও সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই প্রভাবশালী আহাদ আলী দুলাল আকন্দ আগের গভীর নলকূপের মাত্র ৫শ’ ফিট দূরে আরো একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করে। নীতিমালা উপেক্ষা করে স্থাপন করা গভীর নলকূপে বিদ্যুৎ সংযোগ লাইন স্থাপন করার অভিযোগে গত ১৪ জুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার, রাণীনগর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ও বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিলেও রহস্যজনক কারণে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্তা ব্যক্তিরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশংকা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় চাষীরা বলছে, বিষয়টি আইনগত ভাবে দ্রুত মিমাংসার উদ্যোগ গ্রহণ না করা হলে দুই পক্ষের রেশারেশিতে আমাদের সেচ কাজ বন্ধসহ যে কোনো মহুর্তে প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলে আমরা আতংকে আছি।
জানা গেছে, উপজেলার একডালা ইউনিয়নের পূর্ব গবিন্দপুর মৌজার জেল নং ১৮৬, খতিয়ান নং-১৪, ও ২৭০ দাগে একডালা গ্রামের মৃত-রহিমুদ্দিনের ছেলে আবুল হোসেন তার নিজ জমিতে প্রায় ১৫ বছর আগে কৃষি জমিতে সেচ সুবিধা দেওয়ার লক্ষে বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ক্রমে একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করে। সেই থেকে সব কিছু ঠিক ঠাক চললেও হঠাৎ করে আবুল হোসেন মারা যায়। সুযোগ বুঝে একই উপজেলার মনোহপুর গ্রামের মৃত-একিমুদ্দীন আকন্দের ছেলে আহাদ আলী দুলাল বরেন্দ্র কর্তপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ওই নলকূপের ৫শ’ ফিট দূরে আরো একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করে। নলকূপটি স্থাপনের শুরুতেই কর্তৃপক্ষ নিষেধ অমান্য করে কাজ চালিয়ে যাওয়ায় চলছে পক্ষে বিপক্ষে মহুড়া। এতে করে যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষসহ প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে মৃত আবুল হোসেনের ছেলে আলাউদ্দিন জানান, যে কোন ব্যক্তি নলকূপ স্থাপন কিম্বা বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র/লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে। আমার জানা মতে আহাদ আলী দুলালের বৈধ কোনো ছাড়পত্র নাই।
আহাদ আলী দুলাল জানান, আইন মেনে আমি গভীর নলকূপ স্থাপন করেছি। তবে আমার রাণীনগর বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আবারো নবায়নের চেষ্টা করছি। নবায়ন হলেই আমি বিদ্যুৎতের মিটার পাবো।
রাণীনগর বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারি প্রকৌশলী সৈয়দ মিজানুর রহমান জানান, আহাদ আলী দুলালের যে লাইসেন্স ছিলো তার মেয়াদসহ নবায়নের মেয়াদ ও শেষ হয়ে গেছে। পার্শ্বে একটি নলকূপ থাকা সত্বেও সে জোর পূর্বক আরো একটি গভীর নলকূপ বসানোর চেষ্টা করলে প্রথমে আমি মৌখিক ভাবে নিষেধ করি। তা অমান্য করায় পরবর্তীতে যাতে বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়া হয় সে জন্য রাণীনগর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতিকে লিখিত ভাবো জানিয়েছি। বিশেষ সূত্রে জানতে পারলাম সে বিদ্যুৎতের লাইন নির্মণ সহ অন্যান্য অবকাঠামোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।